ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার ছয় শিক্ষার্থী।
শুক্রবার বিকেলে আদালতে নেয়া হলে বিচারকের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতার ছয় শিক্ষার্থী হলেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুত্তাকীন সাকিন, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ (২৪), জিওগ্রাফির আল হোসেন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে কিছু ছাত্র তাকে আটক করেন। প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে তিনি মোবাইল চুরি করেছেন অভিযোগ তুলে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান।
মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়েন।
বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply