“রাজ + নীতি = রাজনীতি” বা রাজকীয় রাষ্ট্রনীতি, রাজগতি বা রাজবুদ্ধি নীতি। অর্থাৎ রাজ্য, দেশ, এলাকা, সমাজের শাসন বা পরিচালনা করার আদর্শিক নীতিবান সম্মানী ব্যক্তির নীতিকেই বলে মনেহয় রাজকীয় কিংবা রাজার নীতি। যেহেতু কথিত আছে রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছুই নেই। সুতরাং রাজনীতির এই সংজ্ঞার সঙ্গে সবাই একমত নাও হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতাটা আসলে এমনই।
৯(নয়) এর দশকের আগের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের দেখেছি সার্বক্ষণিক নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতেন। তখনকার সময়ের মানুষদের মধ্যে রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থা ছিল।
সেসময়ের রাজনৈতিক দল এবং তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, ধান্দা, ফিকির এসব নিয়ে পরে থাকতোনা। তখন রাজনীতির মাঠে দেখেছি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা এবং নীতি আদর্শিক বুনিয়াদি রাজনৈতিক দর্শন। আজকে তাহার ছিটেফোঁটাও দৃষ্টিসীমায় নেই।
আজকের সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর একটি ইউনিট কিংবা ওয়ার্ডের যেকোন একজন নেতার সামারী দেখলে আশ্চর্য না হয়ে আপনি পারবেননা। তার পেশা বা সে কি করে জানতে চাইলে মুডের সঙ্গে বলবে রাজনীতি করি, অমুক ইউনিট বা ওয়ার্ড এর তমুক পদের নেতা! কোন কাজকর্ম নেই পেশাদারি কোন স্কিল নেই সে নেতা! ইহাই তাদের পেশা।
আবার দেখাযায় সম্মানিত পেশাদাররাও তাদের নিদৃষ্ট পেশা ছেড়ে রাজনৈতিক নেতা হওয়ার পেশায় দৌড়াচ্ছে। কালের বিবর্তে হঠাৎ হয়েওগেছেন বিশাল নেতা। হয়ে উঠছেন রাজনীতির বাণিজ্যিক ধান্দায় মাতোয়ারা। ফলাফলটা কি? রাজ-নীতির স্বার্থহীন সেবা আজ পরিণত হচ্ছে বাণিজ্যে!
এখনকার নেতা নামের আজব চিড়িয়াদের দিকে তাকালে ঘেন্নায় গায়ে কাঁটাফুটে। আদর্শিক গুণী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পেশাদার নেতাদের হৈহুল্লোরে অতিষ্ট! ঐসকল আদর্শিক গুণীরা নিজেকে এখন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে!
রাজনীতি এখন বাণিজ্যিক লাগামহীন ঘোড়ছোয়ারে ধাবমান। থামানো যাচ্ছেনা লাগাম টেনেও। গণমানুষের সুবিধা সেবা যে নীতির মধ্যে আজ মরুময়। আমরা সাধারণ নাগরিক আজ বাণিজ্যিক নেতাদের কমিটির কাছে জিম্মি। এযেন গণতান্ত্রিক স্বাধীন দেশে আরেক আজব শৃঙ্খল।
ডানে বামে উপর নিচে যেদিকেই দৃষ্টি দিবেন নেতা আর নেতা! সবাই নেতা! কর্মী সমর্থক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর নেতাদের কোয়ালিটি যদি খুঁজেন তবে মিলবে অমুক নেতাসাব একসময় ভালো ডাক্তার ছিলেন, সেখানে তিনি প্রতিদিন লাখটাকা ইনকাম করতেন। এখন আর সেই পেশায় তিনিনেই। পেশাদারি দায়িত্ব তিনি পালন করেননা! কিন্তু নামের আগে ডাক্তার লিখতে ভুল করেননা।
সবাই একমত হবেন যে নিজের বুঝ পাগলেও ভালো বুঝে। তবে ডাক্তার বাবু নিঃসন্দেহে বুঝেশুনেই তার মাসিক ত্রিশ লাখ টাকার ডাক্তারি পেশা ছেড়ে লাভজনক না হলে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিতেননা। তো বুঝুন জনতা ওই ডাক্তারবাবু কি তার বাণিজ্য গুছাবেন না নিঃস্বার্থ সেবা দিবেন?
এমনও দেখাযায় ছোটবেলায় অমুক নরসুন্দর এর কাছে খৌড়কর্ম করাতেন, তিনি হয়তো ওপারে পাড়ি দিয়েছেন। এপারে তাহার গুণধর পুত্রধন পৈতৃক পেশার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। নরসুন্দরের গুণধর পুত্র এখন অমুক ইউনিটের রাজনীতির তমুক নেতা! চাঁদাবাজি ধান্দাবাজি আর সন্ত্রাস, এমনই বাণিজ্যের এখন সে দোকানদার। নরসুন্দর পুত্র এখন ব্যাপক সমাজপতি।
আমরা নিরীহ জনতা, আমাদের এখন কোনগতি?
সুফী মোহাম্মদ আহসান হাবীব
২৩-০৩-২০২২ খ্রি: ০৩:০০ অপরাহ্ন
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply