মাহমুদুল হাসান,যশোর জেলা প্রতিনিধি ঃ যশোরে মাধ্যমিক স্কুল পড়ুয়া এক কিশোরীকে সাংবাদিক কার্ড তৈরী করার প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন ও সে দৃশ্য মোবাইলে ধারন করে স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে অভয়নগর থানা পুলিশ ২ ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) থানায় প্রথমে লিখিত অভিযোগ ও পরে মামলার ভিত্তিতে এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন চলিশিয়া গ্রামের বাশার মোড়লের ছেলে মাহাবুবুর রহমান (৪০) ও একই থানাধীন গুয়াখোলা গ্রামের নাসির বাঘার ছেলে অনিক বাঘা (২৬)। যশোর জেলা পুলিশের দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি হতে জানা যায়, ধর্ষিত ঐ কিশোরী নোয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত সহ সে বাংলাদেশ বেতারের একজন সংগীত শিল্পী। আনুমানিক ৩/৮ মাস পূর্বে ঐ কিশোরী সাংবাদিকু কার্ড তৈরী করার জন্য জৈনক মাহাবুবুর রহমানের নিকট যায় ও তার পরামর্শ মত তার ২ কপি ছবি ও জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি দেয়। এর সুবাদে আসামী মাহবুবুর রহমান ঐ কিশোরীর ফেসবুক আইডি নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করতে থাকে। একপর্যায়ে মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকতার জন্য ফরম পূরন করতে হবে বলে ঐ কিশোরীকে চলিশিয়া গ্রামস্থ ঘেরের বাসায় আসতে বলে। ঐ কিশোরী প্রথমে বাসায় যেতে আপত্তী জানালেও পরে গত ২১ আগস্ট সকালে আসামী মাহাবুবুর রহমানের বাসায় যায়। কিশোরী বাসায় পৌছালে জারপূর্বক মাহাবুবুর রহমান তাকে ধর্ষন করে ও সেই দৃশ্য তার মোবাইলে ধারণ করে। এ ঘটনায় কিশোরী কান্নাকাটি শুরু করলে আসামী মাহাবুবুর রহমান কাউকে ঘটনাটি জানালে ধারণকৃত ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেয়। ঐ সময় মাহাবুবুর কিশোরীর কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে তার বড় দোলাভাইয়ের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড জেনে নেন। ভূক্তভোগী কিশোরী ভয় পেয়ে ঘটনাটি কাউকে জানাইনি।
এরপর হতে আসামী বিভিন্ন সময়ে ধারনকৃত ভিডিওর ভয় দেখিয়ে অসামাজিক কার্যকালাপের প্রস্তাব দিতে থাকে। একপর্যায়ে মাহবুবুর রহমান ভিডিওটি ডিলিট করে দিবে বলে ঐ কিশোরীকে কাঁচা বাজারের পিছনে ডেকে নিয়ে যায়। অপর আসামী অনিক বাঘা ঐ সময় কিশোরীকে বলে তুই নগদ ৫০ হাজার টাকা আমাদের দিবি আর না পারলে যেখানে ডাকবো সেখানে চলে আসবি। এ কথা শুনে ঐ কিশোরী ভয় পায় এবং তার চলাফেরায় পরিবারের সদস্যরা অস্বাভাবিক দেখে জিজ্ঞাসায় পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি জেনে যায়। এরই মধ্যে আসামী মাহাবুবুর রহমান গোপন ভিডিওটি ঐ কিশোরীর ছোট বোন, বাবা সহ আরো অনেক ফেসবুক আইডিতে ছড়িয়ে দেয়।
গত ৬ সেপ্টেম্বর অনিক বাঘা ঐ কিশোরীর বাবার মোবাইলে কল দিয়ে সন্ধ্যায় নোয়াপাড়া ৫০ হাজার টাকা নিয়ে দেথা করতে বলেন। অন্যথায় মেয়ের খারাপ ভিডিও ও ছবি স্যেশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গত ৭ সেপ্টেম্বর ঐ কিশোরীর মা মোছাঃ হোসনে আরা (৩৫) অভয়নগর থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে ঘটনা খুলে বলে মামলা দ্বায়ের করেন। অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তাৎক্ষনিক আসামীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন ।
সে মোতাবেক অভয়নগর থানার এস আই গৌতম কুমার মন্ডলের নেতৃত্বে অভয়নগর থানা পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে দুই আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। সংবাদ লেখাকালীন সময়ে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে ও কিশোরী ধর্ষন ঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের পক্ষ হতে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানা গেছে
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply