আনোয়ার হোসেন। প্রায় ৫০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করে আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ঐতিহাসিক কালীমন্দির।গত কাল মঙ্গলবার থেকে এখানে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী পৌষকালী পূজা। প্রতি বছরের পৌষ মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই ঐতিহ্যবাহী পৌষকালী পূজা শুরু হয়।
প্রাচীনকাল থেকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী বাজারের পাশে স্থাপিত এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কিংবদন্তি। যা রূপকথার গল্পের মতো। রয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
স্থানীয় গবেষক ও ঐতিহাসিকদের মতে, এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৬২ সালে। দীর্ঘকাল ধরে এই মন্দিরটিকে ঘিরে পালিত হয়ে আসছে পৌষকালী পূজা। পূজাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পূন্যার্থী ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তদের মিলন ঘটে। পূজার অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হস্ত ও কুটির শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী এখানে স্থান পায়।
কিশোর কুমার বিশ্বাস মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে বলেন, ইংরেজ শাসনামলে পর্তুগিজ দস্যুরা ওই গ্রামে আশ্রয় নেয়। তাদের সরদার রডারিক রডা জোর করে বৃদ্ধ কমলেশের ষোড়শী কন্যা মাদলসাকে বিয়ে করেন। রডারিক রডা অন্য ধর্মেও মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে তাকে না পেয়ে সন্ন্যাসী বনে যান।
রডারিক উপাসনার জন্যে গদখালী (তৎকালিন গডকালী) গ্রামের হরহরী নদের পাশে গড়ে তোলে গড বা কালী মন্দিরটি। যুদ্ধে রডারিক রডার মৃতের পর মাদলসা তার বাকি জীবন ওই মন্দিরে কাটিয়ে ছেন। গদখালী সার্বজনীন কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ ভক্ত বাবুল বলেন, মন্দিরের উন্নয়নমূলক কাজ অদ্যাবধি চলমান রয়েছে।গত কাল মঙ্গলবার থেকে ঐতিহ্যবাহী গদখালী সার্বজনীন কালীমন্দিরে স্বাস্থ্যবিধি ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পৌষকালী পূজা শুরু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা চলবে বলে জানান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply