তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের করোনাভাইরাস শনাক্তের উদ্যোগের পাশাপাশি আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থাও করতে হবে। এ জন্য বড় বড় কারখানাগুলো এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করি। প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিএমইএ কভিড-১৯ আধুনিক ল্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী জাহেদ মালেক, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী প্রমুখ।
পোশাক শ্রমিকদের করোনাভাইরাস শনাক্তে গাজীপুরের চন্দ্রায় ডা. ফরিদা হক মেমোরিয়াল ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতালে এই আধুনিক পিসিআর ল্যাব স্থাপন করেছে বিজিএমইএ।
এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ঈদের ছুটির পর পোশাকশিল্পে যে শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা।
কিন্তু করার কিছু নেই। করোনার কারণে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে উৎপাদন চালাতে হলে কারখানাগুলোর পক্ষে শ্রমিক ছাঁটাই ছাড়া উপায় থাকবে না। অবশ্য হঠাৎ পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই শ্রমিকরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
রুবানা হক এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এ পর্যন্ত ২৬৪ জন পোশাক শ্রমিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। উদ্যোক্তারাই তাদের সব ধরনের চিকিৎসার খরচ বহন করছেন।’ সাম্প্রতিক সময়ের ম্যাকেঞ্জির একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, কাজ কমতে থাকলে চলতি মাস থেকেই শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হতে পারে।
তবে তাদের জন্য কী করা যায় তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তবে এপ্রিল ও মে মাসে ছাঁটাইয়ের ইস্যুতে বিজিএমইএ পদক্ষেপ নেবে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বর্তমানে যেকোনো সময়ের চেয়ে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক অনেক সুদৃঢ়। নভেল ইউকে প্রযুক্তিসম্পন্ন এই ল্যাবের মাধ্যমে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৮০ জন শ্রমিকের করোনা টেস্ট করানো যাবে।
এটা পর্যায়ক্রমে আরো বাড়ানো হবে। প্রাথমিকভাবে চন্দ্রা, আশুলিয়া ও সাভারে করা হবে। চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জে আরো দুটি ল্যাব করার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ মোকাবেলায় বিজিএমইএর এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। একই সঙ্গে জীবিকাকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে।
দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি সবাইকে মাস্ক পরার পাশাপাশি নিয়মিত চেকআপ এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিয়ে আমাদের এখন ভাবতে হবে।
ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বাডাস) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, কভিড-১৯ এই ল্যাব বিজিএমইএ ও বাডাসের যৌথ প্রয়াস। ভবিষ্যতে করোনা ইউনিটও করা হবে। এ ছাড়া বিজিএমইএ চাইলে বিশ্ব মানের আইসোলেশন সেন্টারও করে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, শ্রমসচিব কে এম আব্দুস সালাম, বিটিএমএর সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী প্রমুখ।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply