দুসস ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জ শহরে নির্মিত শেখ রাসেল পার্ক নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের সর্ব স্থরের জনসাধারন। এরই মাঝে এই পার্কের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং মামলা মোকদ্দমার খবর প্রত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর ফুঁসে উঠেছে গোটা নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ। বিশেষ করে বৃহত্তর দেওভোগ বাবুরাইল এবং আশাপাশের এলাকাগুলোর জনসাধারন এরই মাঝে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন। তারা মনে করেন শহরের এই শেখ রাসেল পার্ক এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইমেজ বদলে দিয়েছে। এই পার্ক নির্মান হওয়ায় গোটা নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ বুক ভরে নিশ্বাস নেয়ার স্থান খুঁজে পেয়েছে। অথচ ষড়যন্ত্রকারী উম্মাদরা আবারও ক্ষেপা ষাড়ের মতো আচরন শুরু করেছে, যা কিনা শহরবাসীর ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে দিতে পারে বলে তারা মনে করেন। এরই মাঝে অনেকে মন্তব্য করেছেন কেউ যদি শেখ রাসেল পার্কে হাত দেয়ার চেষ্ঠা করেন তাহলে সেই হাত নিয়ে তিনি আর বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন না। পরিস্থিতি হঠাৎই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। গতকাল সারাদিন কি হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে বিক্ষুব্দ মানুষ সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করেছেন। মেয়র আইভী সকাল থেকে সিটি করপোরেশনে ছিলেন না বলে জানা গেছে। তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের উদ্বিগ্ন সাধারন মানুষ সিটি করপোরেশনে ছুটে গিয়েছেন। তারা যেকোনো মূল্যে এই পার্ক রক্ষা করার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেছেন। আর দেওভোগ বাবুরাইলবাসীতো মনে করেন এই পার্ক নির্মান হওয়ার কারনে তাদের এলাকার মর্যাদা বহুগুন বেড়ে গেছে। গোটা এলাকা একটি বাগানে পরিনত হয়েছে। তাই তাদের শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও তারা ষড়যন্ত্রকারীদের বিষ দাত ভেঙ্গে দিতে বদ্ধপরিকর। এদিকে গতকাল এ বিষয়ে কথা হয় শহরের পাক্কা রোড এলাকার ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, রেলওয়ে কাদের ইশারায় শেখ রাসেল পার্কের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আমরা সেটা জানি। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা আগেও ষড়যন্ত্র করে কিছুই করতে পারে নাই। এবারও পারবে না। এবারতো আমরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। তিনি বলেন ষড়যন্ত্রকারীদের কালো হাত বেঙ্গে দিতে হাজার হাজার মানুষ প্রস্তুত রয়েছে। আগে যখন পার্ক নির্মান শুরু করা হয়েছিলো তখনও ঠিকাদারকে গ্রেফতার করে বাধা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা সফল হয় নাই। আর এখনতো এই পার্কের সুফল ভোগ করছে গোটা নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ। এখন সফল হবে কি করে? আমরা ওদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে প্রস্তুত রয়েছি। কারন এইপার্কের সাথে আমাদের আস্তিত্ব জরিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন যারা পার্কের জায়গা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রী করে এখানে বড় বড় ইটপাথরের ভবন বানাতে চেযেছিলেন এবং নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে চেয়েছিলেন তারাই রেলওয়ের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আবারও এই জায়গা দখল করতে চাইছে। কিন্তু আমরা প্রয়োজনে জীবন দেবো তবু এই পার্কে কাউকে হাত লাগাতে দেবো না। এদিকে এ বিষয়ে সাংবাদিক ইমামুল হাসান সপন বলেন, প্রথমত এই পার্কটি বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমোদনক্রমে নামকরন করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল পার্ক’। ফলে বিষয়টি জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। শুধু প্রধানমন্ত্রী জানেনই না বরং মেয়র আইভী যে এই পার্কটি নির্মান করায় খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সরকারও প্রশংসিত হচ্ছে সেটাও জানেন প্রধানমন্ত্রী। তাই এ সময়ে এসে নতুন করে এই পার্কের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে বলে আমরা মনে করি না। কারন এটা এখন নারায়ণগঞ্জের জনগনের সম্পদে পরিনত হয়েছে। এর সুফল ভোগ করছে নারায়ণগঞ্জের সর্ব স্থরের মানুষ। তাই আমরা মনে করি ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যার্থ হবে। তিনি আরো বলেন, ধরে নিলাম এই জায়গা রেলওয়ের জায়গা। কিন্তু জায়গাতো আমরা যারা দেওভোগে বাস করি তাদের পূর্ব পুরুষদের। রেলওয়ে এ্যাকোয়ার করেছিলো। কিন্তু বিগত একশ বছরেও এই জায়গা রেলওয়ে কোনো কাজে লাগায় নাই। বরং পার্ক নির্মানের আগে এলাকাটি বস্তি সহ নোংড়া এলকা হিসাবে পরিচিত ছিলো। কিন্তু পার্ক নির্মানের পর এই পার্ক গোটা নারায়ণগঞ্জ শহরের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। পাল্টে দিয়েছে এই শহরের ইমেজ। তাই যারা এই পার্কের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তারা এটা করছেন কেবল মাত্র মেয়রের প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে। কিন্তু এতে তাদের কোনো লাভ হবে বলে আমরা মনে করি না। তারা আগেও ব্যার্থ হয়েছেন এবারও ব্যার্থ হবেন। অপরদিকে এ বিষয়ে শহরের ২নং বাবুরাইলের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন সপন বলেন, মের আইভী এই পার্ক নির্মান করে নারায়ণগঞ্জবাসীর ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তাই মেয়রকে যারা হিংসা করেন তারাই নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বলে আমরা মনে করি। কিন্তু তারা এটা বুঝেন না যে পার্ক নির্মান করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরবাসীর স্বার্থে। এতে মেয়রের বা তার পরিবারের কারো ব্যাক্তিগত কোনো লাভালাভ নেই। তিনিতো এখানে তার নিজের জন্য কোনো বাড়িঘর নির্মান করেন নাই। তিনি যা করেছেন তা করেছেন এই শহরবাসীর স্বার্থেই। এই পার্ক নির্মান হওয়ার পর থেকে আমরা বুক ভরে নিশ^াস নিতে পারছি। সারা শহর থেকে সারা দিনই পার্কে মানুষ আসছেন একটি বিশ্রাম নিতে। আর বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ততো বিপুল সংখ্যক মানুষের ভির লেগে থাকে। তার পরেও কেনো এই ষড়যন্ত্র। তিনি আরো বলেন, জায়গা যদি রেলওয়েরও হয়ে থাকে সেটাতো জনগনেরই সম্পদ। রেলওয়েতো এই দেশের জনগনের জন্যই। আর এখানেতো রেলওয়ে কিছু করছিলো না। বরং মহামূল্যবান এই জায়গা চোর-ছেচ্চর দূর্নীতিবাজদের দখলে ছিলো। সেটা উদ্ধার করে জনগনের সম্পদে পরিনত করা হয়েছে। তাই এই সম্পদ এখন আর কোনো রেলওয়ে বা সিটি করপোরেশনের নয়। বরং এটা এখন জনগনের সম্পদ। তাই আমরা মনে করি এটা নিয়ে আর নোংড়ামি করে কোনো লাভ হবে না। জনগন এরই মাঝে এই পার্ককে তাদের নিজের পার্ক হিসাবে গ্রহন করেছে। তাই এই পার্ক রক্ষার দায়িত্ব এখন নারায়ণগঞ্জের জনগনের। এদিকে এ বিষয়ে আলোকিত কাশীপুর নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল ইসলাম খাঁ ফেসবুকে লিখেছেন, রেলওয়ে আমাদের কি সেবা দিয়েছে এতো বছর ধরে? যখন একটা ভালো কাজ হয় তখন এসে মাতব্বরী শুরু হয়। জায়গা কার সেটা দেখার দরকার নাই। সেটা নারায়ণগঞ্জবাসীর উপকারে আসলো কিনা সেটাই দেখার বিষয়। মূলত এভাবেই গতকাল বিক্ষুব্দ নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply