এমসোহাইল চৌধুরী, জেলা প্রতিনিধি. কক্সবাজার।
বাচ্চাসহ সৌদিআরবে স্বামী শাহ আলমের কাছে চলে যাবার সব আয়োজন সম্পন্ন। গত ৫ আগস্ট মা-মেয়ের পাসপোর্ট হাতে আসার পর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে মিলেছে ভিসা। চলে যাবার তারিখ পড়ার আগে প্রবাসী স্বামীর সর্বস্ব গুছিয়ে প্রেমিককে নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে রোকসানা আকতারের (২৩) বিরুদ্ধে। কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী কালু ফকিরপাড়ায় এ ঘটনা পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে সবার অগোচরে পালানোর সময় স্বামীর পাঠানো নগদ ৬ লাখ টাকা, ১১ ভরি স্বর্ণালংকার, মুঠোফোনসহ দামী আরও নানা পণ্যসামগ্রী এবং দু’বছর বয়সী সন্তানকেও সঙ্গে নিয়ে গেছেন।
ওইদিন ভোর হতে মঙ্গলবার সারাদিন নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সেই গৃহবধূকে না পেয়ে কক্সবাজার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। নিরুদ্দেশ হওয়া গৃহবধূ রোকসানা আকতার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালু ফকিরপাড়ার সৌদি প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী। দাম্পত্য জীবনে তাদের নুজাইফা ইসলাম রাইসা নামে দু’বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
প্রবাসী শাহ আলমের ছোট ভাই জিডিতে উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের দিকে রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের উত্তর শরীফপাড়ার নুরুল আজিমের মেয়ে রোকসানার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় শাহ আলমের। গত সোমবার (৪ অক্টোবর) ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাড়ির সবার অজ্ঞাতসারে শিশু সন্তানসহ নিরুদ্দেশ হয়। রুমে ঢুকে আলমিরা খোলা দেখে তল্লাশী করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান কাপড়-চোপড় এবং অন্যান্য পণ্য সামগ্রীও পাওয়া যায়নি। এরপরই খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি আমাদের প্রতিবেশী জনৈক মোক্তার আহমদের ছেলে মো. রিদুয়ানের (২০) সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে দুজন পালিয়ে গেছে। ঘটনার বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে প্রবাসী স্বামী, আমিসহ (জিডিকারি) পরিবারের অন্য সদস্যদের জড়িয়ে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা করবে বলে মোবাইলে হুমকি দেয় রোকসানা।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করে প্রবাসী শাহ আলম প্রতিবেদককে বলেন, মেয়েটি ভূমিষ্ঠ হবার পর হতেই আমার স্ত্রী রোকসানার পরকীয়ার বিষয়টি শুনছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলে অস্বীকার করতো আর আমি ছুটিতে দেশে আসতে চাইলেই বেঁকে বসতো। বলতো ঘর বিল্ডিং করলেই আমি দেশে আসতে পারবো। প্রয়োজনে তাকে সৌদি আরব নিয়ে যেতে বলতো। স্ত্রীর কথায় জরুরি পাসপোর্ট করে ভিসাও লাগানো হয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। সামনের যেকোন দিন তাদের চলে আসা যাবে এটা জানিয়েছিলাম গত শুক্রবার (১ অক্টোবর)। সেটা বলার পরই আমার পাঠানো নগদ ৬ লাখ টাকা, ১১ ভরি স্বর্ণ, মোবাইল, দামি পণ্য সামগ্রী গুছিয়ে পরিচিতি সিএনজিটি ডেকে রাতের আঁধারে নিরুদ্দেশ হয়েছে।
শাহ আলম আরও বলেন, বাবা-মা মারা যাবার পর আমাদের ৫ ভাইয়ের দুই ভাই এক ঘরে আর তিন ভাই আলাদা ঘরে বাস করি। আমরা দুই ভাই এক ঘরে থাকি কিন্তু দু’জনই প্রবাসে। বাড়ির একপাশে আমার স্ত্রী আরেক পাশে অন্য ভাইয়ের স্ত্রী থাকতো। বাড়ির নিয়মিত কাজে ব্যবহার হওয়া যে সিএনজি করে চলে গেছে তার চালকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অসুস্থতার কথা বলে ফোন করে ডেকে সবকিছু নিয়েই তার গাড়িতে ওঠে রোকসানা। সাথে রিদুয়ানও ছিলো। প্রথমে চালকের বাসায় গিয়ে পরে আমার শাশুড়ির কাছে যায় তারা। সেখান থেকেই নিরুদ্দেশ হয়। সে আমার সর্বস্ব লুটে চলে গেছে। বিষয়টি রোকসানার চাচা তাদের ওয়ার্ড মেম্বারকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনিও সিএনজি চালকের সাথে কথা বলে শিওর হন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে জানান, এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি পাওয়ার পর সদর থানার এসআই মোশাররফ হোসেনকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply