May 18, 2024, 1:05 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
মেদ কমাতে পাতিলেবুর উপকারিতা। আমি হাওয়া ভবনের মতো কোনো ‘খাওয়া ভবন’ করিনি, যা ব্যবসার জন্য অসুবিধা তৈরি করবে। মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী তে পুকুর থেকে মিললো কষ্টি পাথরের মূর্তি ভালুকায় কারখানা শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু বিমানের ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দু দুদক। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অধিকার আদায় মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ও ফারাক্কা লংমার্চ পালিত। কেশবপুর থানার ওসি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সহ তিন জনের নামে চাঁদাবাজির মামলা। বাঙালি যাদের মনে রাখেনি, ঐতিহাসিক মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কার কর্তা রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবস ৩০মে অনলাইনে আলোচিত তনির ভয়ংকর প্রতারণা, সানভীস বাই তনি’র শোরুম সিলগালা। ভালুকায় নবনির্মিত ৩টি রাস্তার উদ্ধোধন ফেসবুক রিলস থেকে আয় করবেন যেভাবে। যশোরের শার্শায় চাচাকে হত্যার দায়ে ১১ বছর পর ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড। ভালুকায় কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ চোখ বলে দিবে শরীরে আছে কতশত রোগ, জানা যাবে স্বাস্থ্যের অবস্থা! আগামী বাজেটে জলবায়ুর উপর প্রাধান্য দেওয়া জরুরি – আতিউর রহমান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতগামী যাত্রীসুবিধা ফিঃ অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। দেশ সেরা যশোর শিক্ষা বোর্ড এস এস সিতে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকীতে কবি বৈঠক ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। ভালুকায় আসাদুল হিমেল ও নাসিমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসীর মানববন্ধন। ভালুকায় ডাকাতি প্রস্তুতিকালে ৩ ডাকাত আটক। ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকীতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি “প্রগতি”র শ্রদ্ধাঞ্জলি। ” হৃদয় মাঝে রবি” ২৫ এ বৈশাখ এর অনুষ্ঠান পঞ্চ ইউনিয়নের অসাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে মুলাদীতে সমালোচনার ঝড়। যশোরের মন্দিরের স্বর্ণঅলংকারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল চুরি। টংগিবাড়ী তে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রিজাইডিং অফিসার দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। ডিএসইসির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ। ভালুকায় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র দাখিল। কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা। রেলওয়ের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার ও ঔষধের দাম কমানোর দাবিতে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটির নাগরিক বিক্ষোভ। নড়িয়ায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, ইউপি চেয়ারম্যান সহ আহত-৩ প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নড়িয়া’য় নির্বাচিতো হলেন যারা।

ভয়াল সিডরের ১৩ বছর” এখনো গুমরে কাঁদে শরণখোলার মানুষ

ভয়াল সিডরের ১৩ বছর” এখনো গুমরে কাঁদে শরণখোলার মানুষ

নইন আবু নাঈম, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
১৫ নভেম্বর ভয়াল সিডর দিবস। বছর ঘুরে এই দিনটি আসলেই গুমরে কাঁদে বাগেরহাটের শরণখোলাবাসী। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরের সৃষ্ট জলোচ্ছাসে শরণখোলা উপজেলাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে শরণখোলা উপজেলায় সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানী ঘটে। হাজার হাজার গবাদি পশু মারা যায়। অসংখ্য ঘরবাড়ি, গাছপালা বিধস্ত হয়। ধ্বসে যায় মাইলের পর মাইল ওয়াপদা ভেড়িবাধ। পরবর্তীতে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আধুনিক, টেকসই ও উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি ওঠে। পরবর্তীতে বাস্তবতা উপলদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জবাসীকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে একটি টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মানের আশ্বাস দেওয়ার পর কাজ শুরু হয়।

সিডরের বাস্তব রূপঃ
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সারাদিন ধরে অঝরে বৃষ্টি পড়ছিল। দিনের শেষে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। বিকেলে বৃষ্টি সহ ঝড়-বাতাস আরো একটু তীব্র হয়। সন্ধ্যা হতে না হতেই বাতাসের চাপে গাছপালা ভেঙ্গে রাস্তা এবং ঘর বাড়ির উপর পড়তে থাকে। রাত যতই বাড়ে ঝড়ো বাতাসের গতি ততই আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত জারি করে। উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং রেডক্রিসেন্ট এর উদ্যোগে শরণখোলায় মাইকিং করে সকল মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য জোড়ালো ভাবে নির্দেশ দেয়া হয়। কিছু মানুষ পরিবার সহ আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও বলেশ্বর নদীর পাড়ে বসবাসরত রায়েন্দা, খোন্তাকাটা, চালিতাবুনিয়া, গাবতলা, বগী, তাফালবাড়ী এবং সাউথখালীর গরীব পরিবারগুলো তখনো সিডরের ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারেনি।
তৎকালীন ওসি আঃ রহমান পুলিশ ফোর্স দিয়ে রায়েন্দা বাজার সদরে বলেশ্বর নদীর পাড়ে যেসকল পরিবারগুলো ছিল তাদেরকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসে। রাত যত গভীর হয় ততই রাক্ষসী বলেশ্বরের চেহারা পাল্টাতে শুরু করে। বিভিন্ন গনমাধ্যম ও আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, ভয়াল ঘূর্নিঝড় সিডরে প্রতি ঘন্টায় বাতাসের তীব্রতা থাকবে ২৪০-২৫০ কিলোমিটার বেগে। কিন্ত, বাস্তবচিত্রে দেখা যায়, বৈদ্যুতিক লোহার পোষ্টের বাতাসের গতি ধারণ ক্ষমতা ছিল ২৮০-৩০০ কিলোমিটার সেই বৈদ্যুতিক পোষ্টও ভেঙ্গে চুড়ে একাকার করে দিয়ে যায়।

স্বাভাবিক জোয়ারের পানি আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করে। রাস্তার আশেপাশের গাছপালা গুলো ঘর-বাড়ি ও রাস্তার উপর ভেঙ্গে পড়তে থাকে। তখনই শরণখোলার মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে। অনেক মানুষই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে বা নিরাপদস্থানে যেতে পারেনি। রাত ৯ টা বাজার সাথে সাথে সকল প্রকার মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখনও জোয়ারের পানি স্বাভাবিক ছিল। তারপরে সিডরের তান্ডব বাড়তে শুরু করে। চারদিকে ছোটাছুটি করতে থাকে মানুষ। রাত ১০টা বাজার সাথে সাথে সিডরের রক্তচক্ষু দেয়া যায়। আচমকা বৃষ্টিসহ বাতাসের তীব্রতা বেড়ে গেল এবং পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে মুহুর্তের মধ্যে ১০-১২ ফুট হয়ে গেল। তখন অসহায় মানুষগুলো নিরাপদে যাবার জন্য ঘর বাড়ি ছেড়ে বাহির হলেই ভয়াবহ বাতাস এবং পানির স্রোতে এক একজন এক এক দিকে চলে গেল। পানির উচ্চতা এবং স্রোত আরো বাড়তে বাড়তে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সহ সকল রাস্তা ভেঙ্গে মাঠ, ধানক্ষেতের সাথে মিশে গেল। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখা গেল সিডরের রক্ত চক্ষু। আকাশ জুড়ে অগ্নিকুন্ড বাতাসের সাথে মিশে সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেল। রাত ১২টার দিকে সিডরের তান্ডবলীলা একটু কমার পরে মানুষ বাহিরে নামতে শুরু করলো। মনে হলো বাতাস এবং পানিতে সারা এলাকা নদী ও সাগরে পরিণত হয়েছে।
২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘূর্ণিঝড় সিডর মূলত রাত ১০টা থেকে ১২ পর্যন্ত ২ ঘন্টা স্থায়ী ছিল। এই ২ ঘন্টার তান্ডবে শরণখোলার প্রায় সহস্রাধিক মানুষ মারা যায়। কিন্তু সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৭০৯ জনের প্রানহানী দেখানো হয়। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। তার সাথে সাথে গৃহপালিত পশু সহ কোন প্রকার কৃষি আবাদের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মাত্র ২ ঘন্টায় শরণখোলা সহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ সাউথখালী ইউনিয়নে গেলে তাফালবাড়ী, গাবতলা, চালিতাবুনিয়া, বগী, শরণখোলায় দেখা গেল মানুষতো দূরের কথা কোন ঘর বাড়িরই অস্তিত্ব নেই। মনে হলো, কে যেন ইচ্ছে করে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘরে চাপা পড়ে আছে বহু মানুষের লাশ। বিভিন্ন খাল, বিল, ডোবা ধান ক্ষেত ও গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলতে লাগলো মানুষের মরদেহের। সাউথখালী এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে ২০-২৫ টি লাশকে গণ কবর দেয়া শুরু করলো। কোন রকম কাপড় চোপড় জড়িয়ে বিনা জানাযায় লাশগুলো মাটি চাপা দেয়। সাউথখালী ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষের গণ কবর দেখা যায়। একই পরিবারের ৮-১০ জন মারা যায় সেই ভয়াবহ সিডরে। আবার কোন পরিবারের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। আস্তে আস্তে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো বিভিন্ন এনজিও সহ দাতা সংস্থা। সরকারীভাবেও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নেওয়াজ তালুকদার প্রাথমিকভাবে শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা করলেন। পরবর্তীতে আসতে শুরু করলে বিদেশী সাহায্য। বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল শরণখোলা উপজেলার সিডর বিধ্বস্ত মানুষকে। নতুন করে ঘর-বাড়ি দিতে থাকলো বিভিন্ন দাতা সংস্থাগুলো। ত্রাণ পাওয়ার জন্য ভিক্ষুকের মতো সারিবদ্ধ ভাবে দাড়েয়ে থাকলো সিডর বিধ্বস্ত জণগন। তবে, এখন পর্যন্ত ভয়াবহ সেই সিডরের ধ্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে উঠতে পারেনি শরণখোলাবাসী।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com