বেনাপোল প্রতিনিধি, মোঃ শাহিন হোসেন: যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে নির্মিত চারতলা ভবনটির ত্রুটিপূর্ণ অংশ এলাকাবাসী কর্তৃক ভাংচুর ঘটনা নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙচুর ঘটনা ও ভবন নির্মাণে অনিয়ম অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত না হওয়ায় মূল হোতা এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে।
ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের মূল হোতা বোয়ালিয়া গ্রামের বিশিষ্ট ট্রান্সপোর্ট ও সি এন্ড এফ এজেন্ট ব্যাবসায়ী রবিউল ইসলাম রবি বলেন এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য সুত্রে জানা গেছে এলাকার প্রভাবে কতিপয় ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের যোগ সাজে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের সত্যতা মিলেছে। গত ১৯ ডিসেম্বর ধান্যখোলা গ্রামের স্থানীয় জনগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ভবনের ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভেঙ্গে গুড়িয়ে ফেলে যাহার ভিডিও চিত্র এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা স্থানীয়রা হাতে নাতে ধরলেও প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এর কাছ হতে সাবকন্টাকে ভবন নির্মাণের কাজ নেওয়া রবি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ও গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করেই ভবন নির্মাণ প্রকল্পের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ধামা চাপা দিতে সচেষ্ট হয়েছেন।
ইতিমধ্যে ঘটনা স্থল শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ পরিদর্শন করেছেন বলে নিশ্চিত করেন এলাকাবাসী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি রবির দাবি নিয়োজিত মিস্ত্রিদের ভূলে এুট্রিপূর্ণ অংশ ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
বিদ্যালয়টির শিক্ষক মিনহাজুর রহমান মিন্টুসহ এলাকাবাসীর দাবি ভবনের কাজ শুরু হতেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এন আই ট্রেডার্সের প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নির্মাণ কাজ চালালে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে কাজ বন্ধ করতে হয়। পরবর্তীতে আর অনিয়ম করবেনা বলে আশ্বস্ত করে ভবনের ছয়টি পিলার ভেঙ্গে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন রবি।
গত বছরের ৩ জুলাই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় যার ব্যয় নির্ধারণ হয়েছে ২ কোটি ৮৮লাখ টাকা বলে জানান প্রকল্পটির দায়িত্ব প্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার জহির রায়হান। একি সাথে তিনি দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এন আই ট্রেডার্সের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে উত্তেজিত গ্রামবাসী কর্তৃক চারতলা ভবনের ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভেঙ্গে ফেলার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
গ্রামবাসী কর্তৃক বিদ্যালয় ভবন ভাংচুরের খবরে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান জানান, এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের সে অনুযায়ী গোলযোগের খবরে পুলিশ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছে। শার্শা উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান সংবাদিকদের জানান, বিদ্যালয় ভবন ভাংচুরের খবর তার জানা ছিলো না তবে এ ধরণের কিছু ঘটলে তদন্ত করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সবকিছু উপেক্ষা করে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই বিতর্কিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি রবি পুনরায় বন্ধ রাখা কাজ তড়িঘড়ি চালু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যয় বহুল এ ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারী টাকা আত্মসাৎ কাজে জড়িতদের সঠিক বিচার চেয়েছেন তারা। সাথে সাথে নব- নির্মিত চারতলা ভবনটির নির্মাণ ত্রুটি পূনঃপরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যত পাঠদান কার্যক্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জোর দাবী তুলেছেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply