মাহমুদুল হাসান, যশোর প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাজিয়া বাজারে একাধিক মিস্টির দোকানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয়ে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। গত সোমবার( ১৮ই জুলাই) কেশবপুর উপজেলার মিষ্টি বিক্রেতা নিউ লক্ষী মিস্টান্ন ভান্ডারের মালিক সঞ্জয়দাসের(৪০) সাথে প্রতারনার ঘটনাটি ঘটে।
প্রতারণার স্বীকার ব্যাবসায়ীরা হলো পাজিঁয়া গ্রামের অসীম দাশের ছেলে। ঘটনার বর্ননায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী সঞ্জয় দাস জানান, সোমবার পাজিয়া ৬নং ওয়ার্ডের শম্ভুনাথ মেম্বার একটি ফোন নিয়ে দোকানে আসেন ও আমাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফোনে কথা বলবেন বলে ফোন ধরিয়ে দেন। এ সময়ে তিনি আমার ব্যবহৃত ফোন নাম্বার জেনে নেন ও আমাকে করোনাকালীন কেন মিস্টি বিক্রি করছে বলে ভয়-ভিতী দেখান। মেম্বার চলে যাওয়ার আধা ঘন্টা পরে আমার নাম্বারে কেশবপুর ইউনো পরিচয়ে কল দিয়ে আবারো ব্যবসা পরিচালানা করাতে নানা ভয়-ভিতী দেখায়। এক পর্যায়ে তিনি করোনাকালীন সময়ে ব্যাবসা পরিচালনা করতে কোন অসুবিধা হবেনা বলে ৩০ হাজার টাকা চেয়ে বিকাশ নাম্বারে-০১৬১০৪৭২৯৩৪ পাঠিয়ে দিতে বলে। আমি সেমত বিকাশ এজেন্ট দেবনাথ বস্ত্রালয়ে গিয়ে টাকা পাঠিয়ে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পায়। পরবর্তীতে জানতে পারি আমার ছোট ভাই লহ্মী মিস্টান্ন ভান্ডারের মালিক মৃত্যুনজয় দাসকেও একি পরিচয়ে করোনাকালীন নির্বিঘ্নে ব্যাবসা করতে টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ১৯জুলাই আমি কেশবপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। ইতিমধ্যে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের কে ডেকে ঘটনার বিষদ শুনে,প্রতারক চক্র উদঘটনে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করার আশ্বাশ দেন।
২২ জুলাই কেশবপুর থানায় আমি পুনরায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা এসে আমার মিস্টির দোকান পরিদর্শন সহ ঘটনার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন মিস্টি ব্যবসায়ী সঞ্জয়দাসের লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টির তদন্ত চলছে।প্রাথমিক ভাবে ঐ ব্যবসায়ী প্রতারক চক্রের কবলে পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ বিষয়ে ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপিসদস্য শম্ভুনাথ জানান,গত ১৮ জুলাই দুপুরে তার কাছে কেশবপুর নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন কলে পাঁজিয়া বাজারের মিষ্টি বিক্রেতাদের সংখ্যা, নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম ও মোবাইল নাম্বার জানতে চাই। আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি দ্রæত প্রতিষ্ঠান গুলোর মালিকের সাথে কথা বলানোর নির্দেশ দেন। করোনাকালীন ত্রান সহায়তা দেবে ভেবে আমি ৩ জন মিস্টি ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান মালিকের সাথে কথা বলিয়ে দিই। একি দিনে ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুরের নাম্বারে কেশবপুর ইউনো পরিচয়ে কল করা হয়েছে বলে আরো জানান তিনি। পরবর্তী সময়ে জানতে পারি সঞ্জয়দাসের কাছ হতে বিকাশে নগত ৩০হাজার টাকা নিয়েছে ইউনো পরিচয়দান কারী ঐ প্রতারক। তাৎক্ষনিক ফোনে থাকা প্রতারকের নাম্বারে কল করলে নাম্বার বন্ধ পাই ও ২২ জুলাই ইউনো স্যারের অফিসে গিয়ে ঘটনা খুলে বলি।
বিষয়টি জানতে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম্বারে কল করেও সংযোগ না মেলায় বিবৃতি জানা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য কেশবপুরে আগেও প্রশাসনিক কর্মকতা পরিচয়ে টাকা হাতানোর ঘটনা ঘটেছে। এবার প্রতারণা করে ইউনো পরিচয়ে টাকা হাতানোর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রæত প্রতারক চক্রটি শনাক্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার সুশীল সমাজ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply