বগুড়া জেলার সোনাতলা পৌরসভা নির্বাচনে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী তৎকালীন পিচ (শান্তি) কমিটির সভাপতি মৃত ছামছুল হক খানের ছেলে শহিদুল বারী খান রব্বানীকে নৌকা প্রতীক দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে তৃণমূলে।
স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতবাক। এই মনোনয়ন বাতিল করে যোগ্য প্রার্থীকে সুযোগ দিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সোনাতলা পৌরসভা’র সূত্র মতে, সোনাতলা পৌর এলাকার কমপক্ষে ১৫জন রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধী’র নাম রয়েছে, এমন একটি নামের তালিকা ২৩শে সেপ্টেম্বর সোনাতলা পৌরসভার ৪৬.০০.১০৯৫.১০০.০১.২৬৬.২০২১-৩৮৯ স্বারকে উল্লেখ করেছে।
রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধী নামের তালিকাতেও দেখা যায় পৌর এলাকার আগুনাতাইড় এলাকার মৃত ময়েজ খানের ছেলে (পিচ কমিটির সভাপতি) মৃত ছামছুল খান যিনি স্বাধীনতার সময় স্বাধীনতা বিরোধীর কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে প্রার্থী রব্বানী খান দাবি করেছেন, তার বাবা কখনও পিচ কমিটির সভাপতি ছিলেন না। তৎকালীন সোনাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।
এ বিষয়ে সাবেক দুই বারের উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড সংসদের কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন বুলু বলেন, স্বাধীনতার সময় রব্বানী খানের বাবা স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন। তিনি সে সময় পিচ কমিটির সভাপতি হওয়ায় তার নেতৃত্বে আমাদের বাড়ি ঘর সহ অন্যন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি ঘরে আগুন লাগানো সহ নানা কর্মকান্ড করেন।
এ বিষয়ে সোনাতলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আবু মোহাম্মাদ জিয়াউল করিম বলেন, সেই সময় মৃত ছামসুল হক খান সোনাতলা ইউপির চেয়ারম্যান থাকার সুবিদার্থে মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ খবর নিতেন। পৌর নির্বাচনকে ঘিরে অপশক্তি নৌকার প্রার্থীর তালিকায় না থাকায় এই ধরণের অপ-প্রচার চালাচ্ছে।
সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, রব্বানীর বাবা কখনও রাজাকার ছিলেন না। বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আকন্দ নান্নু ষড়যন্ত্র করে রব্বানীর প্রয়াত বাবা সামছুল হক খানসহ অনেককে শান্তি কমিটির সভাপতি ও সদস্য বানিয়েছেন।
সোনাতলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন জাকির শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বিকালে আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, শহিদুল বারী খান রব্বানীর বাবা মৃত সামছুল হক খান মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতাকারী ও উপজেলা শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। সেই পরিবারের সন্তান রব্বানীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ায় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণসহ পুরো জেলায় জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply