নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী পেশায় একজন চিকিৎসক। একজন জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি একজন চিকিৎসক হওয়ায় বর্তমান করোনা মহামারিতে আইভীর কাছে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা ছিলো অনেক। কিন্তু মেয়র হিসেবে জনগনের পাশে দাড়ানোর বা দুস্থ্য অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়ানোর কথা থাকলেও লকডাউনের দুই মাসে বাসা থেকেই বের হননি তিনি !
নারায়ণগঞ্জবাসী বারবার ভোট দিয়ে সেলিনা হায়াত আইভীকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন, চরম দু:সময়ে তারা তাদের সেই প্রিয় মেয়রকে খুঁজেই পেলেন না। লকডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে নিজের হাতে এক মুঠো চাল দিতেও দেখা যায়নি তাকে। সরকারী ত্রাণের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা তাদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকলেও নাসিক মেয়র আইভীকে দেখা যায়নি।
একজন জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সিটি মেয়র আইভী একজন চিকিৎসক। নামের আগে সব সময় ডাঃ কথাটি লেখা থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী তার চিকিৎসা সেবা কখনো পাননি তাই এবার ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে নগরবাসী ভেবেছিলো চিকিৎসক আইভীর সেবা পাবেন নারায়ণগঞ্জবাসী। কিন্তু তাদের সে আশায়ও গুড়েবালি দিয়েছেন নাসিক মেয়র। সারা দেশের চিকিৎসক সমাজ যেখানে মৃত্যু ভয়কে উপক্ষো করে করোনার বিরুদ্ধে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন, সেখানে ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন নিজ বলয়ে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশে লক ডাউন শেষ হয়েছে তিনদিন আগে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে না যেতে এবং সকল প্রকার জন সমাগমকে নিরুৎসাহিত করতে পুলিশের পাশাপাশি সড়কে কাজ করছে সেনাবাহিনী। নারায়ণগঞ্জবাসীকে করোনার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে এবং লক ডাউনে অসহায় কর্মহীন সাধারণ মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। যে যেভাবে পারছেন এই দূর্যোগ মোকাবেলায় সর্ব শক্তি নিয়োগ করছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। সরকারী ত্রাণ বিতরণ আর শহরে কিছু জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেয়া ছাড়া করোনা প্রতিরোধে নাসিকের আর কোন কার্যক্রম নজরে আসেনি নগরবাসীর, যা ক্ষুব্দ করেছে তাদের।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মেয়র ব্যাপক উন্নয়ণের দাবী করলেও যথাযথ নাগরিক সুবিধা পায়নি নগরবাসী। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। নগরবাসীর এই দুঃসময়ে মেয়রের নীরব ভূমিকায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, র্যাব-১১ সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখনো পর্যন্ত নীবর ভূমিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে জেলা প্রশাসক। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রনে জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে কাজ করছেন। প্রতিটি উপজেলার ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। তবে মাঠ পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে জেলা পুলিশের সদস্যরা।
তবে করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি সতর্ক অবস্থা রয়েছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস। পুরো জেলার খোঁজ খবর রাখাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে। মূলত নারায়ণগঞ্জ জেলাতে সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় স্ব স্ব স্থানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও নাসিক মেয়র রয়েছেন এখনো নীরব ভূমিকায়। মশা নিধনে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় তার ব্যর্থতার কারণে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা বলছেন, মেয়র ব্যাপক উন্নয়ণ করলেও সেই কাজের টেন্ডার পাচ্ছেন তারই ঘনিষ্টজনরা। তাহলে কি ঘনিষ্টজনদের সুবিধা নিশ্চিত করতেই তিনি কি এতো উন্নয়ণ করছেন। নয়তো এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কোন না কোন পদক্ষেপ নিতেন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply