আনোয়ার হোসেন তরফদার, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ বর্ষার বহুমাত্রিক ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়ে লাল, গোলাপী, নীল, হলুদ, বেগুনি ও সাদাসহ বিভিন্ন রঙের ফুলে নিজেকে রাঙিয়ে বর্নিল সাজে সেজেছে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক। কামিনী, বেলী, গন্ধরাজের মাতাল করা গন্ধে ও নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছে সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী মানুষদের। ছড়াচ্ছে অন্যরকম এক ভালবাসার ছোঁয়া।
আওয়ামী লীগ সরকারের বড় মেগাপ্রকল্প হিসেবে প্রথমদফার মেয়াদে ময়মনসিংহ-জয়দেবপুর ৮৭ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়কের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয় এক হাজার ৮১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। চারটি প্যাকেজে এই প্রকল্পটি সর্বশেষ তত্ত্বাবধান করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ ইসিবি। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৬ সালের ২ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উত্তরবঙ্গের একাংশের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীত করা। মহাসড়কটি দৃষ্টিনন্দন ও তাতে দুর্ঘটনা রুখতে সড়ক বিভাজকের উপর রোপণ করা হয়েছিল ৩০ প্রজাতির লক্ষাধিক গাছ। এর মধ্যে রয়েছে স্বদেশি নীম, কৃষ্ণচুড়া, রাধাঁচুড়া, কামিনী, বেলী, গন্ধরাজ, কনকচাঁপা, রক্ত করবি, চেরি, নীল কাঞ্চন, লাল কাঞ্চন, জোগাটগর, অগ্নিস্বর, পলাশ, গৌরিচুড়া, ছাতিম, জারুলসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির গাছ।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অভ্যুদয়ের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েত হোসেন রিপেল বলেন, ‘ফুলের সৌরভ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও স্থানীয়দের মুগ্ধ করে। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে বেশ কিছু গাছ মরে গেছে। ফলে মাঝে মাঝে কিছু জায়গা একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। তাই এসব দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ করছি।’
জামালপুরগামী ট্রাকের চালক সুলাইমান হক বলেন, ‘এই সড়কটিতে গাড়ি চালিয়ে অন্যরকম এক প্রশান্তি পাই। বিভিন্ন রঙের দৃষ্টিনন্দন ফুলের সমারোহ ও গন্ধে গাড়ি চালানোর সময় এক ধরনের ভালোলাগা কাজ করে।’
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জান বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের ভ্রমণ আনন্দময় করার লক্ষ্যে ঋতুর সঙ্গে মিল রেখে গাছগুলো রোপন করা হয়েছে। সড়ক বিভাজকের উপর রোপণকৃত গাছগুলো সারা বছরজুড়েই সৌন্দর্য বা সুগন্ধ ছড়ালেও বর্ষাকালে ভিন্ন এক আবহ তৈরি করে। বৃক্ষগুলোকে বছরজুড়েই আমরা পরিচর্যা করে থাকি। ময়মনসিংহ অংশে এই বর্ষাতে সড়কের ফাঁকা জায়গাগুলোতে আরও দুই হাজার রঙ্গন ও চায়নাটগরের চারা লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply