শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় লোনসিংহ গ্রামে সাথী আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত ২৬ জুন বুধবার সন্ধায় উপজেলার লোনসিংহ গ্রামের নিজের বসতঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সাথি আক্তার লোনসিংহ গ্রামের শামীম দালালের স্ত্রী, তাহার ৮ মাস বয়সী একজন সন্তান রয়েছে।
এলাকাবাসীরা মাদ্দমে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে লোনসিং এলাকার শামীম দালালের সঙ্গে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় একই উপজেলার দক্ষিন চাকধ গ্রামের শাহালম মকদম এর কন্যা সাথী আক্তারের সঙ্গে। বিয়ের পর পরই সাথীর স্বামী শামীম দালাল দুবাই চলে যান। সাংসারিক জীবনে সাথীর সঙ্গে শাশুড়ি পিয়ারা বেগম ও ননদ বিউটি আক্তারের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। বেশ কিছুদিন আগে শামীম দালাল দেশে আসলেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গে পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন ওই গৃহবধূ। সম্প্রতি তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের মধ্যেই গত সোমবার হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরেন তিনি। শারিরিক অবস্থার অবনতি হলেও শশুর বাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতাল নেয়নি। পরদিন সকালে তার মা মধুমালা বেগম এসে তাকে হাসপাতাল নিয়ে যান। চিকিৎসা শেষে স্বামীর বাড়িতে ফেরেন সাথী। কিন্তু পুনরায় শশুর বাড়ির লোকজনের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পরেন। এরই মধ্যে বিকেলে বসত ঘরে গৃহবধুর গলায় ফাঁস দেয়ার খবর ছড়িয়ে পরে এলাকায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। কিন্তু পুলিশ পৌছার আগেই শশুর বাড়ির লোকজন লাশ নামিয়ে ফেলে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের মা মধুমালা বেগম জানান, ‘আমার মেয়েকে শশুর বাড়ির লোকজন শারিরিক ও মানষিক নির্যাতন করতো। কয়েকদিন ধরেই ও পেটে ব্যাথায় ভুগছিল। কিন্তু তাকে কেউ হাসপাতাল নেয়নি। আমি গতকাল এসে ওরে হাসপাতাল নিয়ে যাই। আজ ডাক্তার দেখিয়ে দুপুরে শশুর বাড়িতে দিয়ে চলে আসি। কিন্তু বিকেলে হঠাৎ ওর মৃত্যুর খবর পাই। আমার মেয়েকে ওর স্বামী, শাশুড়ি আর ননদ মিলে হত্যা করেছে। আমরা হত্যা মামলা করবো। আমি আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের শাশুড়ি পিয়ারা বেগম জানান, ‘আমার পুত্রবধুর সাথে আমাদের তেমন কোন সমস্যা ছিল না। ও মাঝে মাঝেই মন খারাপ করে দরজা আটকে রাখতো। আজও ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিয়েছে। অনেক ডাকাডাকির পরেও দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ফেলি। দরজা ভেঙে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই পরিবারের লোকজন মরদেহ নামিয়ে ফেলেছিলো। আমরা মরদেহটি মেঝেতে পরা অবস্থায় পেয়েছি। সুরতহাল প্রতিবেদনসহ মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর মূল কারণ জানা যাবে।’
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply