এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ রোজা বা সিয়াম মু’মিনের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামত। রমযানের অধিকতর গুরুত্ব কোর’আন নাযিলের মাস হিসাবে। আর এ মাসের মর্যাদাপুর্ণ একটি রাত শবে কদর। কুরআনের ভাষায় এটিকে ‘লাইলাতুল কদর’ বলা হয়। লাইলাতুল কদর অর্থ মহিমান্বিত রজনী বা মর্যাদাসম্পন্ন রাত। এ রাতের মর্যাদায় আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাজিল করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে মর্যাদাবান ঘোষণা করেছেন। সুতরাং লাইলাতুল কদরের রাত বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ রাত। পবিত্র এ রাতেই নাযিল করেন মানব জাতীর ইহকাল ও পরকালীন জীবনের সাফল্য ও কল্যানের চূড়ান্ত নির্দেশনা পবিত্র মহাগ্রন্থ্য আল-ক্কোরআন। আখেরি নবী মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ওপর এ গ্রন্থ্য নাজিল হয়েছিল। নবী করীম (সাঃ) এ রাতে নিজে ইবাদতে মশগুল থাকতেন এবং তাঁর সাহাবীদেরও বেশি বেশি ইবাদত করার নির্দেশ দিতেন।
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এ রমজান মাসের শেষ ১০দিনের মধ্যে বেজোড় সংখ্যার রাতেই পবিত্র লাইলাতুল কদর । তবে ২৭ রমজান অর্থাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাতকেই কদরের রাত হিসেবে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতে কদরের রাত অনুসন্ধান কর। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ২০১৭, মুসলিম, হাদিস নং : ১১৬৯)।
মুসলিম উম্মাহ’র কাছে অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত সব-ই-ক্কদর বা লাইলাতুল ক্কদরের রাত। প্রতিবারের মতো এবারও সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের বাসাইলে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালন করছে ধর্মপ্রান মুসলিম উম্মাহ। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ তথা সারদেশের মুসলমানদের মতো বাসাইলের মুসলিমরাও নিজেদের গুনাহ মাফ, মনোবাসনা পূরণ, বৈশ্বিক মহামরি জ্ঞাতক ব্যাধি করোনা ভাইরাস থেকে মানব জাতির মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি এবং মহান রুণাময়ের অনুগ্রহ ও অধিক সওয়াব হাসিলের আশায় নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, আজকার, ধর্মীয় বয়ান, এবং বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
৯ মে রবিবার ২৬ রমযান দিবাগত রাত মাগরিবের পরপরই উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ উপজেলার প্রত্যেক মহল্লার ছোট-বড় সব মসজিদেই মুসল্লিরা সমবেত হন লাইলাতুল ক্কদরের নফল ইবাদতের জন্য। এশার নামাজ জামাতে আদায়ের পর সবাই নফল নামাজসহ নানা ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল হন। তারপর সেহরি খেয়ে ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় ও আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে ঘরে ফিরেন অনেকেই। এদিকে বাসাবাড়িতে রাত জেগে নফল ইবাদত করেন মুসলিম নারীরাও।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা কালিন স্বাস্থ্যবিধির প্রতি নজর রেখে লাইলাতুল কদর উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন মহল্লার মসজিদগুলোতে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগির আয়োজন করা হয়। পবিত্র এ রাতে অতীতের গুনাহের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা, ইহকাল ও পরকালিন জীবনের সাফল্য, দেশ ও জাতির মঙ্গল ও বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনেকেই কবরস্থানে গিয়ে কবরবাসীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।
শবে কদর উপলক্ষে ১০মে সোমবার সরকারি ছুটি ঘোষনা করা হয়।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply