বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক গতকাল ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ ডেকে নৈরাজ্য সৃষ্টি, হত্যা ও হরতাল আহ্বানের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন Ñ
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে পাওয়া খবরে দেখা যাচ্ছে যে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে বলে বারবার ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও গতকাল কর্মীদের ওপর বিএনপি নেতাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এ কারণেই তারা গা বাঁচিয়ে তড়িঘড়ি একটা হরতাল আহ্বান করে মঞ্চ ত্যাগ করেন বলে প্রতীয়মান হয়। কর্মীদের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ না রেখে তাদের উদ্দেশ্যে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেয়া বিএনপি নেতৃবৃন্দের মোটেও উচিত হয়নি। বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, পুলিশকে আক্রমণ করা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পুরনো অভ্যাস তারা আজ আবার প্রদর্শন করেছে। এর ফলে তারা পুলিশের উপর নির্মম আক্রমণ করেছে, দায়িত্বরত একজন পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা করা হয়েছে, পুলিশ হাসপাতাল ও এম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু গাড়ি ও বাস পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে নির্মমভাবে প্রহার করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আমরা এই হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও চরম নৈরাজ্য সৃষ্টির তীব্র নিন্দা করছি।
তবে সাম্প্রতিক ঘটনা পরম্পরায় আমাদের মনে হচ্ছে যে দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্যই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লক্ষী পূজা, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোজাগরী পূর্ণিমা নামের উৎসব পালনের দিনটিতে মহাসমাবেশ ডেকে এবং শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে উদ্বিগ্ন জনগণকে বারবার আশ^স্ত করার পর পরিকল্পিতভাবে তারা এই ধরনের পুরনো কায়দার নৈরাজ্য, হত্যা ও অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর নিচে নির্মিত টানেল অনেক আগে থেকে ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী গতকাল উদ্বোধন করার বিষয়টি জেনেই অনুষ্ঠানটি পন্ড করার জন্য তারা এই দিন হঠাৎ করে মহাসমাবেশ ডেকেছে।
এমনকি আজ যখন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানজনক ডক্টরেট প্রদান করার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে, গতকাল সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ-অগ্নিসংযোগ-হত্যা সম্পন্ন করে তারাই আবার সমাবর্তনের দিনই অর্থাৎ আজ হরতাল ডেকেছে। এসব পরিকল্পিত অপকর্ম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আমরা মনে করি নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার রাজনীতির এই ধারা চলতে থাকলে কালক্রমে তা রাজনীতিকেই হত্যা করবে। সেটি দেশের জন্য এবং কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই সুখকর হবে না।
এই প্রেক্ষিতে বিএনপিকে আমরা অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার তাদের চিরাচরিত অপ-রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা পরিহার করে আগামী দিনগুলোতে সুস্থ রাজনীতির চর্চা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে বিরাজমান গণতান্ত্রিক পরিবেশের সুযোগে যারা এই ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যা, নৈরাজ্য ও অপকর্ম সৃষ্টির রাজনীতিতে লিপ্ত হচ্ছে ও উস্কানি দিচ্ছে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য সরকার ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply