এম শহহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ প্রনোদনা এবং কাজের দাবিতে অনশন করছে টাঙ্গাইলের সাবালিয়াস্থ লাকী বিড়ি ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা। শনিবার ভোর থেকে প্রায় দুই শতাধিক পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকরা এ অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ওই ফ্যাক্টরি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লাকী বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে অনশনরত শ্রমিক নেতারা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্যাক্টরির মালিক কোন কাজ দেয় না। এমনকি তাদের কোন প্রকার আর্থিক সহায়তা বা প্রণোদনাও দেয় না। এতে করে তারা কর্মহীন হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসময় তারা কাজ অথবা প্রতিটি শ্রমিককে এককালিন ১ লাখ টাকা প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান।

লাকী বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক মো. শাহজাহান জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্যাক্টরিটি বন্ধ রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, টাঙ্গাইলে দূর্নীতি পরায়ন কতিপয় বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক নকল ও পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তাদের বিড়িগুলো বাজারজাত করে আসছে। এতে করে তার তৈরিকৃত বিড়ি প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। ফলে বেশকিছু দিন যাবৎ লোকসানের ঘানি টানতে টানতে এখন তিনি নিরুপায়।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকার কর্তৃক ঘোষিত কোন প্রকার প্রনোদনা তিনি পাননি। তাই তিনি তার শ্রমিকদের আর্থিকভাবে কোন প্রকার সহায়তা করতে পারছেন না। ফলে দিন দিন শ্রমিক অসন্তোষ বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছে। এক পর্যায়ে অনশনরত অবস্থায় শ্রমিকরা শনিবার দুপুরে বিড়ি ফ্যাক্টরিতে ভাঙচুর চালায়।

জানা যায়, সরকারি বিধি মোতাবেক যেখানে প্রতিটি ব্যান্ডরোলের নির্ধারিত মূল্য ৮.১০ টাকা, ১০% আয়কর ও ১% স্বাস্থ্যকর র্নিধারণ করা আছে। সেখানে অন্যান্য বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিকরা সর্বসাকূল্যে নকল ও পুরাতন ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে প্রতি প্যাকেট বিড়ি ১০ টাকা মূল্যে বাজারজাত করে আসছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রতি প্যাকেট বিড়ির পাইকারী ১৬ টাকা এবং খুচরা ১৮ টাকায় বিক্রি করার নিয়ম। ফলে লাকী বিড়ি সহ বৈধভাবে সরকারি ট্যাক্স প্রদান করে তৈরিকৃত বিড়ি ফ্যাক্টরিগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এ বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে ইতিপূর্বে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় স্থানীয় কাস্টমস অফিস একাধিক বিড়ি ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান নকল ও পুরাতন ব্যান্ডরোল জব্দ করে কয়েকজন মালিককে আটক করে মামলা দায়ের করে।