ফাহাদ মোল্লা, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য সম্বলিত নগরী বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ। প্রাচীন এ জনপদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মোঘল আমলের ভারতবর্ষের ইতিহাস সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। তারই মধ্যে একটি অনন্য স্থাপত্য হচ্ছে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমের পোল ঘাটা সেতু, এটি ইট সুরকির তৈরি একটি অসাধারন মোঘল আমলের স্থাপত্য শিল্প। অবাক করা বিষয় হচ্ছে ওই সময়ের প্রযুক্তিতে তৈরি এই পোল ঘাটা সেতু গত ৪০০ বছর ধরে অক্ষত রয়েছ, যা কালের সাক্ষী হিসাবে আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার। কমলঘাট-দীঘিরপাড় খালের উপর তৈরি এই পোলটি এখনো তার জৌলুস ছরিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ষাটোর্ধ রহমান মিয়া জানান এক সময় খালটি পদ্মা নদী থেকে ধলেশ্বরী নদীর সাথে যুক্ত ছিল পারাপার হতো ছোট বড়ো অসংখ্য নৌকা এখন খালটি দেখলে বিশ্বাস করা যায় না যে এই মৃতপ্রায় খালটির মধ্যে দিয়ে এক সময় বড় বড় বজড়া, ছোট বড় নৌকা চলাচল করত। এই স্থাপত্যটির সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধেরো অনেক স্মৃতি জড়িত রয়েছে l পোলটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ব্রীজের এপাড় থেকে ওপাড়ে পাক বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য সম্মুখ যুদ্ধ এ্যামবুশ করতো আমাদের বীর ছেলেরা। ৭১ এর স্মৃতি এবং ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই পোলটি সংরক্ষনের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ একখানা সাইনবোর্ড টানানো ছাড়া তাদের তেমন কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। কালের বিবর্তনে স্থাপত্যটি এখন ধংসের পথে। ইতিহাস বিদদের মতেপানাম-পোলঘাটা সেতুটি প্রাচীন ও শত বছরের ঐতিহ্য বাহি একটি নিদর্শন যা শ্রীবিক্রমপুর মহানগরের সীমানা পরিখা মীরকাদিম খালের উপর পানাম পোলঘাটা গ্রামে অবস্থিত। সেতুটির সঠিক নির্মাণকাল ও নির্মাতা সম্পর্কে জানা যায় না তবে মনে করা হয় এটি নির্মিত হয়েছিল মুঘল আমলে। সেতুটি তিন খিলান বিশিষ্ট ও এটি নির্মাণে চুন-সুড়কি ব্যবহার করা হয়েছিল।মূল সেতু থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে টংগিবাড়ী ও ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মুন্সীগঞ্জ শহর অবস্থিত। ধুনকা কৃতির এই সেতুটি প্রায় ৫২.৪২ মিটার লম্বা। বিভিন্ন সময় সেতুটি সংস্কারের ফলে এর আদিরুপ অনেকটাই বিলীন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply