মাহমুদুল হাসান,যশোর প্রতিনিধি
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে অভূতপুর্ব এক উদ্দোগ্যে সারা দেশের ভুমিহনি ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করে তাদের জমি সহ ঘর উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। “মুজিব বর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবেনা” বঙ্গবন্ধু কন্যার এই ঘোষণা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে ২ শতাংশ জমির সাথে পাকা ঘর পেয়ে বসবাস করছেন শার্শা উপজেলার ৫০টির বেশী পরিবার। হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে বেনাপোল ইউনিয়নের দিঘিরপাড় মৌজায় আরো ৩১টি ঘর। এরই মধ্যে একাধিক ঘরে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও উপকারভোগীদের মধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে বসবাসরতদের রয়েছে অভিযোগ।
ভারী বর্ষনে টিনের চাল দিয়ে ভিতরে গল গল করে ঢুকছে পানি যা বসবাসরতদের জন্য যন্ত্রনার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। উপজেলার পুটখালী ইউনিয়নের বালুন্ডা গ্রামের উপকারভোগী শহরবানু জানান, শেখ হাসিনা আমাদের মত অসহায়দের থাকার জায়গা করে দিয়েছে এতে আমরা খুব খুশী। সে গরীবের জন্য মানসন্মত ঘর বানিয়ে দিতে চাইলেও নিচের কর্তারা তা করেনী। এখন আমাদের ঘরে পানি ঢুকে খাবার ও কাপড় চোপড় সহ জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। একি এরিয়ার আব্দুল লতিফের স্ত্রী তানজিলা জানান, উপহারের বাড়ী পেয়েছেন ১০ জন এর অধিকাংশ ঘরেই পানি ঢুকে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে ও দরজা জানালার পাল্লাগুলো নিন্মমানের হওয়ায় খুলে পড়ার উপক্রম। একি সমস্যার কথা জানিয়ে সরোয়ারের স্ত্রী ছাবিনা বলেন গরীবের বসবাসের জন্য হাসিনা যখন দয়া করে ঘর দিয়েছে তখন ভালো জিনিসই আমাদের দিতে বলেছে। আমরা অঙ্গ ও অসহায় হওয়ার কারনে তা বুঝে নিতে পারেনী বলে এখন ভিজতে হচ্ছে। অভিযোগ বিষয়ে শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, বালুন্ডা গ্রামে বসবাসকারীদের কিছু অভিযোগ পেয়েছি, পি আই ও কে ঘরে বৃষ্টির পানি না ঢোকার ব্যাবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছি।
আশ্রয়ণ পকল্পের আওতায় প্রাপ্ত ঘরের সংখ্যা প্রশ্নে তিনি আরো জানান, উপজেলায় ১২৭টি ঘর এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রশাসনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ লাল্টু মিয়া জানান,প্রথম ধাপে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ও কিছু ঘর ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা নির্মান ব্যায়ে শার্শা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে মোট ৮৫ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ঘর নির্মানে অনিয়মের কোন অভিযোগ পাওয়া যাইনী। নির্মান কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রশ্নে তিনি জানান,কোন ঠিকাদার নাই উপজেলা কমিটির তত্তাবাধনে গৃহহীনদের ঘর নির্মান হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত আছে। এ পর্যন্ত উপজেলার উলাশী ইউনিয়নে ২৭টি,কায়বা ইউনিয়নে ৬টি,পুটখালী ইউনিয়নে ১০টি,গোগা ইউনিয়নে ৩টি, বাহাদুরপুর ইউনিয়নে ৪টি ও ডিহি ইউনিয়নে ৬টি ঘর হস্তান্তর হয়েছে এবং বেনাপোলের ৩১টি ঘর হস্তান্তর অপেক্ষমান রয়েছে বলে আরো জানান তিনি।
প্রাপ্ত তালিকার সুত্র ধরে গত ৬ আগষ্ট বেনাপোলের চোরের রাস্তা এলাকায় গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় হস্তান্তরের অপেক্ষায় থাকা ৩১টি ঘরের মধ্যে ২টি ঘরের দেয়ালের ফাঁটল স্পষ্ট। আশংকা রয়েছে আরো কয়েকটির। কয়েকটি ঘরের বাথরুমের রিং ভেঙ্গে ভিতরে ময়লা ও পানি ঢুকছে ও চলাচলের রাস্তা কাদায় পিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর ব্যাবহারের আগেই এ অবস্থা হয় তাহলে দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় র্শার্শায় গৃহ নির্মানেও অনিয়ম- দূর্নিতী হয়েছে কি? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে উপকারভোগী সহ সাধারন মানুষের মাথায়। শার্শার বিশিষ্টজনদের দাবী অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা,“ঘর নির্মাণে অনিয়ম নই” বাস্তবায়নের মাধ্যমে গৃহহীনদের আবাসস্থল বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply