আনোয়ার হোসেনঃ বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ভোল্ট ভেঙ্গে প্রায় ২০ কেজি স্বর্ণ চুরি মামলায় আটক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ইতিপূর্বে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অথবা অন্য কেউ নকল চাবি তৈরি করে ওই স্বর্ণ চুরি করতে পারে মনে করে জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন।গতকাল বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শম্পা বসু আসামির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। আসামি শাহিবুল রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বাঁধুলী গ্রামের খালপাড়ার মৃত জালাল সরদারের ছেলে।
শাহিবুল সরদার জানিয়েছেন, তিনি বেনাপোল কাস্টমস হাউজের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন। ওই গোডাউনের বিভিন্ন ভোল্টে স্বর্ণ ও বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষিত ছিল। ২ মাস আগে তিনি পূর্বের কর্মকর্তার কাছ থেকে গোডাউনের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন। এসময় কাগজপত্র অনুযায়ী ভোল্টের মালামাল মিলিয়ে নিয়েছিলেন। পূর্বের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ন্যায় তিনিও এ গোডাউনের চাবি বাড়িতে নিয়ে রাখতেন। তবে কখন কারা চাবি নকল করেছে তা তিনি জানেন না।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত বছরের ৭ নভেম্বরের রাত ৮ টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যেকোনো সময় বেনাপোল কাস্টমস হাউজের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের তালা ভেঙ্গে এবং ভোল্টের তালা খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি তেতাল্লিশ লাখ ১৭ হাজার ৩৬২ টাকা। ওই ভোল্টের চাবি শাহিবুলের কাছেই থাকতো। এছাড়া গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিপত্র ছিল। সেগুলো অক্ষত ছিলো। ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিলো। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। এঘটনায় কর্তৃপক্ষ গোডাউনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর পুলিশ তাকে এই মামলায় আটক করে। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক হাসান ইমাম গত ৬ ডিসেম্বর আটক শাহিবুলের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন আদালতে। আদালত তাকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। কিন্তু একদিন রিমান্ডে থাকার পরই শাহিবুল আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply