নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একশ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি সরকারি হাঁস-মুরগির খামার। ঠাকুগাঁও সদর হাসপাতালের সামনে প্রায় ৩.১৭ একর জমির ওপর গড়েতোলা হয়েছে খামারটি। যেখানে খামারের পুকুরে হাঁস ভেসে বেড়ানোর কথা, সেখানে ভাসছে পাশের ক্লিনিকের বর্জ্য, নেই কোনও হ্যাচারি, ডিম ফোটানের যন্ত্র বা ব্রুডার হাউজ। স্থানীয় মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ৩৬ বছর আগে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। রুগ্ন এই খামারের কোনও প্রভাব স্থানীয় হাঁস-মুরগির বাজারগুলোতে দেখা যায় না। গত ১০ বছর ধরে খামারের অব্যস্থাপনা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। একশত কোটি টাকার এই প্রকল্পের বলতেগেলে শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। খামারটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাঁস পালনের জন্য সেখানে একটি পুকুর খনন করা হয়। যে পুকুরটি আবর্জনায় ভরে আছে। এতটাই অবর্জনা যে, পুকুরের পানি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। পাশের ক্লিনিকসহ আশপাশের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পুকুরটিতে। সেখানে একটিও হাঁস দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে উন্নত জাতের হাঁস-মুরগির বাচ্চা সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৯৮২-৮৩ অর্থ বছরে সরকারি এই খামারটি স্থাপিত হয়। বিপুল সম্ভাবনা থাকার পরও শুধুমাত্র অব্যবস্থাপনা এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এই খামার পোলট্রি শিল্পের উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ বিষয়ে খামারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। খামারের অবস্থা ভালো নায়। নতুন সেড নির্মাণ, কোয়ার্টার সংস্কার, আধুনিক ইনকিউবেটর মেশিন স্থাপন, ব্রুডার হাউজ ও হ্যাচারি স্থাপন করা অতি জরুরি। কিন্তু এগুলো স্থাপন করা হচ্ছে না। আর ফলাফল ও কিছুই হচ্ছে না। অথচ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ৩.১৭ একর জায়গার মূল্য, অচল গাড়ির ড্রাইভারকে বসে বসে বেতন দেওয়া সহ নানা কাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তারা বলেন, এই প্রকল্পে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর প্রয়োজন। তারা সামান্য সুনজর দিলে ঠাকুরগাঁওয়ের ক্ষুদ্র খামারি ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পটি হতে বিপুল অর্থ আয় হবে। স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাঁস মুরগির বাজারে প্রকল্পটি কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। এখান থেকে বাচ্চা সরবরাহ হয় না। একশ কোটি টাকার প্রকল্প আছে ঠিকই, কিন্তু এর কারণে সেখানকার বাজারের মুরগির দামে কোনও পরিবর্তন নেই। অন্যান্য জেলার মতো সেখানেও একই দরে মুরগি ও হাঁস বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, সামান্য কয়েকটি মুরগির বাচ্চা এখানে ফোটানো হয়, তা কখন হয় আর কখন বিক্রি হয়, আমরা জানতে পারি না। জনৈক দোকানি বলেন, ওই খামারের ভেতর যে মুরগি কেনা-বেচা হয়, এটাই তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে খামারটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, অব্যবস্থাপনা আছে এটা স্বীকার করতে হবে। এটা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুসস-নি-প্র-১৯-০৪-১৯
All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)
Leave a Reply