“◾আ’লীগ সমর্থকরা বলছে তারা সুনিশ্চিৎ বিজয়ের অপেক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন।◾বিদ্রোহী প্রার্থীর সামনে তার নির্দেশে তার গাড়ি থেকে নেমে তারই সমর্থকরা ছাত্রলীগ সভাপতির মাথা ফাটিয়েছে, আ’লীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটানো সহ নৌকা পোস্টার, ব্যানার ছেড়া ও নির্বানী বুথ ভাঙ্গচুরের অভিযোগ◾জনসাধারন চায় নিরাপদে ভোট দিতে, অতি সাধারন ভীত ও অবাক- কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জনপ্রতিনিধি হতে চায়, আর তার লোকজন তার সামনে  ছাত্রলীগ আ’লীগ নেতাদের মারে, উনি গাড়ি থেকে নামলেনই না, উনি কিসের প্রার্থী…!◾আ’লীগ প্রার্থীর আহবান যে কোন ভাবেই হোক নির্বাচনী এলাকার পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হবে, বিজয় সুনিশ্চিৎ, আইন লঙ্ঘনকারীদের বিচার করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনি◾আ’লীগ সমর্থকরা বলছে এর পর আর কোন নেতাকর্মীর উপর হামলা হলে আ’লীগের পক্ষ থেকে কোন ছাড় দেয়া হবে না”

নিজস্ব প্রতিনিধি, শরীয়তপুর থেকেঃ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর-২ আসনের নড়িয়া’য় নির্বাচনে সকল প্রার্থীর চলমান নির্বাচনী প্রচারনায় বারবার গভীর রাতে আ’লীগের পোস্টার ব্যানার ছেঁড়া, বুথে হামলা সহ নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছেন আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বাজপাখি প্রতিক নিয়ে প্রতিদন্ধী করা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাঃ খালেদ শওকত আলী’র সমর্থকরা। অপরদিকে নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে কোনরুপ পাল্টা-পাল্টি সহিংসতায় জড়াতে নিষেধ করেছেন আ’লীগ মনোনিতো প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামীলিগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শরীযতপুর-২ আসনের সর্বশেষ সাংসদ একেএম এনামুল হক শামীম।

গত ২৩তারিখ নড়িয়া উপজেলার ফতেজঙ্গপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে গভীররাতে নৌকা প্রতিকের পোস্টার ও ব্যানার নামিয়ে বিদ্রোহীপ্রার্থীর পক্ষে বাজপাখি প্রতিকের পোস্টার ব্যানার লাগিয়েছে বিদ্রোহীপ্রার্থীর সমর্থকরা। একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ২৪ তারিখ রাতে আ’লীগের নির্বাচনী বুথ ভাঙ্গচুর করে পোস্টার ও অফিসের টেবিল ছুড়ে ফেলে দেয় দুবৃত্তরা, এ দুটো ঘটনায় আ’লীগের সমর্থকরা ক্ষোভে ফেটে ওঠে তীব্র নিন্দা জানালে আ’লীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম এনামুল হক শামীম পাল্টাপাল্টি কোনরুপ সহিংসতা না করে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন এবং আ’লীগের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনশৃঙ্খলা বাহীনির কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।গত ২৫ ডিসেম্বর নড়িয়া পৌসভাস্থ পাইকপাড়া গ্রামে মাঝি বাড়ি সংলগ্ন সড়কের পাশে আ’লীগের নির্বাচনী বুথে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান বিপ্লব অবস্থান নিতে যায় একই সময় সময় বিদ্রোহীপ্রার্থী ডাঃ খালেদ শওকত আলী দুটো পাজেরো নিয়ে অবস্থানরত ছিলেন, উনি গাড়িতে বসা থাকা অবস্থায় ওনার পেছনের গাড়ি থেকে নেমে ওনার সমর্থক হারুন খলিফার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ সভাপতি সহ আ’লীগ সমর্থকদের উপর লোহার রড দিয়ে হামলা চালিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যান, এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী গাড়িতে বসে হামলা দেখছিলেন তিনি নেমে আসেন নি, স্থানীয়রা হতবাক একজন জনপ্রতিনিধি প্রার্থীর সামনে তার লোকজনের দ্বারা হামলা চলছে ছাত্রলীগ সভাপতির উপর কিন্তু উনি প্রতিহতো না করে, চেয়ে চেয়ে দেখলেন.! এই হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতির মাথা ফেটে যায় এবং উপস্তিত নড়িয়া পৌর আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সহ হৃদয় নামে অপর এক ছাত্রলীগ কর্মী গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যায়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আহত ৩ জনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টায় এম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় প্রেরন করা হয়।ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষোভে ফেটে ওঠে ছাত্রলীগ সহ আ’লীগের সকল নেতাকর্মী, বিদ্রোহীপ্রার্থী খালেদ শওকত কে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে কেদারপুর ও পৌরসভার সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন তারা। মিছিল চলাকালে বাঁশতলায় বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী বুথ ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটলেও এ ঘটনা আ’লীগের কেউ জড়িত না এবং ভাঙ্গচুরের সময় তারা ঐ স্থানে যায়নি তখন তারা হাসপাতাল চত্বরে মিছিলরত অবস্থায় ছিলেন বলে দাবী করেন।

ঘটনা শুনে ছুটে আসেন আ’লীগের প্রার্থী একেএম এনামুল শামীম, তিনি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন, সকলকে শান্ত হতে নির্দেশ দিয়ে বলেন, নৌকা প্রত প্রতিকের বিজয় সুনিশ্চিত, জনগন নৌকা মার্কায় ভোট দেবে, এই হামলার জবাব দেবো তবে নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করা যাবে না, নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান থাকবে, শুধু এই ঘটনাই নয় আর কোন আ’লীগ কর্মীদের উপর হামলা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আমরা চাইলেই বিদ্রোহী প্রার্থীকে এই মুহুর্তে এর জবাব দিতে পারবো তবে আমরা জনবান্ধব রাজনিতীতে বিস্বাসী, চাই সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে। নির্বাচন ও নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার কোন সুযোগ আর কাউকেই দেয়া হবে না। ইতিমধ্যেই হামলা সহ নির্বাচনী আচরণবিধ ও আইন লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন কমিশন কে অবহিতো করা হয়েছে, তারা অবশ্যই বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিবেন।

এই ঘটনায় জড়িত বিদ্রোহীপ্রার্থী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নড়িয়া থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।হামলা ও নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে জেলা পুলিশ সুপার। নড়িয়া সার্কেলের এএসপি মহোদয় এবং নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশের সকল প্রকার নজরদারি রয়েছে বলে জানান। ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর জন্য দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনী ব্যবস্থা ও আইন প্রয়োগ সহ তদন্ত চলমান রয়েছে। র্যাবের টহল টিমও যথাযথভাবে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

নড়িয়ার কেদারপুরে ২৬ডিসেম্বর আ’লীগ মনোনিতো প্রার্থীর কন্যাদ্বয় নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী প্রচারনা করতে গেলে সেখানে অন্যান্য নেতাকর্মীদের সাথে মহিলা নেত্রী পারভিন উপস্থিত ছিলেন। প্রোগ্রাম শেষে অটোযোগে ফেরার সময় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী এক যুবক তার অটোতে ওঠে,  চন্ডিপুর বাজারের কাছাকাছি এলে ঐ যুবক হুট করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে চিৎকার করে শ্লোগান দিয়ে অটো থেকে লাফ দিয়ে পাশের খালে পড়ে পালায়। শ্লোগান দিয়ে লাফ মারার সময় ওকে ধরতে গিয়ে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মোটরসাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে দূর্ঘটনা ঘটে, দুর্ঘটনায় মহিলা নেত্রী  পারভীন গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাটিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা এটাকে একটা কৌশলী ও নিরব হামলা বলে দাবী করেছেন।
চলমান নির্বাচনী প্রচারনাকে কেন্দ্র করে সকল এলাকায় প্রতিদিন এমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা দূর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন নড়িয়া উপজেলার সাধারন ভোটারগন। তারা সংকিতো ও আতংকিতো, যদি প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারে তাহলে ভোট কেন্দ্রে নিরাপদে ভোট দিতে পারবে কিনা? নির্বাচনের আগেই শতভাগ নিরাপদ নির্বাচনী এলাকা দেখতে চান জনসাধারন।

-এইচ এম আতিক ইকবাল রবিন, নড়িয়া, শরীয়তপুর।