আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খুনিকে মোটরসাইকেলের পেছনের নিয়ে ঘুরছিলেন যশোর সদর উপজেলার হালসা বিশ্বাসপাড়ার দুবাই প্রবাসী সোহেল রানা (৪০)। কিন্তু ঘুর্ণাক্ষরে টের পাননি তিনি। খুনিদের মধ্যে অন্যতম ছিলো তার (নিহতোর) ভাইপো জিহাদুল ইসলাম জিসান (১৯) এই জিসানকে তিনি মোটরসাইকেলের পেছনে করে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন।
জিসানের দেয়া তথ্যমতে আরেক খুনি আলমনগর খালপাড়ার ফজলু হোসেনের ছেলে ফারাবি হোসেন (২২) তাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। আর এই কাজে মূল সহায়ক ছিলেন নিহতের স্ত্রী খুশি মীম (২২)। পুলিশ প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করে এ তথ্য পেয়েছে।
এছাড়া এই ঘটনায় নিহতের ভাই শাকিব খান কোতয়ালি থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে গত কাল শুক্রবার হত্যার মামলা করেন। পুলিশ নিহতের স্ত্রী খুশি মীম ও নিহতের ভাইপো জিসানকে আটক করেছেন। তবে ফারাবিকে এখনো আটক করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি নিহতের মোটরসাইকেলটিও।
এজাহারে শাকিব খান উল্লেখ করেছেন, তার বড় ভাই সোহেলে রানার সাথে ৪ বছর আগে আলমনগর গ্রামের আব্দুল আলীমের মেয়ে খুশি মীমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই বছরের একটি ছেলে আছে। বিয়ের আগে খুশি মীমের সাথে অপর আসামি আলমনগর খালপাড়ার ফজলু হোসেনের ছেলে ফারাবি হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এই সম্পর্ক গোপন রেখে সোহেল রানার সাথে পারিবারিক ভাবে খুশির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ফারাবি তার ভাইকে (সোহেলে রানাকে) নানা ভাবে হুমকি দিতো। খুশি মীমও তার ভাইয়ের সাথে সংসার করতে চায়তো না। প্রায় সময় দুইজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো। খুশি পিতার বাড়িতে চলে গেলে আর ফিরে আসতে চাইতো না। বছর দুই আগে সোহেল রানা দুবাই চলে যান। দ্বিতীয় রমজানে তিনি বাড়িতে আসেন। কিন্তু তার সাথে গণ্ডগোল করে খুশি পিতার বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকে আসামিরা সোহেল রানাকে হত্যার জন নানান ষড়যন্ত্র করতে থাকে। গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার ভাই সোহেল রানা একটি মোটরসাইকেল করে ভাইপো জিসানকে সাথে নিয়ে আলমনগর শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। মঠবাড়ি গ্রামের বুকভর বাওড়ের পাশে রাস্তায় পৌঁছালে আসামি ফারাবিসহ অজ্ঞাত আসামিরা তার গতিরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। সে সময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে পৌঁছালে আসামিরা তার মোটরসাইকেলে নিয়ে দ্রুতপালিয়ে যাই। পরে সোহেল রানাকে দ্রুত যশোর সদর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে তারা এই হত্যার কারণ উদঘাটনে তৎপর হয়ে। বিষয়টি যে প্রেম ঘটিত তা প্রথম দিনে অনুমান করেন পুলিশ। ঘটনার দিন সোহলে রানা তার মোটরসাইকেলে ভাতিজা জিসানকে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন।এই জিসান হত্যা পরিকল্পনা কারীদের একজন। জিসান মোটরসাইকেলের পেছনে বসে হোয়াটস অ্যাপের ম্যাসেঞ্জারে আসামি ফারাবিকে জানায়। কোন পথ নিয়ে কখন যাবে সেটিও জানিয়ে দেয়। বিষয়টি কোন ভাবেই বুঝতে পারেননি সোহেল রানা।
আটক জিসান পুলিশকে জানিয়েছেন, পারিবারিক বিষয়টি নিয়ে সোহেল রানার সাথে তার বিরোধে ছিলো। তাকে সায়েস্তা করতে আমি মতলব আটি। এই কারণে তার চাচি খুশির এক্স বয়ফ্রেন্ড (সাবেক প্রেমিক) ফারাবির সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। তারা দুইজনএবং নিহতের স্ত্রী খুশিএই তিনজন মিলে পরিকল্পিতভাবে সোহেল রানাকে হত্যা করে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply