আনোয়ার হোসেন নিজস্ব প্রতিনিধঃ বেনাপোল যশোর থেকে।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃক দুটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল ও স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যের নামে মামলা করায় গত শনিবার ৫ই মার্চ সকাল থেকে আমদানি-রফতানিসহ কাস্টমস ও স্হল বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন।
সিএন্ডএফ মালিক এসোসিয়েশনের ডাকা কর্মবিরতীর ডাক দ্বিতীয় দিনেওস্টাফ এসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য প্রথমে বিজিবি চেক করেন, তারপর কাস্টমস কর্মকর্তারা, তারপর বন্দর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষে আমার স্টাফ ভাইয়েরা রিসিভ করেন সুধু। তাহলে সবার শেষে পণ্য রিসিভ করেন কেন আমার স্টাফ ভাই এরা মামলা খাবেন। আর আমরা যদি কোন অপরাধ করি, সেক্ষেত্রে আমরা মামলা খেতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু কোন অন্যায় আমরা মেনে নেবো না। সেই সঙ্গে কাস্টমসে বহিরাগত এনজিও কর্মীরা কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের কাজের গতিও কমিয়ে দিচ্ছে বলেন স্টার এসোসিয়েশনের নেতারা ।
এর ফলে দুই দেশের স্হল বন্দর এলাকায় প্রায় এক হাজারেরও বেশী পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। উলেখ্য, গত ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্স এ (শুল্ক মুক্ত) মাধ্যমে আমদানি কূত ডেনিম ফেব্রিক্সের ট্রাকে করে অবৈধভাবে আনা শাড়ি, থ্রিপিস, মদ, ফেনসিডিল, বিদেশি সিগারেট, ঔষধ,
কারেন্ট জাল সহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।এ ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় ড্রাইভার সরাসরি জড়িত থাকলেও ট্রাক সহ ড্রাইভারকে ছেড়ে দেয়া হয় কাস্টমস।
ডেনিম ফেব্রিক্সির আমদানিকারক ঢাকার অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ও ফ্যাশন ফোরাম লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান।
এ ঘটনায় গত বুধবার বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুইটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল করেন বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এর পাশা পাশি ও এক সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীর নামেও মামলা করেন বেনাপোল পোর্ট থানায়। এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল ও স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মচারীর নামে মামলা করে কাস্টমস।হয়রানি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার সকালে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন,
সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি এক যৌথ সভায় আমদানি-রফতানি সহ কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত করেন। লাইন্সেস পুনর্বহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। যা চলমান রয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, আসল অপরাধী দের চিহ্নিত না করে সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করেছে কাস্টমস।
মামলা প্রত্যাহার করা না হলে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখায় পণ্য চালান গ্রহণের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আমদানি-রফতানিসহ কার্যক্রম চলমান রাখতে সংশিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি ।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতীয় কিছু অসাধু ট্রাক চালক অর্থের লোভে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বৈধ আমদানি পণ্যের সঙ্গে চোরাচালান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য পাচার করে আসছে।
এর আগে অসংখ্য ট্রাক অবৈধ মালামাল সহ বেনাপোল কাস্টমস বিজিবির হাতে ধরাও পড়েছে। অপরদিকে পেট্রাপোল বিএসএফ ও পুলিশ ভারতীয় ট্রাক এর মধ্য থেকে সোনা, ডলার, পাসপোর্ট, মোবাইল, রুপার গহণাসহ ট্রাক চালক কে আটক করেছেন।
এ সমস্ত ঘটনায় ভারতের প্রশাসন ভারতীয় ট্রাক চালক কে আটক করলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারতীয় কোনও ট্রাক চালক কে আটক না করে ছেড়ে দেয়া হয় ।
এখানে আমদানিকারক ও সংশিষ্ঠ সিঅ্যান্ডএফকে দায়ী করা হয়। অথচ তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।এ রকম ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০টি লাইসেন্স ও বাতিল করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এসব ঘটনায় স্হল বন্দর ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ কাস্টমস ও বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশীদ মিয়া জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি বৈধ চালানের মধ্যে অবৈধভাবে আনা ফেনসিডিল, সিগারেট, ভারতীয় মদ সহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্য সহ বন্দর এলাকা থেকে ভারতীয় একটি ট্রাক আটক করা হয়।
এ অভিযোগে দুটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে শোকজ করা হয়েছে। অবৈধ পণ্য আমদানির অভিযোগে থানায় মামলাও করা হয়েছে বল জানান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply