নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ‘আজকের তরুণদের দেখে আমি গর্বিত। তারা সরকারের কাছে হাত না পেতে দেশ গড়তে তারা নিজেরাই আজ এগিয়ে এসেছে।’ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে আয়োজিত ‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ আলোচনা অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরাই পারি, আমাদের তরুণরাই পারে। তারা নিজ উদ্যোগে দেশকে এবং দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।’
অনুষ্ঠানে তরুণদের কাছ থেকে দেশকে তাদের ভাবনার কথা শোনেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সময় তরুণদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
ইয়াং বাংলার বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা একটু প্রশিক্ষণ পেলেই এগিয়ে যাবে। এখনো বিশ্বে রোবটিক্স, আইওটি, এআই এবং এ ধরণের সেক্টরগুলোর বিশেষ কোন নেতৃত্ব নেই। আমাদের তরুণরা সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে এই ক্ষেত্রগুলোতে নেতৃত্ব দেবে।
বর্তমানে কোন উন্নয়ন কার্যক্রম এককভাবে শহর কেন্দ্রিক নয় জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ফাইবার অপটিকাল লাইন পৌঁছে দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার ইউনিয়নে তা পৌঁছে গেছে। সেই সঙ্গে স্টার্টআপ তৈরি, ইনোভেশন এবং উদ্যোক্তা তৈরির জন্য নেয়া সরকারি প্রশিক্ষণগুলো কিছুদিনের মধ্যেই সারা দেশ থেকে আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সকল স্কুলে একটি করে ওয়াই ফাই জোন করার বিষয়েও সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এ সময় সজীব ওয়াজেদ জয় বর্তমান তরুণদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার সন্তানকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে শেখান। ২৫ বছর বয়সে কেউ বাচ্চা বা শিশু থাকে না। অথচ আমার দেশে ২৫ বছর বয়সী একজন নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলতে পারে না। তাহলে ভবিষ্যতে তারা নিজ পায়ে কবে দাঁড়াবে! তাদেরকে চাকরির কথা না বলে নিজ উদ্যোগে কাজ করতে বলুন। তাদের ভুল করতে দিন। কেননা নিজের ভুল থেকে যে শিক্ষা হয়, তা আমরা সহজে ভুলি না।
এ সময় উপস্থিত তরুণদের গ্রহণ করা বেশ কিছু উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, শুধু বিসিএস-এর চিন্তা করা স্বার্থপরের মত এক চিন্তা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিস। নিজের পরিবার নিয়ে ভালো থাকা। তারপর পেনশন। কিন্তু আপনি সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা থেকে আরো অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আপনার আয় থেকে আয়কর লাভ করে রাষ্ট্র। আপনার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের আয় থেকে রাষ্ট্র আয় পাবে। রাষ্ট্র সেই আয় দেশের জনসাধারণের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। তাই নিজ উদ্যোগে কাজ করুন। আপনারা নিজেরা কোম্পানি খুলুন।
অনুষ্ঠানে ইয়াং বাংলার নেয়া ‘ভিশন ২০২১ ইন্টার্নশিপ’ সম্পর্কে আলোচনায় তরুণদের দেয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা সকল মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ চালু করতে চাই। কিন্তু যে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব এক্টিভ, তারা দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকিরা হয়ত শুরু করবে। তবে জেলা পর্যায়ে ডিসি অফিসে ইন্টার্নদের কাজে লাগানোর প্রস্তাবটি খুবই ভালো। আমরা এই প্রস্তাবের নিরিখে কাজ করব।
উপস্থিত সকল তরুণদের উদ্দেশ্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আজ ইয়াং বাংলার মাধ্যমে যে উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে তা কিন্তু সরকারি উদ্যোগ নয়। মাথায় রাখবেন, ইয়াং বাংলা সিআরআই-এর
প্রতিষ্ঠান। আর সিআরআই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা। সুতরাং আপনারা ইয়াং বাংলার মাধ্যমে যে দেশ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন তা একমাত্র আওয়ামী লীগের কারণে সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফারহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ ও ২০১৭ সালের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জহির ইকবাল নান্নু। এ ছাড়াও অংশগ্রহণকারী হিসেবে ছিলেন বিগত তিনবার জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী, ইয়াং বাংলার জেলা কো-অর্ডিনেটর, ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর ও স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপের অংশগ্রহণকারীরা।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply