নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন এক সময় অবহেলিত ছিল। তার অন্যতম কারন নদী বেষ্টিত এই উপজেলা। সদরের সাথে চরকালেখান, ছফিপুর বাটামারা, নাজিরপুর, গাছুয়া ইউনিয়ন ৫টি ইউনিয়নের দিকে অবহেলিত ছিল। মুলাদী মামুন সিনেমা হলের সামনে নদীর কারণে ৫টি ইউনিয়ন ছিল বিচ্ছিন্ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ। ৫টি ইউনিয়নের সাথে কোন সড়ক যোগাযোগ ছিল না মুলাদী উপজেলা সদরের সাথে অফিসিয়াল কাজ কর্মের জন্য সাধারণ মানুষ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল ট্রলার বা নৌকা। ঐ সময় ৫ ইউনিয়নের উন্নয়ন কার্যক্রম জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করার জন্য ঢাকায় এই ৫ ইউনিয়নের এলাকাবাসীদের উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল মুলাদী উপজেলা পঞ্চ ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদ। এই সংগঠনের সর্বশেষ সাধারণ সভায় নাজিরপুর ইউনিয়নের মোঃ নাসির শিকদার ও বাটামারা ইউনিয়নের মোঃ জসিম শিকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির মেয়াদকাল দীর্ঘদিন আগে শেষ হলেও তারা একটিও কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করতে পারেনি। দীর্ঘদিন এই সংগঠনের কোন সাংগঠনিক কর্মকান্ড বা কোন কর্মসূচিও ছিল না। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে একটি মহল গত কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম শ্রেণী নেতাদের এবং প্রতিষ্ঠাতাদের বাদ দিয়ে ঢাকায় কেআইবিতে একটি অবৈধ সভা করে এবং মুলাদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১জন প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দেয়। বিষয়টি পুরো মুলাদীতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ যারা মুলাদী উপজেলা উত্তর পঞ্চ ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদের সভা করেছে তারা গঠনতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে সভাটি করেছে। দেশের বিশিষ্ট সংগঠক গবেষকদের বক্তব্য এ সভাটি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে। শুধু তাই নয়, পুর্বের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না দিয়েই পুনরায় একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যাহা সংগঠন বিরোধী। সুধীজনরা মনে করেন, সাধারণ সভার মাধ্যম পুর্বের সাংগঠনিক কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা যায়। কিন্তু তারা কোন সাংগঠনিক নিয়মই মানে না। পঞ্চ ইউনিয়নের ঐ সভা বা নির্বাচনী সিদ্ধান্তের বিষয়টি সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম শিকদারসহ কার্যকরী কমিটির বেশীরভাগ সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতারা জানেই না। শুধুমাত্র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য তারা এই সংগঠনটিকে ব্যবহার করতে চায়। এ বিষয়ে মুলাদী উপজেলা উত্তর পঞ্চ ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হাজী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, শুনেছি পঞ্চ ইউনিয়নের একটা সভা হয়েছে। কিন্তু আমরা কোন দাওয়াত পাই নাই। এই সভাটি সম্পূর্ণ অসাংগঠনিক ও অবৈধ। এখন উল্লেখিত ঐ ৫ ইউনিয়নে আগের মতো সমস্যাগুলো নাই। যোগাযোগের ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। সবকটি ইউনিয়ন থেকে খুব অল্প সময়ে এবং সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করা যায়। তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে মুলাদী উপজেলা উত্তর পঞ্চ ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদের এই অবৈধ কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পঞ্চ ইউনিয়ন এখন মুলাদীর টপ অবদা টক। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জনগণকে অবহিত করা হবে এবং যারা গঠনতন্ত্র অমান্য করে মুলাদী উপজেলা পঞ্চ উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। প্রকাশ থাকে যে, মুলাদী উপজেলা পঞ্চ ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদের প্রথম কমিটির সভাপতি ছিলেন নাসির উদ্দিন বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন মোল্লা। ঐ কমিটি কিছু ইতিবাচক কর্মসূচি পালন করলেও পরবর্তী কমিটি সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সুতরাং এই সংগঠনটি এলাকাবাসীর চোখে বিলুপ্ত প্রায়।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply