টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে প্রকাশ্যে উজাড় হচ্ছে বন বিভাগের সংরক্ষিত এলাকার শাল গজারির বন। এ ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে রক্ষকদের ভূমিকা
সামাজিক বন ধ্বংসের পর বন দস্যুরা এবার আঘাত হানছে সংরক্ষিত বনের শাল গজারির ওপর। রাতের অন্ধকারে বা গোপনে নয়, দিনের আলোয় প্রকাশ্যে কাটা হচ্ছে শাল গজারি গাছ। প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে বন রক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে।
কাঠ ব্যবসায়ীদের দাবি করছেন যেভাবে যখনই গাছ কাটা হোক, বন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে একটি গাছও কাটা যায় না। বন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়েই গাছ কেটে উজার করা হচ্ছে বন।
যে সব বনদস্যূরা দিনে দুপুরে বনের গাছ কেটে উজার করছে তাদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজস রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসি। কিন্তু এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বন কর্মকর্তারা।
বন কর্মকর্তারা অভিযোগ অস্বীকার করলেও টাঙ্গাইলে ঘাটাইল উপজেলার সংরক্ষিত বনের শাল গজারি গাছ কাটা হচ্ছে অবাধে। তাই বন রক্ষায় রক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলার সাগরদীঘি বিটের অধীনে গেল আগস্ট মাসে বড়চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থান থেকে প্রকাশ্যে ২৫টি গজারি গাছ কাটেন স’মিল মালিক স্থানীয় ফজল হক। গাছ কাটা শেষে মাটি দিয়ে গুঁড়ি ঢেকে দেন। ওই স্থান থেকে বিট অফিসের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।
ফজল হক জানান, গাছগুলো তিনি ৪০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন। এরপর বন বিভাগের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটা হয়েছে। ওই জমি তিনি ফুলমালিরচালা গ্রামের আব্দুল মজিদের কাছ থেকে কিনেছেন আর সে জমির গাছ তিনি কেটেছেন।
এ বিষয়ে মজিদ বলেন, ওই জমির মালিক তিনি নন ওইটা বনের জমি। গজারি গাছ মানুষ কিনতে চায় না তাই ২৫ হাজার টাকায় নামমাত্র মূল্যে বছর খানেক আগে গাছগুলো কিনে নেন সাগরদীঘি ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি গাছ কিনিনি, গাছ কিনেছেন আইনউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বিক্রি করেছেন ফজল বেপারীর কাছে।
সাগরদীঘি বিটের প্রহরী আমিনুর জানান, গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের কাছ থেকে ফজল হক কোনো ধরনের অনুমতি নেননি। এছাড়া গাছ কাটার কোনো চিহ্ন না রাখতে ৩০ আগস্ট গুঁড়ি উপড়ে ফেলা হয় ১০-১২ জন শ্রমিক দিয়ে। এ কাজে ফজল হক নিজেই নেতৃত্ব দেন।
সাগরদীঘি বিট অফিসের দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম হাবিবুল্লাহ জানান, কবে এবং কখন এ ঘটনা ঘটেছে তা আমার জানা নেই। আগে ঘটনা জানতে হবে। গাছ কাটার বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, বক্তব্য দিতে হলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি লাগবে।
উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান রুহুল আমিন জানান, শাল গজারি আমাদের ঘাটাইলের ঐতিহ্য। এই বনভূমি ধ্বংসের পেছনে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply