নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বগুড়া-১ আসনে উপনির্বাচনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সাফাই গাইতে ভোটার সেজে নির্বাচন কমিশনে-ইসি এসেছিলেন ছয় সহযোগী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসিসহ পুরো কমিশনের সামনে নিজেদের ওই প্রার্থীর সমর্থনে স্বাক্ষর দেয়ার কথাও জানিয়েছে । কিন্তু বিধি বাম, ধরা পড়ে তারা সবাই ভুয়া ভোটার।
ওই ঘটনায় প্রার্থীসহ সাতজনকেই পুলিশে তুলে দিল ইসি। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। এদিন ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আটক প্রার্থী আবদুল মান্নান রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ক্যান্টিনবয়। বগুড়া-১ আসনের প্রার্থী হয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থিতার সমর্থনে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। তার মনোনয়নপত্রে যাদের স্বাক্ষর জমা দেয়া হয়েছিল তা খুঁজে না পাওয়ায় ওই মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এর বিরুদ্ধে আপিল করতে এসে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের কাছে ধরা পড়ল তারা। এরা হল মো. সুলতান (বগুড়া), সোহেল রানা (বগুড়া), মো. রুবেল (নোয়াখালী), মাহবুবুর রহমান হৃদয় (কক্সবাজার), লাভলু (কুড়িগ্রাম) ও নুরুল ইসলাম (ময়মনসিংহ)। আটক প্রার্থী আবদুল মান্নানের বাড়ি বগুড়ায়। তারা সবাই রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ক্যান্টিনে কাজ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মান্নান বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। তখনও আমার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল। পরে হাইকোর্টে রিট করলে তা খারিজ হয়ে যায়। এবার উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা আমার প্রার্থিতা বাতিল করলে ইসিতে আপিল করেছি। আপিলে এসে যা হল তা সবই দেখলেন, আমার বলার কিছু নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্যান্টিনে চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। হিরো আলম যদি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে আমি ডিগ্রি পাস করে কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না।
জানা গেছে, সিইসি কেএম নূরুল হুদাসহ পাঁচ কমিশনারের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকালে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের দুটি আবেদন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানির এক পর্যায়ে প্রার্থী আবদুল মান্নান বলেছেন, আমার জমা হওয়া এক শতাংশ ভোটারের মধ্যে বাছাইকৃত ১০ জনের সবাই সঠিক। তার পরও এসব ভোটার পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এ কথা বলে তিনি আটকদের ভোটার সাজিয়ে কমিশনের সামনে উপস্থাপন করেন। পরে কমিশনের জেরার মুখে একে একে সবাই নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেন।
তখন আবদুল মান্নান ভুয়া ভোটার উপস্থিত করার বিষয়টি স্বীকার করে আবারও প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন জানান। পরে কমিশন তার আবেদন নামঞ্জুর করে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশনা দেন। তাদের আটক করতে শেরেবাংলা নগর থানায় খবর দেয় ইসি।
এদিন যশোর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদারের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করা হলেও তা নামঞ্জুর করে কমিশন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply