দুসস ডেস্কঃ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশীদের ফ্রিডম পার্টির ‘কুড়াল’ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন চাঁদপুর জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- অমুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করার বিনিময়ে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে আরও অনেক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অথচ তিনি এখন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ থেকে ওয়াদুদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হানিফ পাটোয়ারী ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহীদুল আলম রব।
অভিযোগ রয়েছে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ওয়াদুদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সংখ্যালঘুদের বাড়ি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তার যাবজ্জীবন জেল-জরিমানা হয়। প্রকাশ্য আদালতে বিচারককে গুলি করার চেষ্টার অপরাধে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়।
ওয়াদুদের ছোট ভাই এমএ কুদ্দুস চাঁদপুরের মতলব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক ভাই এমএ মালেক মতলবের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সদস্য। পুরো পরিবারটিই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছে। অথচ এক সময় তারা খুনি ফারুক-রশীদের সহযোগী ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমতো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সহযোগী ওয়াদুদ-কুদ্দুস-মালেকদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে হানিফ পাটোয়ারী ও শহীদুল আলম রব আরও বলেন, ওয়াদুদ স্ব-ঘোষিত লেফটেন্যান্ট। এছাড়া যুদ্ধাকালীন আঞ্চলিক অধিনায়ক এবং ‘কে’ ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে তিনি নিজেকে দাবি করে থাকেন। এসব পদবি ব্যবহার করে অসংখ্য অমুক্তিযোদ্ধাকে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে বরাদ্দ জমি নিজ নামে আত্মসাৎ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসী হিসেবে রাজনৈতিক সমাবেশে সন্ত্রাস করেছেন। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিবেদনেও এগুলো উল্লেখ রয়েছে। এরশাদ আমলে ফ্রিডম পার্টির কুড়াল প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছিলেন ওয়াদুদ। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মামলা হয় (মামলা নং-১৬)। এ মামলায় তার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।
১৯৮২ সালে মতলব থানার ঋষিকান্দি গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর লুটপাট করার অপরাধে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা হয়। ১৯৮৮ সালে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ ভাঙার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ওয়াদুদের ১২০ দিনের এবং তার ছোট ভাই এমএ কুদ্দুসের ৯০ দিনের আটকাদেশ দেয়া হয়।
ওয়াপদার জমি দখলের অভিযোগে ১৯৯৪ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় (মামলা নং ২৪/১৯৯৪, ১১-০৯-৯৪। ১৯৯৬ সালে ফ্রিডম পার্টির সদস্য ওয়াদুদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম শফিউল্লাহ মামলা করেন। ২০১৪ তার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারককে গুলি করার চেষ্টা করেন ওয়াদুদ। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হয় (মামলা নম্বর ১০/২৩৮, ০১/০৬/২০১৪)। এমনকি তার বিরুদ্ধে জেলার ইতিহাস বিকৃতি করার অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে তা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে শুনানি চলছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply