মেয়ে জামাইকে শীতের পিঠা খাওয়ানোর দাওয়াত করে বাড়িতে এনে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ষৃকৃষ্টপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনার ধারণকৃত একটি ভিডিও মঙ্গলবার স্থানীয় সাংবাদিকদের দেখিয়ে অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার জামাই রাকিবুল ইসলাম।
গোপনে ধারণকৃত ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, রাকিবুলের মুখে বালিশ চাপা দেওয়া ও হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করছেন তার স্ত্রী জুলেখা খাতুন, শ্যালিকা জায়দা খাতুন ও শ্যালক শামীম হোসেন। আর রাকিবুল চিৎকার করে বলছেন, কে কোথায় আছেন, আমাকে বাঁচান। ওরা আমাকে মেরে ফেললো রে……!
নির্যাতনের শিকার রাকিবুল ইসলাম পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার তাড়াশের পার্শ্ববর্তী খানমরিচ উইনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। ২০০৮ সালে তিনি তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ষৃকৃষ্টপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে জুলেখা খাতুনকে বিয়ে করেন।
রাকিবুলের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই জুলেখা কারণে-অকারণে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এ নিয়ে তাদের দুজনার মাঝে মধ্যে মারধরের ঘটনাও ঘটে। মূলত প্রতিশোধ নিতেই তার শশুর (২১ ডিসেম্বর) সোমবার পিঠা খাওয়ানোর জন্য দাওয়াত করে ঐ রাতেই আনুমানিক ১১ টার দিকে তিন সন্তানকে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশী এগিয়ে এলে প্রাণে বেঁচে যান।
রাকিবুলের শ্যালিকা জায়দা খাতুনকে বিয়ে করেছেন মেরাজ উদ্দিন। সরেজমিনে ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সময় মেরাজ উদ্দিন বলেন, তিনি পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ রাকিবুলের চিৎকার তার কানে যায়। তৎক্ষণাৎ তিনি উঠে এসে প্রথমে জানালা দিয়ে গোপনে ভিডিও করেন। পরে প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এ সময় রাকিবুলের স্ত্রী জুলেখা খাতুন বলেন, তাকে মারধর করতেন রাকিবুল। তাই একটা উচিত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
রাকিবুলের শ্যালিকা জায়দা খাতুন বলেন, তার বোনকে তার দুলাভাইকে মারধর করেন। তাই প্রতিশোধ নিয়েছেন। অনুরূপ কথা বলেন, রাকিবুলের শ্যালক শামীম হোসেনও।
অভিযোগ অস্বীকার করে রাকিবুলের শশুর আব্দুল জলিল ও শাশুড়ি ছানোয়ারা বেগম বলেন, এমন ঘটনার জন্য তারা নিজেরাও অনুতপ্ত। এ জন্য তারা সন্তানদের যথেষ্ট শাসন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে আশিক বলেন, এ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply