মোঃ শাহিন আলম পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে জোয়ারগরবদি মৌজায় ১৬ভূমিহীন কার্ড হোল্ডারের নামে বন্দোবস্তের ১৭একজ খাস জমি দখলে নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে অবৈধ দখলদারের লাঠিয়াল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। বন্দোবস্তের অন্তত: ৫একর জমির রোপা আমনের ক্ষেত নস্ট করেছে ওই লাঠিয়াল চক্রের সন্ত্রাসীরা।
গতশনিবার (১৭ সেপ্টেম্বের) সকালে সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার লোহালিয়া নদীর ওপাড়ে জোয়ারগরবদি মৌজায় সরকারি বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ভূমিহীন পবিরারের অন্তত: ৫একর জমির রোপা আমন ক্ষেতের চারা উপড়ে ফেলেছে সন্যাসীকান্দা এলাকার অবৈধ দখলদার চক্রের লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্যরা।
ভুক্তভোগী চরগরবদি গ্রামের বন্দোবস্তপ্রাপ্ত খলিল নেঘাবান, মোতাহার সিকদার, রাজ্জাক মীরসহ ১৬ ভূমিহীন কৃষক পরিবারের অভিযোগ, পাশর্^বর্তি বাউফল উপজেলার সন্যাসীকান্দা গ্রামের অবৈধ দখলদার হাসেম খা, জলিল মৃধা, আনোয়ার সিকদার, আমির হাওলাদার, সজল পাইন, হরিদাস সোমাদ্দারের নেতৃত্বে ৩০/৩৫জনের একটি সশস্ত্র লাঠিয়াল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ভূমিহীন পরিবারগুলোর চাষাবাদকৃত রোপা আমনের ক্ষেতে তান্ডব চালিয়ে অন্তত: ৫একর জমির আমনের চারা উপড়ে ফেলে নস্ট করেছে। এঘটনায় চরগরবদি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ভূমিহীনদের পক্ষে মো. খলিলুর রহমান নেগাবান বাদি হয়ে ওই দিন রাতে প্রতিপক্ষের ২৩নামীয় আসামীর বিরুদ্ধে দুমকি থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০০৪/৫ সালে উপজেলার জোয়ারগরবদি মৌজায় ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ১৭.১০একর জমি খলিলুর রহমান নেগাবানসহ তাদের ১৬জন ভূমিহীন গরিব কৃষককে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয় সরকার। জমির অবস্থান লোহালিয়া নদীর বিপরীত তীরে হওয়ায় ওপারের উল্লেখিত অবৈধ দখলদাররা শুরু থেকে বাঁধা প্রদান করছিল। বেশ কয়েকদফা হামলা, মামলার পরে বিগত ২০১২সালে আন্ত:উপজেলা সীমানা বিরোধ নিস্পত্তির পর ভূমিহীন কার্ডহোল্ডারদের দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। এর পর থেকেই ওই ১৬ ভূমিহীন গরিব কৃষক পরিবারগুলো তাদের ১৭.১০একর জমি চাষাবাদ করে আসছিল।
গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে পূর্ব শক্রুতার জেরে উল্লেখিত অবৈধদখলদারদের লাঠিয়াল বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই চরে হামলা চালিয়ে ভূমিহীন কৃষকদের অন্তত: ৫একর জমির রোপা আমনের বীজ উপড়ে নস্ট করে ফেলে। অবৈধ দখলদার লাঠিয়াল বাহিনীর সন্ত্রাসী তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমিহীন পরিবারগুলো এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। হামলা, মিথ্যে সাজানো মামলা-মকর্দ্দমায় জড়িয়ে হয়রানি ও তাদের বন্দোবস্তপ্রাপ্ত জমি থেকে উচ্ছেদ আতংকে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি বাউফলের এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় থাকা অবৈধ দখলদার লাঠিয়াল সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলা, মামলা, খুন জখমের হুমকি ধমকিতে পরিবারগুলো চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। তাই তারা জমির দখল বহাল থাকা ও অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে আইনের আশ্রয় দাবি করেছেন।
সন্যাসীকান্দা গ্রামের বাসিন্দা হরিদাস সমাদ্দার ও স্কুল শিক্ষক সজল পাইন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বন্দোবস্তের জমিতে তারা কেউ যায়নি। ওই চরে তাদের (সজল পাইনদের) রেকর্ডি সম্পত্তি তরমুজ চাষীদের লিজ দিয়েছেন-যা এখনও চাষাবাদ হয়নি, খালি পড়ে আছে। ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্তের জমির রোপনকৃত আমনের চাড়া উপড়ানোর খবর তেনারা জানেন না। অন্য কেউ উপড়েছে কিনা তাও তারা বলতে পারেন না।
অভিযোগের তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই শওকত হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শণে গিয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। তবে ক্ষেতের রোপা আমনের বীজ উপড়ানোর ঘটনায় জড়িতের নাম প্রকাশে তিনি অনিহা প্রকাশ করেন।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুস সালাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply