দুসস ডেস্কঃ কাফরুল থানার পশ্চিম বাইশটেকির ১৩/বি, এভি: ০১, ৬নং বাসার মৃত আব্দুস সামাদের পুত্র আরিফুল ইসলাম বাবু ওরুপে ‘ডিএসপি বাবু’ নামটি শুনে তাকে কোন পুলিশ কর্মকর্তা মনে হলেও আসলে তিনি কিন্তু তা নন। গ্রামের বাড়ি তার মুন্সীগঞ্জ। রাজধানীর কাফরুল বাসীর আতঙ্ক, ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজ, খুনি, মাদক চোরাকারবারী, ভূমিদস্যু ও পুলিশের তালিকাভূক্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী তিনি।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার সিন্ডিকেটের বেশ কিছু সহোচর ইতিমধ্যে ক্রসফায়ারে নিহত হলেও বিভিন্ন থানার হত্যা, নারী-শিশু নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অসহায়ের জমি দখল, অস্ত্র ও অপহরণসহ প্রায় ৩০/৩৫টি মামলা ও জিডির বোঝা মাথায় নিয়ে পুলিশের খাতায় তিনি পলাতকের তালিকায় থাকলেও বাস্তব চিত্র আলাদা। স্থানীয় যুবলীগের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে কাফরুল থানা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। অথচ তিনি নিজেও পুলিশের ক্রসফায়ারের তালিকা ভুক্ত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হলেও সবাইকে অবাক করে প্রকাশ্যেই চালিয়ে যাচ্ছেন ভয়ঙ্কর সব অপরাধমূলক কার্যক্রম।
তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে অনুসুন্ধান করতে গিয়ে একে একে বেড়িয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ও চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তার সকল অপরাধের ভয়ংকর তথ্যচিত্রগুলি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে।
ডিএসপি বাবুর ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে গুরুতর যে অভিযোগটি রয়েছে তা হচ্ছে মানুষের জমি দখল করা। ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে সন্ত্রাসী কায়দায় সে অন্যের জমি দখল করে আসছে।
পলাশনগর ৯৬ দাগে গোলাম আজম স্বপনের ৮শতাংশ, মসিউর রহমান, রতন মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, আবুল হোসেন গংদের জায়গা দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে ডিএসপি বাবু সাধারন মানুষের জায়গা দখলের অভিনব পথ অবলম্ভন করে। প্রশাসন এখানে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে জানান ভূক্তভোগীরা।
পুলিশের উপর মহলের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছে না ভূক্তভোগীরা। এছাড়াও ডিএসপি বাবুর বিরুদ্ধে রয়েছে আরো ১ডজনের বেশি অভিযোগ। মিরপুর ১৩ নাম্বার বিদ্যুৎ অফিসের সাথে আলাউদ্দিন, তাকবীবের ভাড়াটিয়া গুন্ডা হিসেবে মাটি ভরাটের কাজ করেন ডিএসপি বাবু। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় আলাউদ্দিন ও তাকবীরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের জায়গা দখল করে নেন ডিএসপি বাবু। তাকবীর সরকারি চাকুরী করার সুবাদে এই যাত্রায় রক্ষা পায়
পরবর্তীতে ২০১৩ সালে পলাশনগরের বাসিন্দা অহিদ মোল্লা ও আব্বাস উদ্দিন মোল্লাগংদের ভাড়াটিয়া গুন্ডা হিসেবে যায় ডিএসপি বাবু। তাদের উদ্দেশ্য জমি ভরাট করে দখল করে নেয়া। কিন্তু বিধিবাম সেখানে গিয়ে তাদের ১২বিঘা জমি দখল করে নেন ডিএসপি বাবু। এই বিষয়ে অহিদ মোল্লার স্ত্রী বাহারুন্নেসা এবং আব্বাস উদ্দিনের ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেন। এই বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে।
মিরপুর ১৩ নাম্বার ওপেক্স গার্মেন্টসের পেছনে আউয়াল নামের এক ব্যবসায়ীর ৯বিঘা জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে ডিএসপি বাবুর বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ী আউয়াল বাদী হয়ে এই বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যা এখনো চলমান রয়েছে
পলাশনগরের গরুর ফার্ম ব্যবসায়ী কাজী ফয়সাল আহাম্মদ। গত ৭বছর ধরে তিনি পলাশনগরের ৯২দাগে হোল্ডিং নং ৯১/৩-এ গরুর ফার্ম পরিচালনা করে আসছেন। গত ২০.০৫.১৮ইং তারিখে বাবুসহ তার সঙ্গীয় ফোর্স গিয়ে কেয়ারটেকার/ ম্যানেজারদের হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করেন এবং তাকে মাসিক মাসোহারা দেয়ার দাবি জানান। এতে মালিক ফয়সাল আহাম্মদ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। যার নং ১৫৬২। তারিখ ২০.০৫.২০১৮। ২১তারিখ সে আবার ১০/১২’র সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ফার্মে পুনরায় হামলা ও লুটপাট চালায়। কেয়ারটেকার ও ম্যানেজারকে মারধর করে নগদ অর্থ লুট করেন এবং জায়গা খালি করে না দিলে মালিককে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এতে মালিক ফয়সাল আহাম্মদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। যার নং-৬৪, তারিখ ২২.০৫.২০১৮ই
মামলার সুবাদে বাবু ১বৎসর কোন ঝামেলা না করলেও হঠাৎ করে গত ২১.০৬.১৯ইং তারিখে নুরুন্নাহার নামে ১মহিলাকে সাথে করে এনে এই জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। এতে ব্যবসায়ী কাজী ফয়সাল জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পল্লবী থানায় জিডি করেন। যার নং-১৬০০, তাং: ২১.০৬.২০১৯ইং।
এভিনিউ-৫ এর মোস্তাক আহাম্মদের ২৯শতাংশ জায়গা দখল করে নেয় ডিএসপি বাবু। সে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে এই জায়গা অনত্রে বিক্রি করে দেয়। এতে মোস্তাক বাদী হয়ে ডিএসপি বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং-৩৫৪, তারিখ: ০৫.১০.১২
ডিএসপি বাবু ওরফে ভূমিদস্যু বাবুর এই সকল অপকর্মে সার্বক্ষনিক তাকে মদদ দিচ্ছে তার দেহরক্ষী খ্যাত নুরুন্নাহার। সেকশন ১০, বাসা: ০৮, ব্লক-বি, পল্লবী’র মৃত অহিদ মোল্লার ২ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে নুরুন্নাহার ৫ম। অহিদ মোল্লার মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ হিসেবে নুরুন্নাহার যে পরিমান সম্পদ পাওয়ার কথা তার থেকে বেশি সম্পত্তি নুরুন্নাহার বিক্রি করেন। তার সম্পদের পরিমান ৭৬৭ অযুতাংশ সম্পত্তি। কিন্তু তিনি ১১৫৮.১৬ অযুতাংশ সম্পত্তি বিক্রি করেন। ৩৯১.১৬ অযুতাংশ সম্পদ বেশি বিক্রি করেন।
এই বিষয়ে নুরুন্নাহারের মা মোসাস্মৎ বাহারুননেছা বেগম ১২ মে ২০১৪ইং যুগ্ন জেলা জজ, ঢাকা দ্বিতীয় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। প্রাপ্যতা না থাকা স্বত্তে¡ও অবশিষ্ট সম্পদ বিক্রি বেআইনি ও অবৈধ এই মর্মে ডিক্লারেশন প্রাপ্ত হন
ডিএসপি বাবু ওরফে ভূমিদস্যু বাবুর অপকর্মে এখানেই শেষ নয়! ভূমি দখল ছাড়াও তার আরেক ভয়ংকার নেশা মাদক আর জুয়া। সর্বনাশী জুয়া আর সর্বগ্রাসী মাদকের ভয়াল থাবায় তটস্থ রাজধানীর গোটা মিরপুর। গোটা মিরপুরের আতংক, পুলিশের তালিকাভুক্ত এই ডিএসপি বাবু ওরফে আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বেই মিরপুর -১৩ নম্বরের ইমান নগর, বাঁইশটেকি, ভাষানটেক, রুপনগর থানার দুয়ারীপাড়া, পল্লবী থানাধীন ১০ নম্বর সেকশনের তিন নম্বর রোডের একটি টিনশেড বাড়ী, ১৭ নম্বর রোডের ফকিরপট্টিস্থ কমিনিউটি পুলিশের অফিসের পাশের সাথী ক্লাবসহ এলাকার চিহ্নিত স্পটগুলোতে প্রতিরাতেই বসে কোটি কোটি টাকার জুয়া ও মাদকের জমজমাট আসর।
বিনিময়ে প্রতিদিন এই জুয়া আর মাদকের স্পটগুলো থেকে ডিএসপি বাবু প্রায় ১২ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করেন। মুসা নামে তার একজন একান্ত সহযোগীর মাধ্যমে এ টাকা সংগ্রহ করেন তিনি। তবে এ টাকা তিনি একাই ভোগ করেন তা নয়। তিনি এলাকার বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল ও স্থানীয় থানা-পুলিশকে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে দেদারসে এই জুয়া ও মাদকের অবৈধ কারবার চালিয়ে আসছেন বহুকাল ধরেই। প্রতিটি আসরের পরিচালকেরা ভিন্ন ভিন্ন হলেও নিয়ন্ত্রক ডিএসপি বাবু একা নিজেই।
এই জুয়া আর মাদকের আসরগুলোকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীদের নিয়মিত পদচারণা। ডিএসপি বাবু ওরফে আরিফুর রহমান নামে পুলিশের তালিকাভূক্ত ও চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত দিনে কাফরুল, পল্লবী, রুপনগর, ভাষানটেক থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক মামলায় যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের বেশির ভাগই বাবুর এই জুয়া ও মাদকের আসরের নিয়মিত ভোক্তা-ক্রেতা। কারন জুয়া খেলার সঙ্গে সমানতালে এই আসরগুলোতে চলে ইয়াবা বিকিকিনি ও সেবন। পুলিশের একটি গোয়েন্দা ইউনিটের করা গোপন একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ইমাননগর ও বাঁইশটেকির কয়েকটি বাড়িতে গুটি দিয়ে জুয়া খেলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া একই স্থানে রাত ৮টা থেকে ভোর পর্যন্ত তাস দিয়ে কাইট ও থ্রি কার্ড নামক পদ্ধতিতে জুয়া খেলা হয়। এসব স্পটে প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন কোটি টাকা নিয়ে জুয়া খেলায় অংশ নিয়ে থাকে।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, চোখের সামনে এমন অপকর্ম চললেও কিছু বলতে পারি না। কারণ পুলিশসহ প্রভাবশালীরাই এর সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কে কথা বলবে? এলাকার তরুণরা জুয়ার ফাঁদে পড়ে বিপথগামী হওয়ার পাশাপাশি চুরি, ছিনতাই ও রাহাজানীসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তবে পুলিশের ক্রসফায়ারের তালিকাভুক্ত হয়েও ডিএসপি বাবু কোন খুঁটির জোরে কাফরুল থানা এলাকাসহ মিরপুরে প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে দাপটের সাথে এতসব অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে? সকলের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, প্রশাসন কেনো তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারছে না? বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান এলাকাবাসী
অহিদ মোল্লা ও বাহারুন্নেসার মতোই তার কন্যা নুরুন্নাহার একজন ধুরন্ধর প্রতারক। কথিত আছে সে ডিএসপি বাবুর সমস্থ কাগজপত্রের যোগানদাতা। তাকে আইনের আওতায় আনতে পারলে বন্ধ হবে এই ত্রাস দখলের বাণিজ্য। এলাকাবাসী দ্রুত এই মক্ষীরানী খ্যাত নুরুন্নাহারকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। যাতে করে সাধারন মানুষ আর হয়রানির শিকার না হন। নুরুন্নাহার দ্বারা অত্যাচারিত দীর্ঘদিনের ভূক্তভোগী পলাশনগরবাসীর দাবি মক্ষীরাণী নরুন্নাহার একটি অভিশপ্ত পরিবারের অভিশপ্ত নাম। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে মক্ষীরাণী নুরুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার পায়নি তারা। সাধারন জনগনের দাবি এই নুরুন্নাহার কি এতোই শক্তিশালী! আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি তাকে ভয় পায়? যদি তা না হয় তাহলে কেন তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা দ্রুত এর প্রতিকার চান
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম শিকদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলেও পরে বলেন, ‘ভাই আমি একটি মিটিংয়ে আছি। এখন কথা বলতে পারবোনা। এই বিষয়ে পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, গত ১৫.১০.২০১৯ ইং তারিখে পলাশনগরের ৯৬ দাগের জমির বিষয় নিয়ে ডিএসপি বাবুর পক্ষে নুরুন্নাহার কোন দালিলিক কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। ৩০/১২/২০১৬ইং সনের আমোক্তার নামা ১) গোলাম আজম স্বপনগংদের সি.এস/এস.এ থেকে শুরু করে মহানগরের সমস্থ কাগজপত্র সঠিক পাওয়া যায়। ২০১২ সাল থেকে এই জায়গায় মাটি ভরাট করে ৮টি টিনসেড ঘর নির্মান করে ভোগ দখল করে আসছেন। এই জমিতে ডিএসপি বাবু ও নুরুন্নাহার জবর-দখল করার পায়তারা করছে যাহা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি তাদেরকে গণধোলাই দিয়ে থানায় সোর্পদ করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বলেন, ‘এই বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই, আমি বিষয়টি যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।
দুডে-
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply