নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ডিজিটাল ভূমি জরিপের অভিজ্ঞতা নিতে ১৩০ কর্মকর্তা ভারত ও ফিলিপাইনে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সফরে যাবেন। ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনা সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তারা বিদেশে প্রশিক্ষণ নেবেন। এমন প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মোট ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫টি ব্যাচে ভারত ও ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ব নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট একটি একটি কারিকুলামের অওতায় ২ থেকে ৩ সপ্তাহ প্রশিক্ষণ নেবেন। প্রশিক্ষণ কোর্সের সমম্বয়ক হিসেবে প্রতি ব্যাচের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ত পর্যায়ে একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হবে।
এছাড়া ডিজিটাল ভূমি জরিপ বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য প্রকল্পের প্রতি অর্থবছরে একটি ব্যাচে ছয় জন করে মোট ৩০ জন উপযুক্ত কোন দেশে এক সপ্তাহব্যাপী শিক্ষা সফর করবেন। এর মধ্যে ১৫ জন ভূমি মন্ত্রণালয়ের, ৫ জন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের, ৫ জন পরিকল্পনা কমিশনের ও ৫ জন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি)।
সম্প্রতি প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এমন বৈদেশিক প্রশিক্ষণের দাবি করা হয়েছে।
১৩০ কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রকল্পটি একেবারেই নতুন। এর আগে এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। প্রকল্পের আওতায় উচ্চ প্রযুক্তিগত কারিগরি কাজ করা হবে। এর আগে এই ধরনের প্রকল্প ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই প্রকল্পের আওতায় বিদেশ ভ্রমণ করে কর্মকর্তারা অভিজ্ঞতা নেবেন। দেশের অধিকাংশ স্থানে ভূমি জটিলতায় মামলা হয়ে থাকে। এ থেকে আমাদের সবাইকে পরিত্রাণ পেতে হবে। প্রকল্পের আওতায় দুটি কাজ বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে, একটি কারিগরি (ভূমি রেকর্ড ও জরিপ তৈরি) অন্যটি ডেলিভারি সিস্টেম।
প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ১ হাজার ২৩৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি সময় থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির মূল কাজ ১৪টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে পটুয়াখালী জেলার ৮টি উপজেলা ও বরগুনা জেলার ছয়টি উপজেলা। সরাসরি ডিজিটাল পদ্ধতি জরিপ এবং ৪৭০টি উপজেলায় আরএস (রিভিশনাল সার্ভে) জরিপের সকল মৌজা ম্যাপের ডিজিটাল কপিকে জিও রেফারেন্সিং করা হবে। ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় ৩৮টি এয়ার কন্ডিশন ও ১৫টি এনভায়রনমেন্ট পলুশন কন্ট্রোল ইক্যুইমেন্ট কেনার জন্য এক কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসসমূহ অত্যাধুনিক সার্ভার, কম্পিউটার, প্লাটার ল্যাপটপ ইত্যাদি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থাকবে, এজন্য এয়ার কন্ডিশন ও এনভায়রনমেন্ট পলুশন কন্ট্রোল ইক্যুইপমেন্ট দরকার।
প্রকল্পের আওতায় ভ্রমণ ব্যয় ছাড়াও অন্যান্য খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় চেয়েছে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর।
পরিকল্পনা কমিশনের এক প্রতিনিধি জানান, ‘স্টাবলিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ডিএলএমএস) থ্রো ডিজিটাল সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনস অব থ্রি সিটি কর্পোরেশন, ওয়ান পৌরসভা অ্যান্ড টু উপজেলা অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রাক্কলন থেকে প্রায় দ্বিগুণ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্ভার কম্পিউটারের ব্যয় ১৩গুণ বেশি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এছাড়া ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) আওতায় ২০১৬ সালে প্রতি সেট সার্ভেয়িং ড্রোনের দাম ১ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। একই ধরণের ২ সেট ড্রোনের দাম ৬ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply