বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার এক বিবৃতিতে বলেছেন, জনজীবনে তথ্যপ্রযুক্তি ও জীবপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর অনেকেই আশা করেছিলেন এবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সব রাষ্ট্রেই প্রতিষ্ঠা পাবে এবং সব রাষ্ট্র প্রগতির লক্ষ নিয়ে এগিয়ে যাবে, কাজ করবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে। যদি আইনকানুনের সংস্কার সাধন করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে আইন কানুন সংস্কার করা হয় তাহলে সব মানুষই সম্মানজনক জীবনযাত্রার সুযোগ পাবে। কিন্তু দুনিয়াব্যাপী প্রায় সব দেশেই শাসকদের ও কায়েমী স্বার্থবাদীদের মধ্যে সেই মনোভাব দেখা যায়নি।
তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপরতার সঙ্গে কেবল নিজেদের বৈশ্বিক স্বার্থ আর রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করে চলছে। সেই সঙ্গে তারা গণবিরোধী যুদ্ধ চালিয়ে দুনিয়াব্যাপী তাদের কর্তৃত্ব বাড়ানোর জন্য তৎপর থাকছে। বসনিয়া, হার্জেগোভিনা, সার্বিয়াতে যুদ্ধ, আফগানিস্তান, ইরাক ও লিবিয়ায় যুদ্ধ। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফিকে হত্যা করে মধ্যপ্রাচ্যের জাতিগুলোকে দুর্বল থেকে দুর্বলতার করে ফেলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার বিরোধে পুতিনকে ইউক্রেন আক্রমনে উস্কানী দেয়, তাতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী নিয়ে পুতিন ইউক্রেন আক্রমন করে। তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ফিলিস্তিনিদের স্বদেশ থেকে বাস্তচ্যুত করে এবং ইউরোপ থেকে ইহুদীদের এক ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৮ সালে স্বদেশ থেকে ফিলিস্তিনিরা পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোতে আশ্রয় নিয়ে অতিকষ্টে জীবন-যাপন করছে। গাজা এলাকায় কিছু জায়গায় ফিলিস্তিনিরা জীবন-যাপন করার সুযোগ প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী শক্তিগুলো সেখানেও মাঝে মাঝে সামরিক আক্রমন চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাদের উপর সামরিক আক্রমন চালায়। মাঝে মাঝে কিছু সময় যুদ্ধহীন থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে এই অক্টোবর মাসের প্রথম দিক থেকে ইসরায়েলিদের সামরিক আক্রমনে প্রায় ৮৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাদের ঘরবাড়ীও সামরিক আক্রমনের দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছে। এইসব যুদ্ধ অমানবিক। এসবের মূলে কাজ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী শক্তিগুলো। সামরিক অস্ত্র এবং অর্থ দিয়ে যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী শক্তিগুলো তৎপর আছে। জাতিসংঘ এই অন্যায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে নিন্দা করছে এবং যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান করছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহেযাগী শক্তিগুলোর ভূমিকা যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করছে। জাতিসংঘ কিছু করতে পারছে না। এই বাস্তবতায় পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী ভূমিকা নিয়ে প্রচার আন্দোলনের দ্বারা ইসরায়েলের মনোবলকে ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালানো অপরিহার্য।
মানবপ্রজাতিকে পর্যায়ক্রমে যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার জন্যে কাজ করতে হবে। জনগণ নিষ্ক্রিয় থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট ও তার সহযোগী রাষ্ট্রগুলো পৃথিবীকে যুদ্ধমুক্ত অবস্থায় উন্নীত করার জন্যে প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। বিশ্ব ব্যাংকের বাইরে সর্বজনীন কল্যাণে নতুন ব্যাংক গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। জাতিসংঘকে কার্যকর সংঘরূপে গড়ে তোলার জন্যে পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোধির প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। উন্নত নতুন বিশ্বব্যবস্থায় পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করে কেবল জাতিসংঘের পরিচালনায় একটি সেনাবাহিনী রাখতে হবে। পৃথিবীর সর্বত্র সব রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শ নিয়ে পুনর্গঠিত করতে হবে। বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থার পুনর্গঠন ও বিকাশের জন্যে কাজ করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনে অনতিবিলম্বে গণহত্যা ও যুদ্ধ বন্ধের জন্যে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাই এবং ফিলিস্তিনিদের জন্যে আন্তর্জাতিক ত্রাণ তহবিল গঠনের জন্যে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বার্তা প্রেরক
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply