নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমান।
সদ্য সমাপ্ত হওয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে ড্র করার পর মঙ্গলবার লটারিতে জয়ী হয়ে তিনি এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেলে জিজ্ঞাসা করতাম, এভাবে কি আওয়ামী লীগ চলতে পারে? জীবনের ৫০টি বছর বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার জন্য আওয়ামী লীগ করছি, ২০০১ সালের পর ৫ বছর যাদের জন্য বাড়িতে থাকতে পারিনি, হামলা-মামলার শিকার হয়েছি, সেই বিএনপির সন্ত্রাসীদের যখন মেয়র আইভীর মতো নেত্রী শেল্টার দিয়ে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসে- তখন খুব ভয় হয় শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগের জন্য।
এর আগে গত সোমবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে ১৫টি করে সমান ভোট পেয়েছিলেন মজিবুর রহমান ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমানসহ প্রার্থীদের উপস্থিতিতে ওই লটারি সম্পন্ন হয়। একজন স্কুলছাত্রী ওই লটারি তুলেন। সেখানে মজিবুর রহমানের নাম উঠলে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
জয়ী হয়ে মজিবুর রহমান বলেন, আমি অনেক আশা করেছিলাম মেয়র আইভীর প্রতি। তার জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছি তার সিটি নির্বাচনে। তাকে আমি ভোট দিছি, আমার এলাকা থেকে তাকে বিপুল ভোটে জয়ী করিয়েছি। তার নির্বাচনে আমি অনেক অর্থ ব্যয় করেছি। তারপরও তিনি আমার সামনে দিয়ে বিএনপির কাউন্সিলর যারা বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, তাদের নিয়ে ভোট দিতে এসেছেন। এতে আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি, অনেক কষ্ট পেয়েছি। ৫২ বছরের রাজনীতিতে আমি এমন কষ্ট কখনো পায়নি। আমি মেয়র মহোদয়কে বলব, আপনি দয়া করে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইবেন।
মজিবুর রহমান আরও বলেন, কিছুদিন আগে বিএনপির কর্মসূচিতে মহাসড়কে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকার বাদী মামলায় এই কাউন্সিলর ইকবাল গ্রেফতার হয়েছিল এবং মেয়র আইভী বলেছিলেন- ইকবাল ভালো ছেলে এবং তিনি বিশ্বাস করেন না ইকবাল এমন কাজ করতে পারেন। বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস ও কাউন্সিলর ইকবালের কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে আমরা এলাকায় থাকতে পারিনি, আমাদের বাড়িঘর লুট হয়েছে। সেই গিয়াসের ছেলে কাউন্সিলর সাদরিল ও কাউন্সিলর ইকবালকে রীতিমতো শেল্টার দিয়ে তিনি (মেয়র আইভী) ভোট কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন এবং ভোট শেষে নিয়ে গেছেন। আমরা যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ করি তাদের বুকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এই ভেবে যে, কার জন্য আমরা সিটি নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।
উল্লেখ্য, সোমবার নগরীর প্রিপারেটরি স্কুলে জেলা পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে দুপুরের দিকে ভোট দিতে আসেন মেয়র আইভী। এ সময় তার সঙ্গে একত্রে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেন সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে খুন, নাশকতাসহ একাধিক মামলার আসামি কাউন্সিলর (৫নং ওয়ার্ড) গোলাম মোহাম্মদ সাদরিল ও নাশকতাসহ বহু মামলার আসামি বিএনপি নেতা কাউন্সিলর (২নং ওয়ার্ড) ইকবাল হোসেন, পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসান আহমেদের স্ত্রী ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর আফরোজা বিভাসহ কয়েকজন কাউন্সিলর। মেয়র আইভীর সঙ্গে প্রবেশ করা ওই কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে আবার মেয়রের সঙ্গেই বের হয়ে চলে যান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply