November 23, 2024, 10:49 am

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
গৃহঋণের জন্য আবাসন খাতে বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী সোনার দেশ- এটিই হবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ বেনাপোল পুটখালী সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার। বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে শহীদ জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট- ২০২৪ অনুষ্ঠিত। বেনাপোল ধান্যখোলা সীমান্তে ৩৬ কেজি গাঁজাসহ ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার। টঙ্গীবাড়ীতে বীজ আলু ও সার ব্যাবসায়ী দের সাথে ইউএনওর মত বিনিময় সভা। বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচার হওয়া ২৪ জন কিশোর ও কিশোরী দেশে ফিরেছে। আ.লীগ নেতার জবর দখলে থাকা সরকারি ১২ বিঘা জমি উদ্ধার। রাজধানীতে কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। ১৫ বোতল ফেন্সিডিল সহ ০১ জন আসামী গ্রেফতার। যশোর পর্যটন খাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে। উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু। বেনাপোলের শহীদ আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করলেন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। ভালুকায় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং ধনবাড়ী উপজেলার নব নিযুক্ত নির্বাহী অফিসারের সাথে ধনবাড়ী উপজেলা মডেল প্রেসক্লাবের সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। নওগাঁ পত্নীতলার ডিগ্রি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সুমন হোসেন কে হত্যা করে গলায় ফাঁসি দিয়ে কাঁঠাল গাছের ঝুলিয়ে রহস্য জনক মৃত্যু। শার্শায় ৪ যুগ ধরে খবরের কাগজের ফেরিওয়ালা সিরাজ আর নেই। রাজনৈতিক গুরু হিসেবে মওলানা ভাসানীকে স্বীকৃতি দিতে হবে …… অধ্যক্ষ এম শরিফুল ইসলাম বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫ এর বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। যশোর যৌনকর্মী প্রেমিকাকে নিয়ে দ্বন্ধে হেলপার বাপ্পি খুন। মওলানা ভাসানীকে অপমান করায় আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত প্রায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংস্কার চাই – রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী। ভালুকায় জমি দখল ও খেতের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মওলানা ভাসানীকে স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি …. বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস। দেশপ্রেমিক লোকদের সঠিক প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে …… অধ্যাপক ড. সায়েদা ওবায়েদ যশোর বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কর্তৃক ৩০ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ কেজি গাঁজা সহ ০১ জন আটক। ওষুধের দাম কমানোর আহ্বান ……এম এ আলীম সরকার গাজীপুর কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে চলছে নারী ও মাদকের রমরমা ব্যবসা

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে শহীদ এক অকুতোভয় নারী ভাগীরথী সাহাকে কেউ মনে রাখেনি।

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে শহীদ এক অকুতোভয় নারী ভাগীরথী সাহাকে কেউ মনে রাখেনি।

শহীদ ভাগীরথী সাহা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ অকুতোভয় এক নারীর নাম। পিরোজপুর শহরের দুই কিলোমিটার সড়ক তাঁর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাঁকে মিলিটারি জিপের/মোটরসাইকেলের সঙ্গে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় পিরোজপুর শহরের রাস্তায়। তারপর রক্তাক্ত ভাগীরথীকে গুলি করে হত্যা করে তাঁর মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় বলেশ্বর নদীতে।

বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার দেবীপুর গ্রামে ভাগীরথীর জন্ম ১৯৪০ সালে। তাঁর বাবা মুড়ি বিক্রি করতেন। স্কুলে পড়ার সুযোগ হয় নি ভাগীরথীর। ১৯৫৬ সালে বিয়ে হয়েছিল পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের প্রিয়নাথ সাহার সঙ্গে। ১৯৬৭ সালে দুটি শিশু ছেলে রেখে স্বামী প্রিয়নাথ মারা যান।

৪ মে পিরোজপুরে পাকিস্তানি বাহিনী শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করে। জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি। বাগমারা গ্রামের সাহাপাড়ায় ছিল ভাগীরথীর বাড়ি। তাঁর মালপত্রও সব লুট হয়ে যায়। দুই সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। শহরে এসে বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন ভাগীরথী। কোনো কোনো দিন ভিক্ষা না করে উপায় থাকত না। প্রতিদিন রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখতেন। ক্রোধ জাগে ভাগীরথীর। ভাবেন, শাস্তি দেবেন ওদের। রাস্তার ধারে দুই ছেলেকে শুইয়ে রেখে পিরোজপুরে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ঢুকে পড়তেন। ওখানের খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের দিতেন।

শহরে এসে ভাগীরথী পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের আশপাশে ঘুরতে থাকেন। পাকিস্তানি বাহিনীর সুবেদার সেলিম তাঁকে ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে যায়। বলে, ‘বোলো মুক্তি কাঁহা, বহোত ইনাম মিলবে।’ ভাগীরথী মাঝেমধ্যেই পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে যান আর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে ভুলভাল তথ্য দিয়ে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুত রেখে তিনি ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি সেনাদের বাগমারায় নিয়ে আসেন। ওই দিন মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। শহরে ফিরে যাওয়ার পথে খানাকুনিয়ারীতেও তারা গেরিলা আক্রমণের শিকার হয়। ভাগীরথী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিপদে ফেলেছিল সেপ্টেম্বরের ৮ আর ৯ তারিখেও। ক্যাম্পে ফিরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন এজাজ নিশ্চিত হয়, ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের চর। তাঁকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর ভাগীরথী আবার যান শহরে। বাজারের মধ্যে বসে থেকে পাকবাহিনীর চলাচল নজর করতে থাকেন। অল্প পরে পাকবাহিনীর দালাল শামসুল হক ফকির ও আশরাফ হোসেন তাঁকে দেখে ফেলে। ক্যাম্পে খবর পাঠায়। দুজন পাকিস্তানি হানাদার আর ছয়জন রাজাকার এসে হাজির হয়। ভাগীরথীকে ধরে নিয়ে ক্যাপ্টেন এজাজের সামনে হাজির করে। এজাজ সুবেদার সেলিমকে নির্দেশ দেয় ভাগীরথীকে হত্যা করার। এরপর দুজন সিপাহি রশি দিয়ে ভাগীরথীর দুই হাত বেঁধে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। রশির অপর প্রান্ত বেঁধে দেয় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে। সাইকেল চললে ভাগীরথীর দেহ থেকে রক্ত-মাংস রাস্তায় খসে খসে পড়ে। সুবেদার সেলিম দুই কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে ভাগীরথীর নিথর দেহ বলেশ্বর নদে নিক্ষেপ করে।নদী থেকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা তার গ্রামের বাড়িতে সৎকার করে। এখনও তার সমাধির শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু পড়ে আছে বাড়ির এক নির্জন কোণায়।

পিরোজপুর শহরে স্থাপিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ভাগীরথীর নাম রয়েছে চতুর্থ স্থানে। আর শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড়টিতে তার নামে রয়েছে একটি ফলক। ভাগীরথীর ঠাই হয়নি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়। একাত্তরের শহীদ ভাগীরথী সাহা বেঁচে আছেন শুধুমাত্র পিরোজপুর শহরের একটি নামফলকের মাঝে

দেশ স্বাধীনের দীর্ঘ সময় পরও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।

ভাগীরথীর ছোট ছেলে গণেশ সাহা (৬০) জানিয়েছেন, তার বয়স যখন ছয় মাস তখন বাবা পিরুনাথ সাহা মারা যান। এরপর তার মা ভাগীরথী সাহা তাদের দুই ভাইকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে মাকে হারান গণেশ। তার বড় ভাই কার্তিক সাহা মারা গেছেন প্রায় ৭ বছর আগে।

গণেশের অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের জন্য তার মা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করলেও, তার মায়ের জন্য কিছুই করেনি রাষ্ট্র। এমনকি তার মায়ের স্মৃতিচিহ্নটুকুও সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দারিদ্রের কারণে নিজ উদ্যোগে তিনি সেটি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে পারেননি।

গণেশের আরও অভিযোগ, তিনি বছরের পর বছর সংশ্লিষ্টদের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন। তবে তাদের জন্য কোনো সহযোগিতার হাত বাড়াননি কেউ। এমনকি, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয় না।

পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সমীর কুমার দাস বাচ্চু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যতগুলো নির্মম ঘটনা ঘটেছে তার একটি পিরোজপুরের ভাগীরথী সাহার ঘটনা।’

অসহায় শহীদ এ পরিবারটির প্রতি সরকারের দৃষ্টি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনিসহ স্হানীয়রা।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com