April 27, 2024, 2:06 pm

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণসভা ওঅসচ্ছল পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা বিতরণ। টংগিবাড়ী বাজারের পাশে ময়লার ভাগার ঝুঁকিতে পরিবেশ ও জনসাস্থ্য। টংগিবাড়ী উপজেলা প্রশাসন কতৃক তীব্র তাপদাহে সুপেয় পানির ব্যাবস্থা। বেনাপোল বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় ভারত থেকে আমদানিকৃত ৩৭০ টন আলু পচন ধরতে শুরু করেছে। ভালুকায় তীব্র তাপদাহে সর্বসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার সেলাইন বিতরণ। ভালুকায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে বাবার মৃত্যু। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাবার সেলাইন বিতরণ করলেন ওসি কামাল। ভালুকায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন স্মারক লিপি প্রদান। ঈদগািঁও উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ১৭ জন প্রার্থী। ময়মনসিংহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভালুকা মডেল থানা শ্রেষ্ঠত্ব। ভালুকায় ল্যান্ডমার্ক সিটি পার্টি সেন্টার উদ্বোধন। যশোরে ইরি (বোরো)ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কার্যক্রমে অপরাধজনক কোন ঘটনা ঘটেনি ময়মনসিংহ শিল্প এলাকায়। ছবি তোলার অপরাধে সাংবাদিক গ্রেফতার, অত:পর মুক্তি রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অবৈধ ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় প্রতিবেশীর উপর হামলা আহত ৩ রমেকে ভর্তি। দেশব্যাপী তিন দিনের সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ভাবির ছবি এডিট করে নগ্ন ভাবে প্রচার করায় আটক দেবর। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৪০ পিস স্বর্ণের বারসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ১০ম মহাসমাবেশ উদযাপন কমিটি গঠন। শরীয়তপুরে স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ; আটক ৪ ভালুকায় দিনব্যাপী প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন। ভালুকায় মুজিব নগর দিবস উদযাপন। স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে নিজ ঘরে আত্মহত্যা। ফরিদপুর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ ভালুকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নিহত। ১৭ এপ্রিল হোক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রজাতন্ত্র দিবস। অনিবন্ধিত ও অবৈধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে শরীয়তপুরে স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে গণধর্ষণ; আটক ৪

শিশু শিক্ষা ও সিনিয়র পেনশনভোগীদের সমস্যা নিরসণে নির্বাচনী ইশতেহারে কতিপয় সুপারিশ।

শিশু শিক্ষা ও সিনিয়র পেনশনভোগীদের সমস্যা নিরসণে নির্বাচনী ইশতেহারে কতিপয় সুপারিশ।

৩১ অক্টোবর দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমন্ডিতে এক প্রতিনিধি দল শিশু শিক্ষা ও তাঁর সাথে জড়িত জনবলসহ প্রবীণ পেনশনভোগীদের সমস্যা নিরসণকল্পে আসন্ন নির্বাচনী ইস্তেহারে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াসে কতিপয় পরামর্শ উপস্থাপন করেছেন, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। এক আবেদনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দূর করতে মেধাবী অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল গড়ে তোলার লক্ষে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস গঠন করা, শিশুবান্ধব শিক্ষা ও সময়সূচি, প্রাথমিকের দপ্তরাদরী চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করা, কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে বিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় ও বিশেষ দিবস স্বতঃস্ফুতভাবে পালনে বিদ্যালয় বাৎসরিক ছুটি থেকে বাদ দিয়ে, উক্ত ৬ দিনের ছুটি শ্রান্তি বিনোদনের ক্ষেত্রে যোগ করা, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখা, দ্বিতীয় ধাপের ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্ণবাস্তবায়ন করা, ৬০ বছরের উর্ধ্বে বয়স্কদের সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি, পেনশনের ক্ষেত্রে জুনিয়র সিনিয়রদের বৈষম্য দূরীকরণ, শতভাগ পেনশন সমর্পনকারীদের পেনশন ১০ বছর পুনঃস্থাপন। সুপারিশমালার যুক্তিকতা বিবেচনা করে শিশু শিক্ষা ও সিনিয়র অবসরপ্রাপ্তদের সুরক্ষা করে আস্থায় আনার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন ইস্তেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর দাখিল করা হলো।

প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন, ইন্দু ভুষন দেব সম্মানিত উপদেষ্টা ও সাবেক বিভাগীয় উপপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা, ঢাকা, খন্দকার মনিরুজ্জামান উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান কে, এ, এইচ আইডিয়াল স্কুল, মুগদা, ঢাকা, মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, এম.এ. ছিদ্দিক মিয়া সাধারণ সম্পাদক, সামছুদ্দিন বাবুল (লক্ষীপুর), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মফিজ উল্যাহ (কমলনগর, লক্ষীপুর), আসমা খানম গোপালগঞ্জ) আ. হালিম সরকার (তিতাস, কুমিল্লা), সৈয়দ সালেহ আহম্মেদ (লাকসাম, কুমিল্লা), মো. আব্দুর রাজ্জাক (শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ), বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, মিজানুর রহমান (কিন্ডারগার্টেন নেতা), মো. আব্দুর রহিম (বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতা) সহ সাধন চন্দ্র বাড়ৈ ও মো. নাছির উদ্দিন (দপ্তরীদের নেতৃবৃন্দ)।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয়ে শিশু শিক্ষাসহ প্রবীণ পেনশন ভোগীদের কতিপয় চ্যালেঞ্জ দূরীকরনার্থে নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে সকলকে আস্থায় আনার অভিপ্রায়ে কতিপয় সুপারিশ উপস্থাপন করা হলো :-

১। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দূর করা: স্মার্ট বাংলাদেশ এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে শিক্ষায় ঘাটতি কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। সে লক্ষে শিক্ষক সংকট শুন্য সহিষ্ণুতায় নামিয়ে আনতে হবে।

পরামর্শঃ শিক্ষক সংকট শুন্য সহিষ্ণুতায় নামিয়ে আনার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্যানেল ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। প্যানেলের নিয়োগ শেষ হবার পূর্বেই প্যানেল প্রস্তুত রাখা। নিয়োগ প্রাপ্তদের সি. ইন.এড বা ডিপ. ই. এড প্রশিক্ষণ শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করাতে হবে। যাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের কারণে ১ বছর বা ১১/২ বছর বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষা ব্যাহত না হয়।

নিয়োগ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। যাতে শিক্ষক সংকটে বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার বিঘ্ন না ঘটে।

২। মেধাবী, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল গড়ে তোলার লক্ষে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস গঠন করাঃ
স্মার্ট বাংলাদেশ এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন সমৃদ্ধ শিশু শিক্ষা। এ জন্য প্রয়োজন মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করা। এ লক্ষে সহকারী শিক্ষক থেকে শতভাগ পদোন্নতি মাধ্যমে নীতিনির্ধারণী পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। যাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
পেশায় দক্ষ জনবল সৃষ্টি করার জন্য পদোন্নতির মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস প্রয়োজন। মোট সরকারি কর্মচারীদের প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ জনবল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত। অথচ সকল মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্যাডার সার্ভিস থাকলেও বিশাল এ মন্ত্রণালয়ের স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস নেই।

পরামর্শঃ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের পদকে এন্টি ধরে শতভাগ পদোন্নতি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস গঠন করা প্রয়োজন।

৩। শিশুবান্ধব শিক্ষা ও সময়সূচিঃ শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশের জন্য মনোবিজ্ঞানসম্মত পাঠদান খেলা, বিনোদন, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীর বিকল্প নেই। বিদ্যালয়ের সময়সূচি বিকাল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিকেল বেলা খেলাধুলা ও বিনোদনের অধিকার হরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে ২৫/ ৩০/ ৪০/ ৫০ মিনিটে ছয় থেকে সাতটা ক্লাস শিশুকে সাধারণত বিদ্যালয়ের কিছু শেখানোর পরিবর্তে বাড়ির পড়া, কাজ দিয়ে পাঠদান সমাপ্ত করা হয়। এতে শিখন ঘাটতিসহ শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক পরিপূর্ণ বিকাশে সফলতা অর্জন হয় না।

পরামর্শঃ দেশের সকল শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুপুর দুইটার মধ্যে ছুটি দেওয়া প্রয়োজন। যাতে শিক্ষার্থী বাসায় এসে হাত, মুখ ধুয়ে বা গোসল শেষে খাওয়া-দাওয়া শেষে খানিকটা বিশ্রাম বা ঘুমিয়ে বিকাল বেলা ফুরফুরে মেজাজে সুস্থ দেহ – মন নিয়ে খেলাধুলা বা বিনোদন সুযোগ পায়। বিদ্যালয়কে জ্ঞান অর্জনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসে প্রতিটি শ্রেণির কার্যক্রম ১ ঘন্টা হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রতিটি ক্লাসের পর ৫ (পাঁচ) মিনিট বিরতি দেওয়া উত্তম। দৈনিক চারটি পিরিয়ডের বেশি হওয়া মোটেই কাম্য নহে। এতে একদিকে বিদ্যালয়ে হবে জ্ঞান অর্জনের কেন্দ্রবিন্দু। বাড়িতে পড়ার চাপ ও গৃহশিক্ষকের অভাব দূর হবে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থী পরিবারের অন্যদের সাথে দুপুরে গরম খাবার খেতে পারবে। এছাড়াও বিকেলবেলা খেলাধুলা বা বিনোদনের সুযোগ পাবে। এতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান অর্জনসহ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হবে সমৃদ্ধ।

৪। সরকারি- বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ কলেজের প্রাথমিক শাখা বিলুপ্ত করে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যলয়ের অস্তিত্ব সংকটের হাত হতে রক্ষা করাঃ ড. কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন ও তারই আলোকে প্রণয়ন করা ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিক স্তর হবে ১ম- ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত। যার ফলে প্রতিটি উপজেলায় ২/১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করাার পরে দীর্ঘ সময় থেকে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে। বরং প্রতিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্লে নার্সারি থেকে প্রাথমিক শাখা সরকারি তত্ত্বাবধানে চলছে। অথচ উচ্চ বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিশু শিক্ষায় ট্রেনিং এর মোটেই ছোঁয়া নেই। অপরদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে উচ্চ শিক্ষিত, মেধাবী; প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। যার ফলে বঙ্গবন্ধু ও তাঁরই সুযোগ্যকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জাতীয়করণকৃত প্রাধমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী সংকটে অস্তিত্ব বিলীন হচ্ছে। অপর দিকে শিক্ষার্থীরা শিশু শিক্ষায় প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের কাছ থেকে যথাযথ শিশু মনোবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা পাচ্ছেনা। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হলে, তৃনমুলের দরিদ্র, শ্রমিক, অসহায় মানুষসহ সর্বস্তরের জনগনের অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত হবে।

পরামর্শঃ পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শীঘ্রই ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা। একই সাথে উচ্চ ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখা বিলুপ্ত করা।

৫। প্রাথমিকের দপ্তরীদের চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তর:
প্রাথমিকের দপ্তরীরা বিদ্যালয়ে অতি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে থাকে। বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের পদমর্যাদা সরকারি। অথচ বিদ্যালয়ের সার্বিক দেখভাল এর দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী দপ্তরীরা আউট সোসিং এর আওতায়। তাদের অনেকটা সার্বক্ষনিক ডিউটি করতে হয়ে থাকে। এ প্রেক্ষাপটে কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে, সুস্থ ও সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার প্রয়াসে তাদের চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। তাছাড়া সরকারি বিধি মোতাবেক কর্মঘন্টা নির্ধারণ করা জরুরি।

পরামর্শঃ তাদের পদ রাজস্বখাতে স্থানান্তরসহ অমানবিক ডিউটি থেকে অব্যহতি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।

৬। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাজের কাঠিন্যের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে বেতন ভাতা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে পি,টি আইয়ের পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মতো প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা প্রয়োজন। পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকের যোগ্যতা সমমানের। কারিকুলাম এবং পাঠদানের ধরণও একই। উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করে থাকেন। তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পাঠদান বর্হিভুত কাজের ব্যাপকতা মাত্রাধিক। পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঠদান ছাড়া কাজ নেই বললেই চলে। এ ছাড়া অন্যান্য সমযোগ্যতাসম্পন্ন সরকারি কর্মচারীদের সাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য বিদ্যমান। এ ক্ষেত্রে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে বেতন স্কেলের বৈষম্যসহ শতভাগ পদোন্নতি সুযোগ প্রদান জরুরি।
পরামর্শ: সমযোগ্যতা, সমকাজ ও কাজের কাঠিন্য বিবেচনা করে বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ শতভাগ পদোন্নতি সুযোগ সৃষ্টি করা।

৭। কিন্ডারগার্টেন:- বর্তমানে দেশে পঞ্চাশ হাজারের অধিক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্টান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। শিশু শিক্ষায় বিশাল কর্মকান্ডের জন্য তাদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি প্রদান আবশ্যক। এ লক্ষে বিদ্যালয়গুলোকে সহজ শর্তে রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন।মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান ছাড়া শিশুর শারীরিক, মানসিক বিকাশসহ পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক তাঁরাও এ দেশের নাগরিক। এদের প্রশিক্ষণবিহীন অবহেলায় রেখে আগামী প্রজন্মের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন ব্যাহত হবে। এ বিশাল জনবলকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সহ ব্যাপক কাজে কাজ সহজ করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কিন্ডার গার্টেন অধিদপ্তর খোলা প্রয়োজন।

পরামর্শ: অবিলম্বে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ের সহজ শর্তে রেজিস্ট্রেশন ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে আওতায় আনা প্রয়োজন।

৮। জাতীয় ও বিশেষ দিবস সতঃস্ফুতভাবে পালনে বিদ্যালয় বাৎসরিক ছুটি থেকে বাদ দেওয়া;

বাঙালি সংগ্রামী জাতি। আমাদের মতো সংগ্রামী ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর কোন জাতির নেই। অথচ আজকের প্রজন্ম স্বাধীনতার ৫ দশকের পরে ও বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরেও আজও তারা দেশ ও জাতির সংগ্রামী ইতিহাস, ঐতিহ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে ভাল ধারণা লাভ করতে সক্ষম হয় নি। এর অন্যতম কারণ- বাৎসরিক ছুটির তালিকায় বিদ্যালয় ছুটি দেখিয়ে স্বল্প সংখ্যাক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ডেকে এনে যেনতেন দায়সারা ভাবে দিবসগুলো পালন করে থাকে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকেরা অফিস কক্ষে পরিদর্শনের অপেক্ষায় সময় কাটায়। অভিভাবক বিদ্যালয় বন্ধ জেনে শিক্ষার্থীদের দিবস পালনে বিদ্যালয়ে পাঠান না। এতে শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির সংগ্রামী ঐতিহ্য সংস্কৃতি জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

পরামর্শ ঃ বাৎসরিক ছুটির তালিকা থেকে জাতীয় ও বিশেষ দিবসে ছুটি বাদ দিয়ে শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা বিধিসম্মতভাবে ৩ বছর পর পর পাওয়ার লক্ষে গ্রীষ্মের ছুটি বা যেকোন ছুটি একনাগাড়ে ১৫ দিন করা হোক। জাতীয় ও বিশেষ দিবস সম্পর্কে সকল শিক্ষার্থীদের জানানো বিষয়ে শিক্ষকদের জবাদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।

৯। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ঃ বিদ্যালয় পরিচালনা হতে হবে বিদ্যালয়ের কল্যাণের জন্য। এ প্রেক্ষাপটে বিদ্যালয় পরিচালনার কমিটি নামকরণ হওয়া প্রয়োজন বিদ্যালয় কল্যাণ কমিটি। এ কমিটি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপমুক্ত পরিবেশ হওয়া প্রয়োজন কল্যাণ কমিটি। এ কমিটিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অভিভাবক, শিক্ষক ও জমিদাতা থাকবে। শ্রেণিওয়ারী ১ জন করে অভিভাবক, সকল শিক্ষক ও জমিদাতা। প্রধান শিক্ষক হবেন আহ্বায়ক। সকলের বা সংখ্যাগরিষ্টের মতামতের ভিত্তিতে হবে কল্যাণকর সিদ্ধান্ত।

পরামর্শ ঃ রাজনীতি বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্ত করার প্রয়াসে কল্যাণ কমিটি করা প্রয়োজন। যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খবরদারি বা ম্যানেজিং কমিটির নামে প্রভুত্বমূলক মনোভাব না থাকে।

১০। দ্বিতীয় ধাপের ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ প্রসঙ্গে ঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৬১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন। অথচ ২য় ধাপের ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যাচাই-বাছাই করে জাতীয়করণের যোগ্য বিবেচিত হওয়া সত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আজও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ হয়নি। এতে একদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। অপরদিকে বেতন ভাতার অভাবে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে উপবৃত্তি, খাবার সহ সরকারের নানাধরণের সুযোগ সুবিধা থেকে।

পরামর্শ ঃ অবিলম্বে দ্বিতীয় ধাপের জাতীয়করণযোগ্য ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

১১। ৬০ বছরের উর্ধ্বে বয়স্কদের সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া ঃ ৬০ বছরের উর্ধে সকল নাগরিকদের সিনিয়র দের সিটিজেনের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদানসহ সুযোগ সুবিধা প্রদান করা জরুরি।

পরামর্শঃ তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির পেনশনধারী কর্মচারীদের বয়স্কভাতার আওতায় আনা প্রয়োজন। কারণ তারা স্বল্প টাকা পেনশন পেয়ে থাকেন। হাসপাতালসহ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আলাদা লাইন ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করা। যানবাহনসহ সর্বক্ষেত্রে সিনিয়র সিটিজেন জন্য বিশেষ আলাদা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।

১২। সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ঃ-
নবীনদের চেয়ে প্রবীণরা রোগ ব্যাধিতে অনেক বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সে দৃষ্টিকোন থেকে নবীনদের তুলনায় প্রবীণদের বয়সভেদে চিকিৎসা ভাতা বেশি হওয়া যুক্তিযুক্ত। সরকারি কর্মচারীদের বর্তমান চিকিৎসা ভাতা ১৫০০/- (পনেরশত) টাকা। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের ৬৫ বছর পর্যন্ত ১৫০০/- থেকে ২৫০০/- টাকা, ৬৫-৭০ বছরের ৫০০০/- , ৭০-৭৫ বছরের ৭৫০০/-, ৭৫ বছরের উর্ধে ১০০০০/- টাকা চিকিৎসা ভাতা বিবেচনাযোগ্য।
পরামর্শ ঃ প্রবীণ সরকারি কর্মচারীদের শারীরিক সুস্থতার লক্ষ্যে বয়সভেদে চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

১৩। পেনশনের ক্ষেত্রে জুনিয়র সিনিয়রদের বৈষম্য দূরীকরণ ঃ ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ২ গুন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের পেনশনের পরিমানও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালের পূর্বের কর্মচারীদের পেনশন নিতান্তই অনেক কম। এ ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ করার লক্ষে একই পদে একই পেনশনের যৌক্তিকতা বিবেচনাযোগ্য।

পরামর্শ ঃ জুনিয়ররা সিনিয়রদের চেয়ে বেশি পেনশন পাবে। এ বৈষম্য দুরীকরণ প্রয়োজন।

১৪। শতভাগ পেনশনসমর্পনকারীদের পেনশন ১০ বছর পুনস্থাপনঃ বর্তমান সরকার শতভাগ পেনশনসমর্পণকারীদের দুঃখদুর্দশা মোচনে পুনরায় পেনশন ১৫ বছর পরে পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। এ উদ্যোগটি প্রশংসনীয় হলেও অবসরগ্রহণের ১৫ বছর পর্যন্ত খুব নগন্য সংখ্যক পেনশনভোগী বেঁচে থাকেন। অপরদিকে হিসাব করে দেখা যাচ্ছে এককালীন যে টাকা উত্তোলন করেছেন, তা ৮ বছর ৪ মাস মাসে গ্রহণ করা পেনশনের টাকার সমপরিমান। মানসিক স্বস্তি ও সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শতভাগ পেনশনসমর্পনকারীদের ১৫ (পনের) বছরের পরিবর্তে ১০ বছরে পেনশন পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন।

সুপারিশ: শতভাগ পেনশন পুন:স্থাপনকারীদের যেহেতু ৮ বছর ৪ মাসের মধ্যে তাদের টাকা পরিশোধ হয়েছে। সেহেতু তাদের ১০ বছরে পেনশন পুন:স্থাপন বিষয় বিবেচনার আশা রাখে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com