এম শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল শহরে ব্যুরো হেলথ কেয়ারে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্বে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিয়ে ডাক্তারকে রক্ষা করার অভিযোগ ওঠেছে টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান এর বিরুদ্বে। এ ঘটনায় সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গত ২১ শে অক্টোবর ব্যুরো হেলথ কেয়ারে কর্তব্যরত ডাক্তার নাসরিন সুলতানা রত্নার ভুল চিকিৎসার কারনে এক নবজাতকের মৃত্যু হয় এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা নওশাদ রানা সানভী বাদি হয়ে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কিন্তু সিভিল সার্জন ডাক্তারের বিরুদ্বে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ব্যুরো হেলথ কেয়ারের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নওশাদ রানা সানভী।
নওশাদ রানা সানভী জানান,এ ঘটনায় ব্যুরো হেলথ কেয়ারের বিরুদ্বে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার অভিযোগ ডাক্তার নাসরিন সুলতানা রত্নার বিরুদ্বে যার অবহেলায় শিশুটির মূত্যু হয়েছে অথচ টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন।এখন পযন্ত ডাক্তারের বিরুদ্বে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, হসপিটাল নাকি ডাক্তারের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিব না নিব ওটা আমাদের ।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রিপাড়ায় অবস্থিত ব্যুরো হেলথ কেয়ারে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। গাইনী চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা রত্না সিজারের নামে প্রসুতি মহিলাদের ভূল চিকিৎসা দিয়ে একাধির প্রসুতির গর্ভের নবজাতক হত্যার করেছেন।
তার বিরুদ্ধে এধরনে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবে সাম্প্রতি তিনটি অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে তার মধ্যে এক হতভাগ্য পিতা নবজাতক শিশু হত্যার লিখিত অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন।_
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, শহরের পৌরএলাকার উত্তর থানাপাড়ার মো. আবুল খায়ের ইমরুল (৩৫)-এর স্ত্রী মোছা. চাঁদনী ইসলাম প্রসুতি অবস্থায় চলতি বছরের ৪ মে থেকে ডা. নাসরিন সুলতানা রত্নার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এরপর ৯ আগস্ট চাঁদনীকে সিজার করেন এবং নবজাতকের জম্ম হয়। জম্মের সাথে সাথে শিশুটি অবস্থা আশংকা হওয়ায় চিকিৎসক রত্না সেখান থেকে রেফার্ড করে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন।
সেখানে ৪ দিন পর ১৩ আগস্ট শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনার পর ইমরুল ও তার আত্নীয় স্বজনরা ব্যুরো হেলথ কেয়ার কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ডা. নাসরিন সুলতানা রত্নাকে ক্লিনিক থেকে অপসারণ করেন।
মামলায় উল্লেখিত ঘটনা থেকে আরো জানা যায়, একই এলাকার আরো এক রোগী মো. রূপকের স্ত্রী মোছা. লুবনার সাথেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ মে লুবনাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলা হয়।
পরীক্ষা করার পর ডা. নাসরিন সুলতানা রত্না প্রসুতি রোগী লুবনার টিউমার হয়েছে বলে মতামত দেন।
তার চারমাস পরে ৮ সেপ্টেম্বর লুবনা একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে একই পরীক্ষা করান। ওই ডাক্তার লুবনার কোন টিউমার নাই বা কোন অপারেশন করা লাগবে না বলে জানানা। এই ভুক্তভোগী লুবনা মামলার দুই নম্বর সাক্ষী।
এরপর একই ঘটনা ঘটিয়েছেন নওসাদ রানা সানভীর স্ত্রীর সাথে। স্ত্রী’র প্রসব ব্যাথার জন্য সানভী ডাক্তার রত্নার সরনাপন্ন হন। তিনি প্রসুতিকে ব্যাথার ঔষুধ প্রয়োগ করেন। ঔষুধ প্রয়োগের সঠিক সময় এবং সঠিক নিয়মে প্রসব ডেলিবাড়ী না করায় নবজাতকাট মারা যায়।
প্রসব ব্যাথার ঔষুধ প্রয়োগ করে তিনি সময় ক্ষেপন করেন। সময় পেরিয়ে সিজার না করে নরমালের চেষ্টা করায় নবজাতকাটর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ নবজাতকের পিতা সানভীর।
মামলায় ডা. নাসরিন সুলতানা রত্নাকে ভুল চিকিৎসা প্রদান, ভুল রিপোর্ট বর্ণনা, অজ্ঞতা ও অসাবধানতাবশত নবজাতক শিশুর হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় ডা. নাসরিন সুলতানা রত্নার বিরুদ্ধে শিশুটির সাধারণ ভাবে জন্মগ্রহণে বাঁধা ও জন্মের পর পরই যেন মৃত্যুবরণ করে সেই ধরণের কাজে করিয়াছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ভূক্তভোগীরা খুনি চিকিৎসক রত্নার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা সহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
টাঙ্গাইলে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠা বেসরকারি ক্লিনিক, হেলথ কেয়ার, হাসপাতাল ও ডায়াগোনিষ্টিক সেন্টারে কোন প্রকার সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে শুধু মাত্র কসাই খানা তৈরী করে নিজেদের ফয়দা লুটে নিচ্ছে। চিকিৎসক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার নামে কোটি কোটি হাতিয়ে নিচ্ছে।
শুধু মাত্র অথের্ লোভে পরিচালনাকারী এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে টাঙ্গাইলবাসীকে সঠিক সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন টাঙ্গাইলবাসী।
এই বিষয়ে ডা. নাসরিন সুলাতানা রত্না তার উপর আরোপিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে মুঠোফোনে জানান, আমি আমার দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করেছি। এই রোগী ডায়াবেটিক আক্রান্ত ছিল।
আর ডায়াবেটিকস আক্রান্ত প্রসুতির যে কোন ধরণের সমস্যা হতে পারে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমি এই রোগীর ক্ষেত্রে কোন প্রকার গফিলতি করি নাই বা হয় নাই। রোগীর পরিবার আমার সাথে দেখা করলে আমি তাদের বোঝাতে সক্ষম হব বলেও আশা করি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply