December 3, 2024, 5:26 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
যশোর জংশনে থেকে পদ্মাসেতু দিয়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়ার স্বপ্ন বাঁচাতে রেল অবরোধের ঘোষণা এখনওদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়নি, জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই: জামায়াতে আমির। ইচ্ছাম‌তো পোশাক পর‌তে পার‌বে। -জামায়া‌তে ইসলামীর আমির ডা. শ‌ফিকুর রহমান ভালুকায় ছাত্র দলের আহবায়ক লুৎফর রহমান সানির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল সার্বভৌমত্ব-সরকারের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে শক্তিশালী না করলে দেশবাসী নিরাপত্তাহীনতা ভুগবে …..লে. কর্ণেল (অব.) খন্দকার ফরিদুল আকবর বত্রিশ বছরে নিরাপদ সড়ক চাইঃ প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি, লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। খাগড়াছড়ির সাজেকে পাহাড়ি দুই গ্রুপের মধ্যে গুলি, আটকে আছে অনেক পর্যটক। ভালুকায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামীর আত্নহত্যা বহু ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও চিৎপুর রয়েছে চিৎপুরেই বেনাপোল স্হল পথে ৯ দিনে ভারত থেকে এলো ১৩৪০ মেট্রিক টন চাল। ভালুকায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী নাঈম সরকার যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি —এম এ আলীম সরকার হিন্দু সম্প্রদায় ইস্কনের এই ধরণের কার্যকলাপকে নিন্দা জানাই যশোর কমিটি ঘোষণার ১দিন পরেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়কের পদত্যাগ। ভাষাশহিদ আবদুস সালামের জন্মবার্ষিকী পালিতভাষাশহিদ আবদুস সালামসহ সকল ভাষাশহিদদের কবর যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হোক যশোর পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা ৩ যুবক আটক। গাজীপুর সিটি কমিটি ঘোষণা করেছে এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন। বরেণ্য সাংবাদিক নুরুদ্দিন আহমেদকে নেপালে সংবর্ধনা প্রদান ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই সফল হবে না। -তারেক রহমান বেনাপোল স্থলবন্দরে ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের “বিশেষ সাধারণ সভা’ অনুষ্ঠিত র‌্যাবের ‘কসাই’ খ্যাত মহিউদ্দিন ফারুকীর বিচারের দাবি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম আদালত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার। শহীদ আব্দুল্লাহ’র কবর জিয়ারত এবং তার পরিবারকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ঢাবি আসা লোকজনকে বিতাড়িত করা হয়েছে। মোল্লা কলেজে হামলার ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আওয়ামী লীগের পলাতক সন্ত্রাসী শাহজাহানের দোসরদের পুর্নবাসন করছে বিএনপি নেতা বাবুল। যাত্রী হয়রানীর কারনে বেনাপোল থেকে সব দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ।

হারিয়ে যাচ্ছে গরু দিয়ে হাল চাষ

হারিয়ে যাচ্ছে গরু দিয়ে হাল চাষ

আনোয়ার হোসেন তরফদার ভালুকা ময়মনসিংহ ঃ কালের পরিক্রমায় আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গরু দিয়ে হালচাষ,দেশের অনেক কিছুতেই ডিজিটালের সু বাতাস বইছে এবং মানুষ ডিজিটালাইজেশন সুবিধা গুলো পাচ্ছে অনেক সহজেই। সেই অগ্রযাত্রা থেমে নেই কৃষিভিত্তিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও। দিন দিন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে সারাদেশ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙ্গালী’র চিরচেনা সেই গরু-লাঙল দিয়ে জমি চাষের চিত্র।

দেশের কৃষি প্রধান অন্যান্য অঞ্চলের মতো ময়মনসিংহের ভালুকায় গরু-লাঙল দিয়ে জমি চাষ আর মই দেওয়ার দৃশ্য সবার নজর কাড়তো। বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠের দিকে নজর পড়তেই দেখা যেতো শত শত কৃষক বাঁশের ফালা দিয়ে তৈরি করা ধারালো লাঙ্গল কাঠের হাতল আর জোয়ালের মাধ্যমে গরুর কাঁধে বেধে দিয়ে জমি চাষ করছে। সে সময় গরু-লাঙ্গল ছাড়া জমি চাষ করার কথা চিন্তাই করা যেতো না। অথচ গরু-লাঙ্গলের সাথে কৃষকের সেই মিতালীর দৃশ্য এখন বিরল।

যুগের পরিবর্তন আর বিজ্ঞানের ক্রমাগত উন্নতির কারণে গরু-লাঙলের স্থান দখল করে নিয়েছে ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি। এখন আর কৃষক কাক ডাকা কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে জমি চাষ করতে মাঠে যায় না। কৃষক এখন তার সুবিধামত দিনের যে কোন সময় ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার নিয়ে মাঠে গিয়ে অল্প সময়ে প্রয়োজনীয় জমি চাষ এবং মই দিয়ে ফসল আবাদ করছে। তবে ওই ‘ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষে পরিশ্রম এবং সময় কমেছে সত্য। কিন্তু ফসলের গুণগতমান এবং স্বাদ কমে গেছে। তাছাড়া জমির উর্বরতাও হ্রাস পাচ্ছে।

প্রবীণ কদম আলী জানান, এক সময় ময়মনসিংহের ভালুকা অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে প্রতিটি ঘরেই ছিল গরুর লালন-পালন। এই গরুগুলো যেন পরিবারের এক একটা সদস্যের মতো। তাদের দিয়ে একরের পর একর ভূমি চাষ করা হতো। সে আরো বলেন যাদের গরু কিংবা হাল ছিলো না তারা জমি চাষের জন্য ‘মাগনে কামলা দিত ’ পরে তার গরু নিয়ে জমি চাষ করবে বলে। হাল মালিকেরা সময়মতো জমি চাষ করে দিতো। এতে করে চাষের মৌসুমে তাদের উপরি আয়ের ব্যবস্থা হতো।ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের কৃষক সবুর বলেন জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে তার লাঙল-জোয়াল আর গরুর পালের সঙ্গে।

হালচাষের দীর্ঘ স্মৃতি হাতড়ে এই বয়োবৃদ্ধ বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৩-১৫ বছর হবে ওই সময় আমার বাবা অসুস্থ থাকায় সংসারের বড় ছেলে হওয়ায় তখন থেকে চাচাদের সঙ্গে হাল চাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হাল চাষের বলদ গরু ছিল ৩ জোড়া। চাষের জন্য দরকার হতো ওই বলদ গরুগুলো। ১ জোড়া বলদ, লাঙ্গল-জোয়াল, মই, ছড়ি (বাঁশের তৈরি গরু তাড়ানোর লাঠি), গরুর মুখের টোনা (কামইর) লাগতো আমাদের হাল চাষ করার জন্য। এখন প্রায় কয়েক বছর হলো, বয়স আর অসুস্থতার জন্য হাল চাষ ছেড়ে দিয়েছি। ট্রাক্টরের আগমনে এখন তো আর গরু দিয়ে হালচাষ হয় না বললেই চলে। এখন সেই পুরনো স্মৃতিগুলোকে আঁকড়ে ধরে কষ্টের দিনগুলোর কথা মনে করে সময় পার করছি।

গরু দিয়ে হাল চাষের উপকারিতার কথা বর্ণনা করে উথুরার এলাকার চাষী হোসেন আলী বলেন, ‘গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো, হাল চাষ করার সময় গরুর গোবর সেই জমিতেই পড়তো। এতে করে জমিতে অনেক জৈব সার হতো, এ জন্য ফসলও ভালো হতো। ট্রাক্টর দিয়ে চাষ পদ্ধতি শব্দ দূষণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, হালের গরুর গোবর আমরা বাড়ি থেকে জমিতে দিতাম। সার কেনা লাগতো কম। এছাড়া পরিবেশ দূষণ কম হতো। তিনি আরো বলেন, লাঙ্গল দিয়ে চাষ করলে জমিতে অনেক খানি মাটির গভীরে গিয়ে মাটি তুলে উল্টিয়ে রাখতো। ওপরের মাটি নিচে পড়তো আর নিচের মাটি ওপরে। এখন তো আর তা নেই। ট্রাক্টর দিয়ে গভীর থেকে মাটি তোলা হয় না।

ধীরে ধীরে পাওয়ার টিলারের প্রচলন হওয়ায় গরু দিয়ে হাল চাষের কদর কমে গেছে জানিয়ে এক প্রবীণ কৃষক জানান, কম সময়ে বেশি জমিতে চাষ দিতে সক্ষম হওয়ায় জমির মালিকরা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করে নিচ্ছেন। অথচ এক সময় গরুই হাল চাষের একমাত্র মাধ্যম ছিল। বর্তমানে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কৃষি ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য নিয়ে এসেছে স্বীকার করে তিনি বলেন, যারা কৃষক গরু দিয়ে হাল চাষ করে জীবীকা নির্বাহ করতো কালক্রমে তারা পেশা বদল করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। তবে এখনো গ্রামের কিছু কৃষক জমি চাষের জন্য লাঙ্গল-জোয়াল, গরু আর মই দিয়ে চাষ পদ্ধতি টিকিয়ে রেখেছেন।

গরু দিয়ে হাল চাষ গ্রামীণ সমাজের কৃষকদের একমাত্র অবলম্বন ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন তা বিলুপ্তির পথে। গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রাখা এখন প্রায় দুরূহ। কারণ মানুষ এখন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। তবুও কিছু কিছু স্থানে আমাদের কৃষকদের এই ঐতিহ্য লালন করতেই অনেকে তা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে যান্ত্রিকতার দাপটে ঐতিহ্যের এসব কৃষি উপকরণ কৃষকের ঘরে কতদিন টিকে থাকে তা ভবিষ্যতই বলে দেবে। গরু দিয়ে হালচাষ না থাকায় গ্রামের মানুষের মাঝে অলসতা বিরাজ করছে, গরুর জৈব সার দিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় যে শাক সবজি হত সেগুলো এখন আর হচ্ছে না তাই আমাদের এই গ্রামীণ ঐতিহ্য গরু দিয়ে হালচাষ ও গরু পালন এগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com