যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব সাঈদ মোল্যা,একই অফিসে কর্মরত অসীম ও তার কথিত স্ত্রী বিউটি খাতুন এর বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ২শতক জমির উপর পাকা বাড়ী প্রদানের নামে লাখ লাখ টাকা হাতানোর অভিযোগ ওঠেছে। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে দূর্গাপুর গ্রামের জাহিদ হাসান নামে এক ব্যাক্তি অভিযুক্তদের নামে শার্শা উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শার্শা উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিলের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ্যে ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নায়েব সাঈদ মোল্যার অভিনব প্রতারণার স্বীকার বেনাপোল পৌরসভাধীন দিঘীরপাড় ওর্য়াডের ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাসরত ওদুদের স্ত্রী ভূক্তভোগী পারুল জানান, নায়েবের স্ত্রী বিউটির কথামত কোরবানী ঈদের আগে ঘর পাবার আশায় নায়েবের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার উপস্থিতিতে বিউটির হাতে ৭ হাজার ৫শত টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে নায়েব আরো ২৫হাজার টাকা দাবী করলে দিতে না পারায় আজও পর্যন্ত বরাদ্দের ঘর আমি পাইনী এমনকি ঘর পাওয়ার আশায় যে টাকা দিয়েছি তাও ফেরত পাইনী। ভবেরবেড় গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন, নার্গিস খাতুন ও হালিমা খাতুনের কাছ হতে বরাদ্দকৃত ঘর প্রতি ২২ হাজার টাকা করে গ্রহন করেছেন নায়েব সাঈদ মোল্যার অপর সহযোগী ও একই অফিসে কর্মরত অসীম। ভ‚ক্তভোগীরা টাকা প্রদানের সময় সাক্ষী রাখা বেনাপোল বাজারের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি খোকন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,৪-৫ মাস পূর্বে নায়েবের কথা মত বেনাপোল ভূমি অফিসে কর্মরত অসীম অভিযুক্তদের কাছ হতে টাকা গ্রহন করলেও আজও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থরা ঘর পাইনী।

দিঘীরপাড় গ্রামের আনোয়ারা নামের এক দুস্থ মহিলা জানান,বেনাপোল এলাকার আনুমানিক ৪৫জন দুস্থ মহিলাকে ঘর দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নায়েব ও তার দুই সহযোগী। ভূক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনপূর্বক ঘর পাওয়ার আশায় তাদের প্রদানকৃত টাকা ফেরতের দাবী জানান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নায়েবের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন। ভূমি অফিসে কর্মরত অসীম জানান,ঘর পেতে এসিল্যান্ড ও ইউনো অফিসে টাকা দিতে হয় এজন্য টাকা লাগে। নায়েবের স্ত্রী পরিচয়ে দুস্থ মহিলাদের কাছ হতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশপাশে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতানো বিউটি নিজেকে সরকারদলীয় বড় মাপের মহিলা নেত্রী পরিচয় দিয়ে জানান,কোথায় কি করেছি এটা সাংবাদিক কে বলতে হবে কেন। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসনীয় উদ্দ্যেগ ভূমিহীন ও গৃহহীনের জন্য উপহার স্বরুপ জমি সহ পাকা বাড়ী আজ বিতর্কিত হচ্ছে কতিপয় স্বার্থন্বেষী প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহ অসাধু নেতা-কর্মীর জন্য। ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষ্যিতে বেনাপোল এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায়,বহু অপকর্ম ও দূর্নীতির মূল হোতা নায়েব আবু সাঈদ মোল্যা। তার নিকটস্থ সহযোগীদের দিয়ে বেনাপোল ভূমি অফিসকে জিম্মি দশায় পরিনত করে বিগত চার বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন যা সুষ্ঠু তদন্তে বেরীয়ে আসবে। নামপত্তনে সরাসরি ঘুষ গ্রহন, জাল পর্চা তৈরী, জমির অংশ বাড়ানো কমানো সহ সরকারী জমি অর্থ বিনিময়ে ব্যক্তি মালিকানায় দখল নিতে দেওয়া বা রেকর্ড করে দেওয়া সর্বোপরি খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নায়েব সাঈদ মোল্যা।

এমনকি তার কথিত স্ত্রী মোছাঃ বিউটি খাতুন এর নামে নিজ ক্ষমতার অপব্যাবহার করে ছোঁট আচড়া গ্রামে ৮শতক সরকারী জমি ভূমিহীন দেখিয়ে ব্যাক্তিনামে পাইয়ে দিয়েছে। সাম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে অর্থ বানিজ্য ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বেনাপোল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নায়েব সাঈদ ও তার সহযোগীরা সিন্ডিকেট গড়ে একের পর এক অনিয়ম-দূর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতালেও কোন অদৃশ্য শক্তির ইন্ধনে তারা প্রশাসনিক জবাবদিহীতার আওতায় আসেনা তা আজও স্পষ্ট নয় ভূক্তভোগী সহ বেনাপোল এলাকার জনগনের কাছে।