আজিমপুর গর্ভনমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ২০২৪ এর এস.এস.সি পরীক্ষার্থী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুম ও অপহরনের হাত থেকে আমাকে বাঁচান
আমি ছায়েরা খাতুন আজিমপুর গর্ভনমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে এবারে এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। আমার পরীক্ষার কেন্দ্র ওয়েষ্ট এন্ড হাইস্কুল আজিমপুর, ঢাকা, রোল নং-৪২৬৮৮৩, রেজি: ২১১০৯৬৭০৫৫, সেশন-২০২২-২০২৩। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে পুরান ঢাকা দুধর্ষ সন্ত্রাসী স্বপন গংরা আমাকে গুম-অপহরন করতে পারে, আমি নির্ভয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাই। ওরা আমাদেরকে ১ বছর ঘর-বাড়ী ছাড়া করেছে, আমাদের বাড়ী-ঘর লুটপাট ও জমি দখল করেছে, আমার মাকেও নির্যাতন করেছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমার মা-বাবা ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি। আমি যদি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারি তাহলে আমার মৃত্যু ছাড়া আর কোন গতি নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেও আজিমপুর গর্ভনমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী ছিলেন। আমি সেই স্কুলে ছাত্রী হয়েও এখন ঘর ছাড়া, বাড়ী ছাড়া। আমার মা-বাবা সন্ত্রাসীদের ভয়ে পলাতক রয়েছে। আমার স্কুলে সন্ত্রাসীরা খোঁজখবর নিয়েছে আমি এডমিট ও রেজিষ্ট্রেশন কার্ড এনেছি কি না। আমার পরীক্ষার হল কোথায়? আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। ওরা আমার বাবার আপন বোনের মেয়ের স্বামী স্বপন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন করছে। আমার মা কে স্বপন ধর্ষণ করেছে, এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমার গোটা পরিবারকে বার বার নির্যাতন করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দিয়েছে। আমার বড় খালা নাসিমা বেগমের ত্রিশ বছরের সংসারের সমস্ত জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়েছে। আমার খালু ও খালাতো ভাই প্রবাসে থাকে, তাদের কষ্টার্জিত সম্পূর্ণ টাকা ও জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমার পরিবারের সাবইকে অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমার নানী জাহানারা বেগম (৭০) তাকেউ তারা ছেড়ে দেয়নি। তার মাথার চুল ফেলে দিয়ে বিবস্ত্র করে আলকাতরা মাখিয়ে মানুষিকভাবে কষ্ট দিয়েছে ও নির্যাতন করেছে। আমার বাবা-মা, বড় খালাসহ আমার পরিবারের সবাইকে নির্মম নির্দয়ভাবে রক্তাক্ত করেছে। দীর্ঘদিন আমাদেরকে আটকিয়ে রেখেছে। থানা নাকি তাদের পকেটের মধ্যে রয়েছে। আমরা থানায়ও যেতে ভয় পাই। থানায় বিভিন্ন সময় তিনটি মামলা করলেও মামলাগুলো বর্তমানে চলমান রয়েছে।
মামি শাশুড়িকে ধর্ষণ ও পরিবারের সদস্যদের অভিযুক্ত নির্যাতনকারী স্বপনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চান এক নির্যাতিত পরিবার। তারা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযুক্ত স্বপন ভুক্তভোগী নারীর ভাগিনা হন।
ইতিপূর্বে এ বিষয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, দুপুর ১২টায় সেগুনবাগিচা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তাঁরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী নারী, বাবু ইসলামসহ অন্যান্যরা। সংবাদ সম্মেলনে সোনিয়ে বেগম বলেন, ২০১৬ সালের ১৫ জুন ভাগ্নির বাসায় যান তিনি। পরে ভাগ্নি তার মেয়েকে স্কুলে নিয়ে গেলে বাসায় একা পেয়ে ভাগ্নি জামাই স্বপন জোড়পূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন। ওই দৃশ্য স্বপন তার মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন বছর যাবত ধর্ষণ অব্যাহত রাখেন। এক পর্যায় তিনি রাজি না হওয়ায় ২০২৩ সালের ১, ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি স্বপন এবং ভাগিনা রুবেল, রিয়েল, নুরাল, কামরুল, রাজা, জনি ও তুহিনসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা ২০১৫ সালের মিথ্যা চুরির অভিযোগ দিয়ে তার স্বামী বাবু ইসলামসহ তাকে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করে। নির্যাতনে তাদের হাত-পা ভেঙে যায় ও শরীরের চামড়া ফুটো করে গর্ত বানিয়ে দেয়। পরে তারা ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের গোলাম বাজার এলাকায় গিয়ে তার বড় বোনকে রাত ৯টা থেকে ভোর রাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নির্যাতন চালায়। পরে তারা বোনের বাসার আসবাবপত্র, নগদ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ও জমির দলিলপত্রসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়া যায়। এ সময় তারা বোনের কাছে ৯০ লাখ টাকা ও তার মেয়ে জামাই মাহবুবের কাছে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকার সিদ্দিক বাজারের বাসায় তার দুই মেয়েসহ তাকে ও তার স্বামীকে ধরে নিয়ে রাত ১১টা থেকে শুরু করে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে তার স্বামীর হাত-পা বেঁধে তাকে পাশের রুমে নিয়ে গণধর্ষণ করে। তাদের ৩ দিন ওই বাসায় আটকে রাখার পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে গত ১৬ জানুয়ারি আদালতে একটি মামলা করেন। গত ১৮ জানুয়ারি আরেকটি মামলা করেন। এই মামলার খবর পেয়ে ধর্ষক স্বপন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা তাদের হত্যা করতে খুঁজছে বলে জানান তিনি।
আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছায়েরা খাতুন এর পিতা বাবু ইসলাম, মাতা সোনিয়া বেগম, নানী জাহানারা বেগম, বড় খালা নাসিমা বেগম, খালাতো বোন নাজনীন, ভাবী সাবিনা, শায়লাসহ প্রমুখ। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে তারা জানান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply