রাকিব হোসেন, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলায় এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ হত্যা মামলায় ০৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড প্রদান করলেন আদালত। শরীয়তপুর নারী নির্যাতন ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস সালাম খান এ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও উল্লেখ করা হয়েছে। একই মামলায় আরো ০৯ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত ।
আজ (২৫ শে নভেম্বর রোজ বুধবার) বেলা ১১ টার দিকে এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল বিচারক আব্দুস সালাম খান। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের লুৎফুর খবিরের ছেলে মোঃ মোরশেদ উকিল (৫৬), অন্য একজন ডামুড্যা উপজেলার চর ঘরোয়া গ্রামের খোরশেদ মোতাইতের ছেলে আব্দুল হক মোতাইত (৪২) ও দায়মি চরবয়রা গ্রামের মজিদ মোতাইতের ছেলে জাকির মোতাইত (৩৩)।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে গত বছর ২০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ০৯ টার দিকে ডামুড্যা উপজেলার চর বয়রা উকিলপাড়া গ্রামের উকিলপাড়ায় খোকন উকিলের স্ত্রী হাওয়া বেগম (৪০) পাশের বাড়িতে মোবাইল চার্জ দিতে যায়। ঠিক ওই রাতেই মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হওয়া বেগমকে একের পর এক দল বেঁধে ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করে। পরে মাথায় আঘাত ও তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে, পরবর্তীতে মজিদ চোকদারের দোচালা টিনের ঘরে মরা দেহ ফেলে যায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা। ধর্ষণ গণ ধর্ষণের ঘটনায় হওয়া বেগমের স্বামী বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ডামুড্যা থানা পুলিশ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছর ০৭ অক্টোবর সকল আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালএর পিপি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, এই বিষয়ে প্রথম একটি হত্যা মামলা হয়। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা গণধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরা ও হাওয়া বেগম কে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে হাওয়া বেগম ধর্ষণের কথা প্রকাশ করে দিবে বলে আসামিরা পরবর্তীতে হাওয়া বেগম কে হত্যা করে। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায়ে অন্য আসামিদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ রয়েছে। ১২ জন আসামীর সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আদালত ০৩ জনকে মত্যুদণ্ড প্রধান করেন ও বাকী ০৯ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত। আদালতের এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
অপরদিকে আসামীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল আউয়াল সহ অন্যান্য আইনজীবীরা জানান, তারা এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply