আনোয়ার হোসেন। নিজস্বপ্রতিনিধিঃ অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো । দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের আরেকটি স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। পদ্মা সেতু হয়ে যানবাহন চলাচলের পর এবার শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল। বুধবার (০১ নভেম্বর) খুলনা থেকে ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ও পরদিন ২ নভেম্বর বেনাপোল থেকে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাবে। এর মধ্য দিয়ে খুলছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ভাগ্যের চাকা। আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সবার মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। ট্রেনে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে উচ্ছ্বসিত তারা।
গত ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন করেন। এর আগে রাজশাহী থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস চলাচল করেছিল ভাঙ্গা পর্যন্ত। রুট বাড়ানোর পর এই ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করবে। ২০২৪ সালের জুনে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা রেল স্টেশন অতিক্রম করে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তখন নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস চলাচল করবে।
১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ২ নভেম্বর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন নতুন রুটে যাত্রা করবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আওয়াল। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।
খুলনা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘১ নভেম্বর থেকে নতুন রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এজন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। নতুন এই রুটে যাত্রীদের আগ্রহ বেশি। এরই মধ্যে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় ট্রেনে যাত্রা করার জন্য বহু যাত্রী টিকিট কেটেছেন।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ২ নভেম্বর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস নতুন রুট (খুলনা-পোড়াদহ-কুষ্টিয়া হয়ে কোর্ট-রাজবাড়ী-ফরিদপুর-পদ্মা সেতু-ঢাকা কমলাপুর) দিয়ে যাতায়াত করবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মেইল ট্রেনে ৮০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১০০ টাকা, শোভন চেয়ার ২৩০ টাকা, এসি চেয়ার ৪৪৩ টাকা, এসি সিট ৫২৯ টাকা এবং এসি বার্থ ৭৯৪ টাকা।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১ নভেম্বর ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি খুলনা ছাড়বে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে। পদ্মা সেতু অতিক্রম করবে ভোর ৪টা ৭ থেকে ১৮ মিনিটে। ঢাকায় পৌঁছাবে ভোর ৫টা ১০ মিঃ। তবে মাওয়া, শ্রীনগর ও নিমতলা স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রাবিরতি করবে না। খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে দৌলতপুর, নোয়াপাড়া, যশোর, মোবারকগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, পোড়াদহ জংশন, কুষ্টিয়া কোর্ট, রাজবাড়ী, ফরিদপুর এবং ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে থামবে। পরদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। সকাল ৯টা ৩০ মিঃ ভাঙ্গায় পৌঁছাবে। পরে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর হয়ে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, যশোর হয়ে খুলনায় যাবে।
১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ২ নভেম্বর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন নতুন রুটে যাত্রাশুরু করবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোঃআব্দুল আওয়াল। তিনি বলেন, এজন্য আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।
ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহজাহান নিউকে বলেন, ‘এই রেললাইনে ট্রেন চলাচলের সময় অন্যান্য রেললাইনের মতো ঝক ঝক শব্দ করবে না। আছে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। বেশিরভাগ স্টেশনে রাখা হয়েছে লো-হাই কাউন্টার, ফুট ওভারব্রিজের সঙ্গে লিফট ব্যবস্থাসহ নানা ধরণের সুবিধা আছে। চীন থেকে আনা অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বগি গুলোতে সিসি ক্যামেরা, মোবাইল চার্জার, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply