নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আনোয়ার হোসেন যশোর। যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ২০ বিল বাওড় নিয়ে মামলার জট খুলছেনা রয়েছে। নানান মামলা চলমান থাকায় বছরের পর বছর ইজারা দিতে পারছে না যশোর জেলা প্রশাসন। এতে একদিকে যেমন বড় অংকের রাজস্বর টাকা হাতছাড়া হচ্ছে অন্যদিকে বিল বাওড়গুলো লুটেপুটে খাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।
জল মহালের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে যশোর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। প্রাপ্ত তথ্য মতে, যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০ বিল বাওড় নিয়ে মামলা চলছে রয়েছে। এরমধ্যে শার্শা উপজেলার কন্যাদহ বাওড়,পুটখালাীর মহিষাকুড়া, রাজগঞ্জ বাওড়, বেনাপোলের বাহাদুরপুর বাওড়, চৌগাছার মুক্তেশরী (বলিদাহ), চাকলা বিল, যাত্রাপুর বাওড়, মর্জাদ বাওড়, বেড়গোবিন্দপুর বাওড়, যশোর সদরের বুকভরা বাওড় (সমঝোতা), জগহাটি বাওড়, হামিদপুর, ভৈরব নদীর সিঙ্গিয়া রেলস্টেশন থেকে বসুন্দিয়া খাল পর্যন্ত, ঢাকা রোড ব্রিজ যশোরের বারান্দীপাড়া থেকে ঢাকা রোড ব্রিজ ঘোপ পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এছাড়া অভয়নগরের ধুলগ্রাম বিল, বিলবালিয়া ও পোড়াখালি বাওড়, মণিরামপুরের খেদাপাড়া বাওড় ও খাটুরা বাওড় (সমঝোতা), ঝিকরগাছার কৃষ্ণপুর বাওড় ও উজ্জলপুর বাওড় (সমঝোতা)। মামলা চলমান থাকার কারণে এসব বছরের পর বছর ইজারা দেওয়া যায়না বলে যশোর জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন।
৯৬১ হেক্টরের মণিরামপুরের খেদাপাড়া বাওড় নিয়ে ২০২০ সালে আদালতে মামলা করা হয়। স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির ক্যাশিয়ার মিজানুর রহমান জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে তাদের ৫০ বছরের একটি চুক্তি হয়েছিল। এর মেয়াদ এখনো ২০ বছর রয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন মেয়াদ শেষের আগেই বাওড়টি ইজারা দিতে চায়। এজন্য তারা আদালতে মামলা করেছেন। সূত্র মতে, খেদাপাড়া বাওড় নিয়ে মামলা হওয়ায় মৎস্যজীবী সমিতির নামে নামেমাত্র ভূমি অফিসে খাজনা দেওয়া হচ্ছে। যদি বৃহৎ এই জলমহলটি ইজারা দেয়া যেত তাহলে কোটি টাকার উপরে সরকার রাজস্ব টাকা পেতেন।
মামলা চলমান রয়েছে চৌগাছার মর্জাদ বাওড় নিয়ে। এজন্য বাওড়টি ইজারা দেয়া যায়নি। কিন্তু বাওড়টির ব্যবস্থাপক এবং নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে মৌখিক চুক্তিতে ইজারা দিয়েছেন বলে সম্প্রতি মৎস্য ও প্রণি সম্পদ মন্ত্রী, সচিব, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের খাতায় চৌগাছার যাত্রাপুর বাওড়। ৩৩ একরের এই বাওড়টি ভোগদখলে রেখেন তিনটি পরিবার। এদের একজন মঞ্জুরুল আলম। তিনি দাবি করেছেন তার পিতা বিসরকারের কাছে থেকে ১০ একর জমি কিনেছিলেন। আর অন্যরা কিনেছিলেন বাকি অংশ। তবে সরকার এই জমি নিয়ে মামলা করলে তারা উচ্চ আদালত পর্যন্ত যান। সেখান থেকে তাদের পক্ষে রায় হয়েছে। কিন্তু যশোর প্রশাসন বলছে এ বাওড় নিয়ে এখনো মামলা চলছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, জলমহল সহ সরকারের সব সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসন কাজ করছেন। এজন্য আইনজীবী নিয়োগ ও নিয়োগকৃত আইনজীবীদের সাথে নিয়োমিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। দখলদারদের কোন ছাড় দেওয়া সুযোগ এখন আর নাই।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply