গোপালগঞ্জে আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটর বিকাশের গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে সিমসহ ১১টি মোবাইল সেট, ৫ টি বিকাশ রেজিস্টার ও প্রতারণার সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারক চক্র গ্রাহকদের কাছ থেকে গত কয়েক মাসে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের চন্দ্র নাথ শীলের ছেলে গোবিন্দ শীল (২৮), ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বড় খারদিয়া গ্রামের টুটুল খানের ছেলে মো. শামসুল হক ওরফে হামিম খান (১৯), একই গ্রামের আম্মদ মীরের ছেলে মো. হুসাইন মীর (২৩), একই গ্রামের আব্দুল গফুর ফকিরের ছেলে জয়নাল আবেদীন ফকির (৫০) ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের সুকুমার মণ্ডলের ছেলে সুশান্ত মণ্ডল (২৫)।
শুক্রবার (৩ জুলাই) গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ফরিদপুরের ভাঙ্গা, সালথা, নগরকান্দা, মাদারীপুরের শিবচর ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে অভিযান চালিয়ে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ থানায় শুক্রবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রতারক চক্র গ্রাহকদের লটারি প্রাপ্তির মিথ্যা প্রলোভন দেখায়। তারা বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে গোপন বিকাশে টাকা পাঠানোর নাম্বারে কিংবা অন্য কৌশলে বিকাশ রেজিস্টার হতে গ্রাহকদের বিকাশ নম্বরের ছবি তোলা। ভিন্ন জেলায় অবস্থানরত তাদের টিমের কাছে ইমু/মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এটি প্রেরণ করে। দুরে অবস্থানরত তাদের কন্ট্রোলিং মেম্বাররা ইমু/মেসেঞ্জারে প্রাপ্ত গ্রাহকের বিকাশ নম্বর বিকাশ সফটওয়ার ব্যবহার করে হ্যাক করে। বিকাশ এজেন্ট/বিকাশ হেড অফিসের পরিচয়ে ফোন করে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারনার মাধ্যমে বিকাশ পিন কোড সংগ্রহ করে গ্রাহকদের বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করে। এ চক্র কতিপয় বিকাশ এজেন্টকে তাদের ট্রান্সফারকৃত অর্থের ভাগ দিয়ে তাদের দলভুক্ত করে অবং তাদের মাধ্যমে টাকা ক্যাশআউট করে থাকে। এভাবে চক্র গত কয়েক মাসে প্রায় ৮০/৮৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা ১৬৪ ধারায় শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চক্রের বাকি সদস্যদের শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply