ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সময় আছে এখনও নিরাপদে প্রস্থান করতে পারেন। চলে যান পদত্যাগ করে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। নতুন একটা নির্বাচন কমিশন করে, নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে এটাই জনগণের দাবি।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়কারী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র রক্ষা ও এক দফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির প্রতিটি সমাবেশে মানুষের ঢল নামছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতন মানুষ আসছে। আমরা সচেতনভাবে এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের সংঘাতপূর্ণ কর্মসূচি দেইনি। আমরা আশা করবো, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। এর মধ্যেই তারা পদত্যাগ করবেন এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন। দেশকে একটা সংকটের হাত থেকে উদ্ধার করবেন। এটা যে শুধু বিএনপি চায় এমনটা না। এটা আন্তর্জাতিক বিশ্বও চায়। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা সবাই চায়।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঠিক করার জন্য এখনও সংগ্রাম করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে পারবো কি পারবো না তার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় দেশটা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এটা একজনেরই সম্পত্তি। তাদের বক্তব্যে প্রকাশ পায়, আরে এটাতো আমার সম্পত্তি, তুমি এখানে কোথা থেকে এলে?
ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা যে নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলছেন, এটা কি জনগণের কথা? এটা জনগণের কথা নয়। কারণ জনগণের ভাষা আপনারা কোনোদিন বুঝতে চাননি।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের দেশে যে চারটা নির্বাচন হয়েছে সেই ভোট সুষ্ঠু হয়েছে বলে দেশের মানুষ মনে করে। তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি, তাতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটা বিষয়ের প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যেখানে একটা রাজনৈতিক দল অপর আরেক রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না। যে কারণে স্বাধীনতার এত বছর পরও আমাদের ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। এই লড়াই তো ভারতে হয় না। এমনকি পাকিস্তানও নির্বাচনের বিষয়ে একটা সিস্টেম লক করে ফেলেছে– তাদের ওখানে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে। কারণ তাদের ওখানে কেয়ারটেকারের মতো সিস্টেম আছে। নেপালও তাদের নির্বাচন ব্যবস্থা সুষ্ঠু করেছে।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারলে আমরা কেন পারছি না? আমরা পারছি না শুধু আওয়ামী লীগের কারণে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘প্রতিটা রাজনৈতিক দলই বলছে, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাহলে কেন তারা জোর করে বসে আছেন? কারণ তারা জানেন, নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয়, তাহলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার, আওয়ামী লীগের কোথাও কোনও অস্তিত্ব নাই। তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এখনও সময় আছে, আপনারা দয়া করে পদত্যাগ করেন।’
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন, জাগপার সভাপতি জনাব খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগ-ডি.এল’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, জাগপার ডাঃ আওলাদ হোসেন শিল্পী, এপিপি’র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ক্বারী আবু তাহের (এনডিপি), বাংলাদেশ-ন্যাপ এর সভাপতি এম এন শাওন সাদিকী।
বাবু খোকন চন্দ্র দাস বলেন, ৯০’র সবদলীয় ছাত্র ঐক্যের অন্যতম রূপকার জনাব সাইফুদ্দিন মনির শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং ২০ অক্টোবর শুক্রবার হতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব ৫ দিনব্যাপি শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে দেশ বাসীকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানান।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply