আনোয়ার হোসেন, ভালুকা প্রতিনিধি ঃ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাদিরগড় বিটের অধীনে আব্দুর রশিদ নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বেশ কিছুদিন আগে বনভূমি জবরদখল করে ফ্যাক্টরির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করলে তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বনবিভাগ। কিন্তু দুই মাস পর রহস্যজনকভাবে পুনরায় প্রাচীরটি নির্মাণ করা হয়েছে।
বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভালুকা রেঞ্জের কাদিগড় বিটের অধীনে পারাগাঁও মৌজার আউলাতলী গ্রামে হবিরবাড়ি গ্রামের আবদুর রশিদ এপ্রিল মাসে বনবিজ্ঞপ্তি বনভূমি জবরদখল করে ফ্যাক্টরির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শুরু করেন। খবর পেয়ে ৯ এপ্রিল সকালে ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কাদিগড় বিট কর্মকর্তা ফিরোজ আল আমিন, হবিরবাড়ি বিট কর্মকর্তা আবুল হাসেম চৌধুরী ও তাদের স্টাফরা প্রাচীরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন এবং নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি জব্দ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, কেউ বনবিভাগের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করলে বনবিভাগের লোকজন লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে সামান্য অংশ ভেঙে দেয়। পরে দখলকারীরা আবারো বনবিভাগের সাথে যোগাযোগ করেই রহস্যজনকভাবে কাজ করে ফেলে। তেমনি আউলাতলী গ্রামে অবস্থিত সীসা ফ্যাক্টরির সীমানাপ্রাচীরও নির্মাণ করার সময় বনবিভাগের লোকজন সামান্য ভেঙে দেয়। কিন্তু দুই মাসের মাথায় প্রাচীরটির চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে নির্মাণ কাজটি করে ফেলা হয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুর রশিদের ভাই আবদুর রাজ্জাকের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি বলেন সাংবাদিকের কাজ নিউজ করা করেন বেশি করে নিউজ করেন।
হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহাম্মেদ বাচ্চু বলেন, সিসা ফ্যাক্টুরির জন্য আমার কাজ থেকে কোন ট্রেড লাইসেন্স নেইনি, আর আমার ইউনিয়নের আওলাতলী গ্রাম একটি কৃষি বান্ধব এলাকা এখানে পরিবেশ নষ্ট করে এমন ফ্যাক্টুরীর অনুমোদন প্রশ্নই আসেনা। তারা যা করছে সব অবৈধ ভাবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মতিউর রহমান জানান , সিসা কারখানা অবশ্যই ক্ষতিকর এটা তৈরি হলে পশু পাখির ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হবে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। জনবহুল এলাকায় এ ধরনের কারখানা গড়ে উঠলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিষেধ করেছেন যে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবেনা সেখানে আব্দুর রশিদ কি করে ফসলের জমির পাশে অবৈধ সিসা কারখানার জন্য জমি লিজ দেয়। আমরা এর প্রতিকার চাই।
ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দুই মাস আগে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শুরু করলে আমরা তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে নির্মাণ সরঞ্জামাদি নিয়ে আসি এবং এ ব্যাপারে মামলা দেয়া হয়েছে। পরে ওই পক্ষ আদালতে একটি স্থিতাবস্থার মামলা করে। আমরা এটি আইনি প্রক্রিয়ায় ভাঙার চেষ্টা করছি।
ওয়ান শিসাং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এর ম্যানেজার আহমেদ হাসান বলেন, আমরা আব্দুর রশিদের কাজ থেকে জমি লিজ নিয়ে এটা করছি, এখানে সিসা রিসাইকেল করা হবে। আমরা এখনো পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি পাইনি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply