এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ ১৮৮৭ সালের ১ জুলাই স্থাপিত হয় টাঙ্গাইল পৌরসভা । ওই বছর নভেম্বর মাসে প্রথম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর একশ’ বছর পর ১৯৮৫ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভা ‘গ’ থেকে ‘খ’ এবং ১৯৮৯ সালে ‘খ’ থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নতি লাভ করে। বর্তমানে টাঙ্গাইল পৌরসভার বয়স ১৩৫ বছর।
টাঙ্গাইলকে শিক্ষার নগরীও বলা হয়। কারণ ১৮৮২ সালে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে দুটি পৃথক বিদ্যালয়, ১৮৮৭ সালে জাহ্নবী উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯০৭ সালে শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯৩০ সালে বিবেকানন্দ শিক্ষা মন্দির বর্তমানে বিবেকানন্দ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ১৯২৬ সালে সরকারি সাদৎ কলেজ, ১৯৪০ ভারতেশ্বরী হোমস, ১৯৪৩ সালে কুমুদিনী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। এজন্যই টাঙ্গাইলকে শিক্ষার নগরী বলা হয়। এদের মধ্যে সরকারী সাদৎ কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমস বাদে সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই টাঙ্গাইল পৌরসভার ভিতরে। বর্তমানে টাঙ্গাইলের আরো কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার জ্যোতি ছড়াচ্ছে সারা দেশব্যাপী। এছাড়াও বর্তমানে টাঙ্গাইলকে “সাংস্কৃতিক নগরী” হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
সেই শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক নগরীতে ১৩৫ বছরের পুরাতন “ক” শ্রেণীর একটি পৌরসভার বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য স্কুলের গন্ডি না পেরিয়ে কিছু মানুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে বা এর আগেও করেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন টাঙ্গাইলের সচেতন মহল।
এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) টাঙ্গাইল জেলা শাখার সহ-সভাপতি বাদল মাহমুদ’সহ অনেকেই জানান, শিক্ষা সংস্কৃতিতে অগ্রসর একটি জেলা টাঙ্গাইল। সেখানে শিক্ষিত মানুষ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। এটা নিশ্চয়ই শিক্ষিত মানুষের অভাবের জন্য নয়। শিক্ষিত মানুষের নির্বাচন করার পরিবেশ নেই, তাই তারা এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন এবং ছয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন মোট ১২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব কাউন্সিলর প্রার্থী ৫৫ জন স্কুলের গন্ডি পার হতে পারেননি। আগামি ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য দিয়েছেন। এসব প্রার্থীদের মধ্যে ২৯ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি, ১৭ জনের এইচএসসি, ১৫ জন স্নাতক ও মাত্র চার জন স্নাতকোত্তর।শিক্ষিত মানুষ নির্বাচন বিমুখ হওয়ায় প্রার্থী হতে উৎসাহী হচ্ছেন না। তাই স্বল্পশিক্ষিত মানুষ এতবেশি প্রার্থী হচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে যে সব প্রার্থীরা স্কুলের গন্ডি পার হতে না পারেননি তারা হচ্ছেন, ২ নং ওয়ার্ডের মোকাদ্দেস আলী ও রুবেল মিয়া, ৩ নং ওয়ার্ডে হেলাল ফকির ও সাইফুল ইসলাম, ৪ নং ওয়ার্ডে মীর মইনুল হক লিটন ও জহুরুল ইসলাম আজাদ, ৫ নং ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদ (১) ও আবুল কালাম আজাদ (২), ৬ নং ওয়ার্ডে মামুন জামান সজল, ৭ নং ওয়ার্ডে সাহিদুল হক স্বপন, ৮ নং ওয়ার্ডে শফিকুল ইসলাম, সুজিত সরকার ও মোহাম্মদ আলী, ৯ নং ওয়ার্ডে শাহজাহান চৌধুরী ও আলম মিয়া, ১০ নং ওয়ার্ডে মালেক সরকার ও রোস্তম আলী, ১১ নং ওয়ার্ডে আব্দুর রহিম, ১২ নং ওয়ার্ডে মুনসুর রহমান, আমিনুর রহমান, শহিদ মিয়া, সোনা মিয়া ও হাবিব বোখারী, ১৩ নং ওয়ার্ডে হযরত খান, শাহ আলম ও শহিদুজ্জামান খান, ১৪ নং ওয়ার্ডে রুহুল আমীন ও নূরুল ইসলাম, ১৫ নং ওয়ার্ডে চন্দন সূত্রধর ও আরিফুল ইসলাম, ১৬ নং ওয়ার্ডে নূর মোহাম্মদ খান মিঠু, ১৭ নং ওয়ার্ডে সাজ্জাদ আহমেদ ও মো. নাছিমুজ্জামান এবং ১৮ নং ওয়ার্ডে আক্তারুজ্জামান আহমেদ ও মাহবুবা করিম।
সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীকারীদের মধ্যে স্কুলের গন্ডি পার হতে না পারা প্রার্থীরা হচ্ছেন, সংরক্ষিত ১ নং ওয়ার্ডে মাহমুদা বেগম ও ফাহিমা বেগম, সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ডে রোকেয়া আক্তার ও ববি পান্না, সংরক্ষিত ৩ নং ওয়ার্ডে শামসুন্নাহার, শামীমা বেগম, আকলিমা আক্তার ও হাজেরা বেগম, সংরক্ষিত ৪ নং ওয়ার্ডে নার্গিস আক্তার, হালিমা, মরিয়ম সরকার, বিথী ও রুনা আক্তার, সংরক্ষিত ৫ নং ওয়ার্ডে উল্কা বেগম, মাহমুদা জামান, শাহনাজ পারভীন, রহিমা বেগম, নাগরিন আজাদ ও রোকেয়া আহমেদ এবং সংরক্ষিত ৬ নং ওয়ার্ডে মনোয়ারা বেগম।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply