নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বেনাপোল কাস্টমস হাউজের এক আতঙ্কের নাম এনজিও হারুন। শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন না থাকলেও বেনাপোল কাস্টম হাউসে চাকরির সুবাদে আমদানীকারকদের ফাইল জিম্মি করে ১ যুগে অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে আমদানীকারকের পক্ষে আগত একাধিক প্রতিনিধিদের ঘুষ বানিজ্যে হয়রানি করার অভিযোগ থাকা সত্তেও বহাল তবিয়তে চলছে হাুরুনের ঘুস বানিজ্যের কর্মযজ্ঞ।কেননা ফাইল টেবিলে ফেলে রেখে,বিন লক করা সহ অভিযোগকারীর সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্সও বাতিল করার ক্ষমতা রাখে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। অনেকটাই ধরাশায়ী হয়েই ভূক্তভোগীরা হয়রানী সহ্য করেই মুখে কুলুপ এটে বসে থাকেন।
সাতক্ষীরা জেলার মৌতলা গ্রামের মোঃ মুনছুর মোল্ল্যার ছেলে হারুন বর্তমানে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ( শুলকায়ন গ্রুপ-২ ) এ রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের সহযোগী হিসাবে কর্মরত রয়েছে। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত সরকারী প্রতিষ্ঠানে হারুনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধসহ অবৈধ্য হলেও খোদ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মদদপুষ্ঠ হওয়ায় হারুনকে বেগ পেতে হয়না।
সরকারী রাজস্ব ফাঁকিতে সিদ্ধহস্ত হারুন বেনাপোল পৌরসভাধীন ছোট আঁচড়া ( ৫শতক জমি, যাহার আনুমানিক বাজার মূল্য ২কোটি টাকা ) নামাজ গ্রামসহ একাধিক এলাকায় জমি ক্রয় করে বিলাস বহুল পাকা বাড়ি নির্মান করেছেন। ঘুসের অবৈধ্য টাকায় নিজ এলাকায় সাতক্ষীরা জেলায় নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ( ডাঙ্গা,ধানী জমি,মাছের ঘের )ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন যা সুষ্ঠ তদন্তে বেরিয়ে আসবে। কাস্টমসে চাকরির পাশা পাশি প্রথমে সুদ ব্যবসা করলেও এখন বৈধ্যতা পেতে নবজাগরন সঞ্চয় ঋৃণ ও সমবায় সমিতি লিঃ ( রেজিঃ ৫৬/জে )এর শেয়ার হোল্ডার কিনে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ব্যবসায়িক পার্টনার কামাল তার শেয়ার হোলডার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গুঞ্জন রয়েছে একাধিক অবৈধ্য ব্যবসার সাথে জড়িত হারুন।
কে এই হারুন? তার খুঁটির জোরই বা কোথায় জানতে অনুসন্ধান চালালে দেখা যায় ২০১১ইং সালের পরবর্তী সময়ে বেনাপোল কাস্টম হাউসে কর্মরত বর্তমান অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সুপার শহিদুলের হাত ধরে বেনপোল কাস্টম হাউসে প্রবেশ করে। প্রথমে টিবয় এর কাজ করলেও মিষ্টভাষী হারুন স্বল্পসময়ে বেনাপোলের দূর্নীতিবাজ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। সে থেকে আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সংসারের অভাব ঘুচাতে বেনাপোল কাস্টমসে টি বয়ের চাকরি নিলেও বর্তমানে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে রাজস্বফাঁকি কাজের বস বনে গেছে হারুন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মরত ব্যক্তি জানাই,বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত টেবিল খরচ ফাইল প্রতি ঘুসের টাকা ৩ হাজার হলেও এনজিও হারুন কৌশলে আমদানিকারকের শুল্ক নির্ধারনের ফাইল আটকিয়ে প্রতিদিন আনুমানিক ৭/৮ লাখ টাকা ঘুস আদায় করে। যার সিংহ ভাগ টাকা দেই সুপার,যুগ্নকমিশনার ও কমিশনারকে। তাই স্টেশনটিতে আমদানিকারকদের পণ্য চালানে অনিয়মের ভয়-ভিতী দেখিয়ে প্রকাশ্য ঘুস বানিজ্য করতে অসুবিধা হয়না। সূত্রটির দাবি বেনাপোল কাস্টমজ হাউসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাসহ হারুনকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় জিজ্ঞাসাবাদে মিলবে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অনিয়ম-দূর্নীতিগ্রস্থ ও সরকারী রাজস্ব ফাঁকিতে সহয়তাকারী কর্মকর্তাদের নাম ও সম্পদের বিবরনী।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে হারুনের মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি জানান,বেনাপোল কাস্টমস হাউসে স্যারেদের টেবিলে চা দেন। চাকরির বৈধ্যতা ও বেতনের কথা জানতে চাইলে তিনি সংযোগ কেটে দেন। বার বার কল দিলেও কল রিসিভি করেননি।
চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ের সত্যতা জানতে রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের মুঠো ফোনে কল দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যাইনি।
উল্লেখ্য,বেনাপোল কাস্টমস হাউসে কর্মরত কতিপয় অসাধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ইন্ধনে গড়ে ওঠা একটি শক্তিশালী চক্র সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এনবিআর ও মন্ত্রাণালয় ম্যানেজ করেই দীর্ঘদীন ধরে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অনিয়ম- দূর্নীতির কবলে পড়ে নিরুৎসাহিত হয়ে আমদানিকারকরা এ স্টেশন হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে একাধিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে।বেনাপোল কাস্টমস হাউসের বর্তমান কমিশনার আব্দুল হাকিমের তৎপরতায় সাম্প্রতি বেনাপোল থেকে রেকর্ড পরিমান রাজস্ব আদায় হয়েছে যা ভূয়সী প্রশংসনীয়। দ্রুত এনজিও হারুনের মত বহিরাগতদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে এই স্টেশনের সুনাম অর্জনের ধারাবাহিকতা হারাবে বলে অভিমত এলাকার বিশিষ্টজনদের।
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply