এম শহিদুল ইসলাম, “দুসস” নিউজঃদেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। একদিনের মধ্যে নাটকীয়ভাবে দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। মূলতঃ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছেন কিছু আমদানিকারক ও পাইকারি কারবারি। শুধু তাই নয়, এবার অতিরিক্ত মুনাফার লোভে খুচরা ব্যবসায়ীরাও নেমেছেন এ নিত্যপণ্যটির অতিরিক্ত মজুতে। এতে করে দামের খড়্গ পড়ছে সাধারন ক্রেতাদের কাঁধে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযোগ পাওয়া গেছে, অনেক খুচরা ব্যবসায়ীর মজুদ থাকা সত্বেও পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না। আড়ালে মজুদ করছেন পেঁয়াজ। অনেক দোকানে পেঁয়াজ থাকলেও দোকানি বলছেন, বিক্রি হবে না। মূলত বেশি টাকার লোভে এসব করছেন তারা। সীমিত আকারে পেঁয়াজ মজুদ করছেন অনেকেই। এতে খুচরা বাজারেও এক ধরনের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ সংকটে দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে।
পেঁয়াজের দামের লাগাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থেকে জেল জরিমানা করলেও থেমে নেই কারসাজি। তাই দেশের বিভিন্ন জেলায় হু হু করে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি ও দোকানে মূল্য তালিকা না রাখায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাখায় ১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে
১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আরেকটু ভালো মানের পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি আরও ১০-২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। দেশি পেঁয়াজের তুলনায় ভারতের পেঁয়াজের দাম অবশ্য কেজিতে ১৫-৩০ টাকা
কম দরে বিক্রি হয়েছে। অনলাইন শপগুলোর মূল্যতালিকায় গতকাল দেশি পেঁয়াজ ছিল ১৩০ টাকা কেজি আর ভারতের পেঁয়াজ ১০০ টাকা।
দুদিনের ব্যবধানে হুট করেই বেড়ে গেছে এ নিত্যপণ্যটির দর। গত সোমবার পর্যন্ত দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার বিকেলে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ মঙ্গলবার থেকে ছাড়িয়ে যায় শতকের ঘর।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সবসময় সুযোগের সন্ধানে থাকেন। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের একশ্রেণির মজুতদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী ‘বাজারে পেঁয়াজের সংকট চলছে’ এমন কথা চাউর করে দিয়ে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফালোভী অনেক খুচরা ব্যবসায়ীও পেঁয়াজ মজুদ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, গতবছর পেঁয়াজের দাম নিয়ে যা হলো, সেই অভিজ্ঞতা থেকে এ বছর খুচরা ব্যবাসায়ীদেরও অনেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। গত বছর দাম বেড়েছে মূলত আমদানিকারক ও মজুদদার সিন্ডিকেটের যোগসাজশে। এবার খুচরা বিক্রেতারাও অতিরিক্ত মুনাফালোভী হয়ে পড়ায় পেঁয়াজের বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে।
সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক যোগ করেন, গত বছর কারসাজিবাজদের একটি তালিকা করা হলেও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি বলেই এবারও এমনটা হচ্ছে। তিনি মনে করেন, কিছু বাজারে ¯্রফে দায়সারা গোছের অভিযান পরিচালনায় এ সমস্যার সমাধান হবে না। তাই দোষীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি মো. গোলাম রহমান বলেন, ব্যবসায়ীদের স্বভাবই হচ্ছে মুনাফার সুযোগ খোঁজা। ভোক্তাদের চাহিদা মেটানো গেলে বাজার অস্থিরতা কমে যাবে। বাজার সামাল দিতে বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানো যেতে পারে। এতে হয়তো তাৎক্ষনীকভাবে ফল মিলবে। তবে এটা টেকসই সমাধান নয়। এজন্য দেশীয় উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে আগে।
এদিকে পেঁয়াজের দামের লাগাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল সারা দেশে অভিযান চালায়। গতকাল নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সাতক্ষীরা : গত দুদিনে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় কোনো পেঁয়াজের ট্রাক প্রবেশ করেনি। তবে বন্দরের ওপারে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে ১৬৫ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টির গেটপাস হওয়া আছে। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার পর যে কোনো মুহূর্তে ট্রাকগুলো প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছেন ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম।
হিলি : দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল গেটপাস হওয়া পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোনো ট্রাকই প্রবেশ করেনি। হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশিদ বলেন, অভ্যন্তরীণ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত সোমবার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। গতকাল ভারতীয় রপ্তানিকারকরা মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন, হিলি সীমান্তের ভারত অংশে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পাইপলাইনে থাকা পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি মিলতে পারে। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুমতি না পাওয়ায় পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারেননি ভারতীয় রপ্তানিকারকরা।
পাবনা : দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উদপাদনকারী জেলা পাবনায় লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার। জেলার বনগ্রাম হাট, আতাইকুলা হাট, করমজা হাট, গোড়–লী হাট, সাঁথিয়া হাট, কাশিনাথপুর হাট, ধুলাউড়ি হাটসহ জেলার বড় বড় হাটগুলোতে প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার পেঁয়াজের হাটগুলোয় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। অথচ ২ দিন আগে (সোমবার) এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা দরে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না- বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর দেখার পরই দাম বেড়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
নাটোর : নাটোরের বাজারগুলোয় কমে গেছে পেঁয়াজ আমদানি। বাজারের অস্থির পরিস্থিতির কারণে বাজারে পেঁয়াজ না আসায় খুচরা পর্যায়ে কেজিতে আরও ১০ টাকা দাম বেড়েছে। গতকাল সকাল থেকে শহরের বৃহত্তম পেঁয়াজের বাজার স্টেশন বাজারে পেঁয়াজের আমদানি ছিল খুবই নগন্য। ৪ ভাগের একভাগ পেঁয়াজও আমদানি হয়নি। মঙ্গলবার পাইকারি পর্যায়ে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হলেও বুধবার বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আর মঙ্গলবার খুচরা পর্যায়ে ৮০ টাকা বিক্রি হলেও বুধবার বিক্রি হয় ৯০ টাকায়।
ফেনী : সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তন হচ্ছে মূল্য। সোমবার সকালে যে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৬০ টাকা, বিকালে তা দাঁড়ায় ৭০ টাকা। ক্রেতারা দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন। সোমবার রাতে ফেনী শহরের তাকিয়া রোড ও ইসলামপুর রোডে ট্রাকে ট্রাকে পেঁয়াজ নামতে দেখা যায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫-২৮ টাকার মধ্যে থাকার কথা। কিন্তু গতকাল বিক্রি হয়েছে অন্তত তিনগুণ দামে।
বরগুনা : ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার অজুহাতে ও দেশীয় পেঁয়াজের সংকট দেখিয়ে আমতলী উপজেলার সব হাট-বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। গতকাল সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১১০ টাকা কেজি।
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে হঠাৎ করেই ফুলবাড়ী পৌর বাজারের আড়ত থেকে পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার সকালে খুচরা বিক্রেতারা প্রতিদিনের মতো পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে যান। এক রাতের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রেতারা। তবে দাম বাড়ার খবরে অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিরা পাল্লায় পাল্লায় পেঁয়াজ কিনছেন।
কালাই (জয়পুরহাট) : কালাইয়ে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে অভিযান ও মেয়াদোত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩টি প্রতিষ্ঠানকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। গতকাল দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবারক হোসেন পারভেজ।
বগুড়া : নন্দীগ্রামে পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য রাখার দায়ে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সকালে নন্দীগ্রাম উপজেলার কুন্দারহাট বাজারে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুল ইসলাম।
টাঙ্গাইল সদর : টাঙ্গাইলে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে মনিটরিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল সকালে পেঁয়াজের বাড়তি দাম আদায় করায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের পার্ক বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুল ইসলাম তিন ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
রাউজান (চট্টগ্রাম) : রাউজানে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং করে ২৮ প্রতিষ্ঠানকে ৯১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় পৃথক পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোনায়েদ কবির সোহাগ এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ভূইয়া।
শিবপুর (নরসিংদী) : শিবপুরে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শিবপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল চন্দ্র বসাক। অভিযুক্তদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে জরিমানা করা হয়।
রাজশাহী : রাজশাহীতে পেঁয়াজের বাড়তি দাম নেওয়ায় আমিন ট্রেডার্স নামে দোকান মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল দুপুরে নগরীর সাহেব বাজারে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হোসাইন এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় পেঁয়াজের বাড়তি দাম না নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। রাজশাহীর বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
শেরপুর : অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি, মূল্য তালিকা না রাখাসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে নকলা উপজেলায় তিন ব্যবসায়ীকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযান পরিচালনা করেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুর রহমান। জরিমানাপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে পেঁয়াজের এক আড়তদারকে আট হাজার ও পলিথিন রাখার অপরাধে দুই দোকানের মালিককে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে শ্রীবরদীতে বাজার মনিটরিং করেছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকালে পৌর শহরের কাঁচাবাজার ও পোড়াগড় বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধে ৮ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন শ্রীবরদী ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা আক্তার।
নিষেধাজ্ঞার আগেই গেটপাশ পেলেও আসেনি ভারতের পেঁয়াজের ট্রাক
বেনাপোল, ভোমরা ও হিলি স্থলবন্দরের ওপারে গেটপাস হওয়ার পরও আটকেপড়া পেঁয়াজ বোঝাই কয়েকটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করবে বলে মৌখিকভাবে বাংলাদেশের আমদানিকারকদের জানিয়েছিলেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। কিন্তু গতকাল রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কোনো ট্রাকই প্রবেশ করেনি। নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই এসব ট্রাকের গেটপাস নেওয়া হয়েছিল।
গতকাল রাত সোয়া ৮টার দিকে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, গেটপাস হওয়া পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক প্রবেশের ব্যাপারে কোনো কাগজপত্র তাদের হাতে পৌঁছেনি। সূত্র আরও জানিয়েছে, পেট্রাপোলে পেঁয়াজ বোঝাই মাত্র ৪টি ট্রাকের গেটপাস হওয়া আছে। এর বাইরে পেঁয়াজ বোঝাই আরও শতাধিক ট্রাক আটকা আছে ওই বন্দরে।
আমদানিকারক খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সরোয়ার জনি জানিয়েছেন, তিন দিন ধরে ট্রাক ওপারে আটকে থাকায় পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা
ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতারাতি অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের পেঁয়াজ-বাজার। এতে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিও রয়েছে বলে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিত্যপণ্যের বাজার, বিশেষ করে পেঁয়াজের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে গতকাল তদারকি অভিযান চালিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালানো এ অভিযানে ১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তদারকিকালে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, প্রদর্শিত মূল্য তালিকার সঙ্গে বিক্রয় রশিদের গরমিল, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও পণ্য, নকল পণ্য এবং ওজনে কারচুপিসহ ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অপরাধে ১৪৭ প্রতিষ্ঠানকে অর্থদ- প্রদান করা হয়। টিসিবির ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমও (ট্রাক সেল) মনিটরিং করা হয়।
এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অধিদপ্তর তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply